পেকুয়ায় বৈদ্যুতিক খুঁটির কারণে ঝুঁকিতে একাধিক পরিবার

d213aecf00847998f12c9f410de96952-GAZIPUR-PB-PIC--2-000পেকুয়া প্রতিনিধি:

পেকুয়ায় শিলখালী ইউনিয়নের পেঠান মাতবর পাড়া এলাকায় পল্লি বিদ্যুতের সদ্য স্থাপিত একটি খুঁটির কারনে বেশ কিছু পরিবার চরম ঝুকির মধ্যে পড়েছে। ঘনবসতি ও গাছগাছালির মাঝ দিয়ে ওই খুঁটির তার টাঙ্গানোর ফলে এসব পরিবার ছাড়াও আশপাশের লোকালয়ের শতশত পরিবার চরম বিপাকে পড়েছে। এদিকে পল্লি বিদ্যুত কর্তৃপক্ষ এক ঘেয়েমি করে ব্যক্তি মালিকানাধিন জায়গার উপর জবরদস্থি করে খুঁটি স্থাপন করেছেন। এনিয়ে বসতবাড়ির মালিক পক্ষ সার্বজনীন জায়গা দিয়েখুঁটি বসানোর দাবি দিয়েছেন। কিন্তু মোটাংকের ম্যানেজ হয়ে জায়গার মালিকদের কথা কর্নপাত না করে ঠিকই তাদের বসতির মাঝখান দিয়ে তার টাঙ্গিয়েছে।

এদিকে ঝুকিপুর্ন ভাবে খুঁটি ও তার স্থাপন করায় পরিবারের সদস্যরা এনিয়ে বাধা দেয়ার চেষ্টা করে। এ সময় দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। এতে স্কুল শিক্ষিকাসহ অন্তত ৭জন গুরুতর আহত হয়েছে। ওই ঘটনার জের ধরে পেকুয়া থানায় পৃথক দু’টি পাল্টাপাল্টি মামলা হয়েছে। ওই মামলায় একপক্ষের কলেজ ছাত্র দু’স্কুল শিক্ষিকাসহ একই পরিবারের ৬জনকে আসামি করা হয়েছে।
অভিযোগ উঠেছে পল্লি বিদ্যুতের খুঁটি স্থাপন নিয়ে বাড়ির মালিকরা বাধা দেয়। ওই ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে একই এলাকার প্রভাবশালী আবু বক্কর, শওকত ওসমান, ছরওয়ার আলম গং হামলা চালিয়ে কলেজ ছাত্র ও স্কুল শিক্ষিকাসহ ৪জনকে কুপিয়ে আহত করে। তবে হামলাকারীরা বিশেষ কায়দায় ওই ঘটনাকে ধামা চাপা দিয়ে উল্টো তাদের প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করতে পেকুয়া থানায় একটি মামলা রুজু করে। কক্সবাজার সদর হাসপাতাল থেকে ভুঁয়া জখমী সনদ নিয়ে ওই মামলাটি দায়ের করে। কক্সবাজার সদর হাসপাতালের স্টোর কিপারের কর্মরত শীলখালী এলাকার জনৈক এস্তাফিজুর রহমানকে দিয়ে তারা মোটাংকের টাকা নিয়ে ওই জখমী সনদ সংগ্রহ করেছেন। এদিকে ওই মামলায় গত ২নভেম্বর শুনানীতে বিজ্ঞ হাকিম বসতবাড়ির মালিক বৃদ্ধ ওবাইদুল হাকিম (৭০), ভাই ¯œায়ু রোগি মো. ইব্রাহিম (৪৫) ও ছেলে চকরিয়া কলেজের অনার্স প্রথম বর্ষের ছাত্র আবু মিরাজ রোকন (২১)কে জামিন নামঞ্জুর করে জেলে পাঠায়।

