প্রত্যেকটি মানুষ নিরাপত্তা নিয়ে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত

azizulহাসান আজিজুল হক

হাসান আজিজুল হকআজ (গতকাল শনিবার) সকালবেলায় ঘুম থেকে চোখ মেলেই প্রথম যে সংবাদটি পেলাম তা হলো রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষক রেজাউল করিম সিদ্দিকী খুন হয়েছেন। মাত্র কয়েক দিন আগে রেজাউল আমার বাসায় এসেছিলেন, তাঁর একটি বই আমাকে উপহার দিতে।
আগে থেকেই জানি যে তাঁর একটি ছোট সাংস্কৃতিক সংগঠন আছে। সেখানে সংগীতচর্চা হয়। তিনি নিজেও গানবাজনা করতেন, বেহালা বাজাতেন। এটা খুব বড় আকারে নয়। এটা অনেকটা তাঁর শখের মতো ছিল। ১৯৭৩ সালের পরে আমি নিজে বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিতে যোগদান করি। তারও অনেক পরে রেজাউল ইংরেজি বিভাগে যোগ দেন। আমার সঙ্গে তাঁর সখ্য ছিল। আমি যখন যা লিখতাম তাঁর কাছ থেকে প্রতিক্রিয়া পেতাম। তাঁর মন্তব্য পেতাম। আমার বাসায় আসার পর তিনি দেশের বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন এবং এ নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। বলেন, অপরাধ খুব বেশি বেড়েছে। যখন-তখন যাকে-তাকে হত্যা করা হচ্ছে। নিশ্চিন্তে জীবনযাপন করা কঠিন ব্যাপার। তারপর অনেক ব্যক্তিগত বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। ধর্ম নিয়েও কিছু কথা বলেন।
শহর থেকে একটু দূরেই থাকতেন রেজাউল, ভাড়াবাড়িতে। অত্যন্ত নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়েছে তাঁকে। আমার কথা হচ্ছে, এটা দুঃখের বিষয় এতে কোনো সন্দেহ নেই। কিন্তু এতে কী পরিমাণ আতঙ্কে ছড়িয়ে পড়ছে, তার কোনো পরিমাপক নেই। প্রত্যেকটি মানুষ তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে অত্যন্ত দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। কীভাবে চললে এই ধরনের হামলা থেকে মুক্তি পাবে তা তারা বলতে পারছে না। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে। দেশের মানুষ চাইছে তাদের নিরাপত্তার ব্যবস্থা করা হোক। ব্যক্তিগত নিরাপত্তা এখন সবাই চাইছে। রেজাউলের মৃত্যুসংবাদ দিনটাকেই নষ্ট করে দিয়েছে। এখনো স্বাভাবিক হতে পারিনি।-প্রথম আলো থেকে নেয়া।


শেয়ার করুন