প্রধানমন্ত্রীর বিমান ৪৫ মিনিট আকাশে, তদন্ত কমিটি গঠন

thumb2-biman-bangladesh-airlines-1457964753 ‍সিটিএন ডেস্ক : ধাতব টুকরা পড়ে থাকতে দেখে আকস্মিকভাবে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের রানওয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়। আর এ কারণে গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটিকে ঢাকার আকাশে উড়তে হয়েছে বাড়তি প্রায় ৪৫ মিনিট। স্পেশাল সিকিউরিটি ফোর্স (এসএসএফ) সদস্যরা রানওয়ে পরিষ্কার করার পর প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে বিমানটি অবতরণ করে।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ বিমান, বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষ (বেবিচক) ও শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ আজ বুধবার পৃথক তিনটি তদন্ত কমিটি করেছে।

বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা মাহবুবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে দেখা হচ্ছে। একাধিক তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ ছাড়া এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের অপারেটর কামরুলকে তাৎক্ষণিকভাবে ক্লোজ করা হয়েছে।

এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, সৌদি আরব সফর শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমানটি অবতরণের আধ ঘণ্টা আগে এসএসএফের সদস্যরা রানওয়ে পরিদর্শন করেন। এ সময় তাঁরা রানওয়েতে কিছু ধাতব টুকরা পড়ে থাকতে দেখেন। বিষয়টি সঙ্গে সঙ্গে এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমে জানানো হয় এবং একই সঙ্গে রানওয়ে পরিষ্কার করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। এরই মধ্যে প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটি যথাসময়ে ঢাকার আকাশে প্রবেশ করে অবতরণের জন্য কন্ট্রোল রুমের অনুমতি চায়। কিন্তু কন্ট্রোল রুম থেকে একেকবার একেক দিকে যেতে বলা হয়। এভাবে কিছুক্ষণ যাওয়ার পর বারবার বৈমানিকেরা প্রকৃত কারণ জানতে চান। অনেক পীড়াপীড়ির পর কন্ট্রোল রুম থেকে জানানো হয় যে রানওয়ে সাময়িক বন্ধ আছে। রানওয়ে পরিষ্কার করা হচ্ছে। প্রায় ৪৫ মিনিট আকাশে ওঠার পর প্রধানমন্ত্রীকে বহনকারী বিমানটি অবতরণ করে।

বিমানবন্দর-সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানায়, গতকাল প্রধানমন্ত্রীর ফ্লাইট আসার অনেক আগেই বাংলাদেশ বিমানের একটি বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজের ইঞ্জিনে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় সেটির উড্ডয়ন বাতিল করা হয়। প্রায় ২৮০ কিলোমিটার বেগে থাকা ওই উড়োজাহাজের উড্ডয়ন বাতিল করায় সেটির ইঞ্জিন থেকে বিভিন্ন ধাতব টুকরা ছিটকে রানওয়েতে পড়ে। বেবিচকের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, নিয়ম হচ্ছে এ ধরনের কোনো উড্ডয়ন বাতিল হলে রানওয়ে পরিদর্শন করা। কারণ, উচ্চগতিতে থাকা বিমান থামাতে গেলে অনেক সময় চাকা বা অন্য কোনো উপাদান ছিটকে পড়ার সম্ভাবনা থাকে। কিন্তু মঙ্গলবার রানওয়ে পরিদর্শনের এই নিয়ম মানা হয়নি। এ ছাড়া বাংলাদেশ বিমানের নতুন কেনা বোয়িং ৭৭৭ উড়োজাহাজের ইঞ্জিন এভাবে বিকল হওয়া বা ইঞ্জিনের ভেতর থেকে ধাতব টুকরা ভেঙে ছিটকে পড়াটাও অস্বাভাবিক বলে বিমানের কর্মকর্তারা। বিষয়টি ‘স্পর্শকাতর’-এ অজুহাত দেখিয়ে এ নিয়ে বেবিচক বা বিমানের দায়িত্বশীল কেউ কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।

হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন জাকির হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তিনটি তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তাই এ নিয়ে কথা বলা ঠিক হবে না।’ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, তিনটি তদন্ত কমিটির একটির প্রধান হলেন গ্রুপ ক্যাপ্টেন জাকির হাসান। আরেকটির প্রধান বেবিচকের ফ্লাইট সেইফটি বিভাগের পরিচালক জিয়াউল কবির। আর তৃতীয় তদন্ত কমিটির প্রধান হলেন বাংলাদেশ বিমানের চিফ অব টেকনিক্যাল ফজল মাহমুদ চৌধুরী।


শেয়ার করুন