জানা গেছে ওই মামলায় ওবাইদুল হাকিমের স্ত্রী রেহেনা আক্তার, মেয়ে গোঁয়াখালী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা খারেছা আক্তার ও ডুলাহাজারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষিকা মালেকা বেগমকেও মামলায় আসামি করা হয়। স্থানীয়রা জানিয়েছেন ওই দিন ওবাইদুল হাকিমের স্ত্রী রেহেনা ও মেয়ে মালেকা বাড়িতে ছিলেননা। কিন্তু মামলায় তাদেরকেও আসামি করে। জানা গেছে শিলখালী পেঠান মাতবর পাড়া এলাকার আসহাব উদ্দিনের পুত্র আবু বক্কর গং তাদের বাড়িতে বিদ্যুত সংযোগের জন্য একই এলাকার মৃত হাজি নুরুল হকের বসত বাড়িতে একটি খুঁটি স্থাপন করে। ওই খুঁটি থেকে তার টাঙ্গিয়ে তাদের বাড়িতে বিদ্যুত নেওয়ার জন্য তারা সংযোগ স্থাপন করেছেন।
অপরদিকে ঝুঁকিপুর্ন স্থানে বসতবাড়ির উপর খুটি স্থাপন না করতে নুরুল হকের ছয় পুত্র এর বিরোধীতা করেন। তারা ওই খুটি অপসারনের জন্য পল্লি বিদ্যুত সমিতি কক্সবাজারের জেনারেল ম্যানেজার, জোনাল অফিস চকরিয়া, পেকুয়ার ইউএনও ও শীলখালী ইউপি চেয়ারম্যান বরাবরে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে নুরুল হকের ছেলেরা পৈত্রিক বসতভিটায় পৃথক বসত বাড়ি নির্মানের উদ্যেগ নিয়েছেন। পল্লি বিদ্যুতের সদ্য স্থাপিত খুঁটিটি মাঝখানে বিদ্যমান হওয়ায় তাদের বসতি নির্মান থেমে গেছে।
অপরদিকে খুটিটি স্থাপনের ফলে এসব বসতির দৈনন্দিন জীবন যাত্রা ব্যাহত হওয়ার উপক্রম হয়েছে। ওই বসতিতে শতশত বৃক্ষ রয়েছে। বিদ্যুত তার সংযোযিত হওয়ায় গাছের ঢালপালা তারে জড়িয়েছে। এতে যেকোন মুহুর্তে মারাত্বক দুর্ঘটনাসহ প্রানহানির আশংকা রয়েছে।
গতকাল বুধবার দুপুরে সরেজমিনে পরিদর্শনে গিয়ে দেখা গেছে শীলখালীর পেঠান মাতবর পাড়া এলাকায় একটি বিদ্যুতের খুটি ওই বসতিতে বসানো হয়েছে। নতুন সংযোগের জন্য তারও টানানো হয়েছে। তবে যেস্থানে খুটিটি স্থাপন করা হয়েছে সেটি নুরুল হকের বিধ্বস্থ টিনের বাড়ির চালের নিকটে। পাশ্ববর্তী স্থানে সরকারি চলাচল সড়ক ও উত্তর পাশে নির্জন বিলও রয়েছে। পল্লি বিদ্যুত সমিতি সেটি উপেক্ষা করে তার বসতি ভিটার মাঝখান দিয়ে খুটি বসিয়েছে।
দেখা গেছে পার্শ্ববর্তী তারাবুনিয়ার দু’টি বিদ্যুত লাইন সবুজ পেঠান মাতবর পাড়ার সাথে মিশেছে। নতুন সংযোগ প্রাপ্তরা ওই দিকের লাইন থেকে সহজ লভ্যে বিদ্যুত সংযোগ পেতে পারেন। কিন্তু সেদিকে না গিয়ে নুরুল হকের পরিবারের সদস্যদের ভোগান্তি সৃষ্টির জন্য তার বাড়িতে জোর করে বিদ্যুতের খুটি বসিয়েছে।
ওবাইদুল হাকিমের স্ত্রী রেহেনা বেগম জানিয়েছেন আমাদেরকে বসত ভিটা থেকে উচ্ছেদ করতে ওই প্রভাবশালীরা দীর্ঘ দিন ধরে হয়রানি করছে। পল্লি বিদ্যুত কর্মকর্তাদের সাথে আতাত করে আমার বসত বাড়ির উপর খুটি বসিয়েছে। এর প্রতিবাদ করায় আমার স্বামী, ছেলে ও মেয়েকে কুপিয়ে আহত করে। টাকা দিয়ে উল্টো আমাদেরকে মামলা ও জেলে পাঠিয়ে হয়রানি করছে। এখন বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে অব্যহত হুমকি দিচ্ছে। আমার পরিবার নিরাপত্তাহীন। তারা মামলা ও হামলা করছে।


শেয়ার করুন