ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি

প্রকৃতি অন্তঃপ্রাণ একদল তরুণ

সিটিএন ডেস্কঃ

বাসযোগ্য পৃথিবীর জন্য পরিবেশ রক্ষায় মানুষকে সচেতন করতে কক্সবাজারে ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির (ইয়েস) একদল প্রকৃতিপ্রেমী কাজ করে যাচ্ছেন নিরন্তর। পৃথিবীর দীর্ঘতম সমুদ্রসৈকত, দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনসহ কক্সবাজারের পাহাড়, বন, নদী রক্ষায় লড়াই করছেন তারা। প্রকৃতিকে আপন করে নিয়ে সাগরের পাড় থেকে বর্জ্য অপসারণ, সচেতনতা তৈরি, সভা-সেমিনারসহ ইয়েসের নানা কর্মকাণ্ডে বেশকিছু পরিবেশ বিধ্বংসী কাজ বন্ধ হয়েছে।

ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটির (ইয়েস) নির্বাহী প্রধান ইব্রাহিম খলিল মামুন। পেশায় সংবাদকর্মী। তার চাওয়া প্রাণপ্রকৃতি সুরক্ষিত থাকুক। এই লড়াইয়ে তার সঙ্গে যুক্ত হন আরও ৩০-৩৫ জন উদ্যমী মানুষ। তাদের নিয়ে ২০০৯ সালে গঠন করেন ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি। পরিবেশবিরোধী কিছুই এড়িয়ে যায় না তাদের চোখ। মানুষকে সচেতনতা ও সভা-সেমিনারের পাশাপাশি বনখেকোদের বন উজাড়, নদী দখল, পাহাড় দখলের খবর পৌঁছে দেন সংশ্নিষ্টদের কানে।

শুধু সচেতনতামূলক কাজ করেই ক্ষান্ত হয়নি তারা, পরিবেশ রক্ষায় বিভিন্ন সময় নিয়েছে আইনের আশ্রয়ও। সাগর থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন এবং সৈকত দখল করে বহুতল ভবনসহ বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগে ৪ ডেভেলপার কোম্পানিসহ সাত প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ২০১১ সালে মামলা করে ইয়েস। কক্সবাজার সমুদ্রসৈকত-সংলগ্ন এলাকায় পাহাড় কেটে স্থাপনা নির্মাণের অভিযোগে ৩ ডেভেলপার কোম্পানিসহ ১২ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ২০১২ সালের ৩০ জানুয়ারি আরেকটি মামলা করে তারা। একইভাবে কক্সবাজার শহরে পাহাড় কেটে বাণিজ্যিক বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ ও প্লট বিক্রির অভিযোগে ১২ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ২০১৩ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রাম পরিবেশ আদালতে মামলা করে ইয়েস। এ ছাড়া ৫১ একর ও সংজ্ঞবদ্ধ প্রভাবশালীদের উত্তরণ আবাসন প্রকল্পের নামে পাহাড় কেটে গড়ে তোলা দুই প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে ইয়েস। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরণ আবাসন প্রকল্পের বিরুদ্ধে তদন্ত শুরু করে দুদক। সর্বশেষ কক্সবাজার শহরের সৈকতপাড়ায় সরকারি পাহাড় কেটে প্লট তৈরি ও বিক্রির বিরুদ্ধে বিভিন্ন আন্দোলনের পাশাপাশি ২০১৮ সালের ৩ জুন হাইকোর্টে রিট করে ইয়েস। কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার ২০১৮ সালের ১৪ নভেম্বর সশরীরে আদালতে উপস্থিত হয়ে হাইকোর্টে ব্যাখ্যাও দিয়েছেন। দেশে প্লাস্টিক সামগ্রীর উৎপাদন, বিক্রি, বিপণন, বিতরণ বন্ধের নির্দেশনা চেয়ে ২০১৮ সালের ১৭ ডিসেম্বর ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটিসহ ১১টি পরিবেশবাদী সংগঠন হাইকোর্টে রিট আবেদন করে। ওই রিটের পরিপ্রেক্ষিতে প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার এক বছরের মধ্যে নিষিদ্ধের নির্দেশনা আসে। চলতি বছরে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে বর্জ্য অপসারণ করেন ইয়েসের সদস্যরা। ইয়েসের উদ্যোগে ‘প্রকৃতি’ নামে পরিবেশবিষয়ক একটি প্রকাশনাও বের হচ্ছে।

সংগঠনের প্রতিটি সদস্য নিজেরাই মাসিক চাঁদা দিয়ে সংগঠন পরিচালনা করে আসছেন। এ ছাড়া সংগঠনের পক্ষ থেকে করা মামলাগুলো পরিচালনায় আইনি সহায়তা দিচ্ছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা)।

সূত্রঃ সমকাল


শেয়ার করুন