পেকুয়ায় তিন যুবকের সন্ধান নেই ,পাচারে জড়িত রোহিঙ্গা নারী

8690b2a7-0c63-4c7a-8ec9-7401c85c447aপেকুয়া প্রতিনিধি :

পেকুয়ায় তিন যুবকের সন্ধান নেই গত এক বছর ধরে। সাগর পথে মালেশিয়া যাওয়া ওই তিন যুবকের সন্ধান না পাওয়ায় তাদের পরিবারে শোকের মাতম চলছে। বাড়ছে উদ্বেগ, উৎকন্ঠা। জীবিকার তাগিদে ওই তিন যুবক স্বপ্নের দেশ মালেশিয়াতে পাড়ি দেন গত এক বছর আগে। কর্মসংস্থান ও নিশ্চিত চাকুরীর প্রলোভন দেখিয়ে ওই তিন যুবক এক রোহিঙ্গা নারী মানবপাচারকারী চক্রের অন্যতম হোতা ফাতেমা আক্তার প্রকাশ রুবির খপ্পরে পড়ে তারা। জনপ্রতি এক লক্ষ টাকা নিয়ে মালেশিয়ায় পাঠানোর কথা হয় ওই নারীর সাথে তাদের। কয়েক দফায় ওই টাকা তাকে দিয়ে তারা সাগর পথে নৌকা যোগে মালেশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা হয় গত ২০১৪সালের শেষের দিকে।

জানাগেছে, পাড়ি দেওয়ার পর ওই তিন যুবককে থাইল্যান্ডের একটি দ্বীপে আটকিয়ে রাখে। এসময় তাদের কাছ থেকে জিম্মি দশা থেকে মুক্তির জন্য জনপ্রতি ২লক্ষ টাকা দাবী করেন একটি চক্র। জানাগেছে ওই চক্রের পক্ষে ওই রোহিঙ্গা নারী ফাতেমা আক্তার রুবি আটককৃতদের নিকট আত্মীয় স্বজনদের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করেন। এক পর্যায়ে মুক্তিপন হিসেবে তাদেরকে উদ্ধার করতে পরবর্তীতে ২লক্ষ টাকা করে টাকা হাতিয়ে নেন ওই নারী।

তবে গত এক বছর ধরে ওই তিন যুবকের ভাগ্যে কি জুটেছে সেটি এখনো নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না। মুক্তিপন দেওয়ার ২/১দিন পরিবারের সাথে তাদের যোগাযোগ ছিল। এরপর থেকে কোথাও তাদের সন্ধান মিলছেনা। সুদুর মালেশিয়ায় বাংলাদেশের কারো কাছ থেকে নিখোজ ব্যক্তিদের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছেনা। খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, পেকুয়া উপজেলার সদর ইউনিয়নের পুর্বগোয়াখালী গ্রামের মৃত.নুর মোহাম্মদের পুত্র মনিরুল ইসলাম (৩৫), মৃত.সাহাব মিয়ার পুত্র ছরওয়ার উদ্দিন(২৯) ও তার ভাই জসিম উদ্দিন(৩৮) গত এক বছর আগে সাগর পথে মালেশিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। জানাগেছে, তাদের সাথে কন্টাক হয়েছে ফাতেমা আক্তার রুবির সাথে।

ওই নারী মালেশিয়ায় প্রেরনের জন্য তাদের কাছ থেকে প্রথমে কিস্তিতে ১লাখ টাকা করে নেন। এর সুবাদে ওই ব্যক্তিরা তার মাধ্যমে সাগরপথে মালেশিয়া যাওয়ার জন্য ওই সময় বাড়ি ত্যাগ করে। জানাগেছে ফাতেমা আকতার রুবির স্বামী জাফর আহমদ। তিনিও মালেশিয়ায় অবস্থান করছিলেন। স্ত্রীকে দিয়ে মানবপাচারের জন্য কাজ করতেন তার স্বামী। তবে তাদের সুনির্দিষ্ট ঠিকানা পাওয়া যায়নি। স্থানীয়রা জানিয়েছেন ওই নারী মুলত রোহিঙ্গা। দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে তিনি টেকনাফ, উখিয়া, মহেশখালী, পেকুয়া, চকরিয়াসহ চ্ট্রগ্রাম ও বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে লোকজন অবৈধভাবে মালেশিয়ায় পাচারে জড়িত রয়েছেন।

তার ঠিকানা একেক সময় একেক রকম। খানিক পেকুয়ার বাসিন্দা, কখনো চট্টগ্রামের সাতকানিয়া ও লোহাগাড়া থানায় তার স্থায়ী বসতির পরিচয় দেন। অধিকাংশ সময় চট্টগ্রাম শহরেও ব্যয় করে থাকেন। টেকনাফের সাবরাং ও শাপলাপুরে তার একটি সক্রিয় মানবপাচারকারী সিন্ডিকেট রয়েছে। এসবের মুল হোতা ওই নারী। নিখোঁজ যুবক মনিরুল ইসলাম এর ছোট ভাই গোঁয়াখালী এলাকার আবুল বশর জানিয়েছেন গত এক বছর পুর্বে আমার ভাইকে ওই রোহিঙ্গা মহিলা সাগর পথে মালয়েশিয়ায় পাঠায়। কিছু দিন বন্দি রেখে দু’লক্ষ টাকা মুক্তিপন আদায় করেন ওই মহিলা। ওই সময় থেকে ভাইয়ের সন্ধ্যান নেই। তার মুঠোফোনের মাধ্যমে ভাইয়ের খোঁজ খবর নিই তার কাছ থেকে। কিন্তু কোন উত্তর দিতে পারেন না। এ ব্যাপারে ফাতেমা আক্তার প্রকাশ রুবি এর কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন মানব পাচারের সাথে আমি জড়িত নাই। চট্টগ্রাম শহরের একটি পোশাক কারখানায় আমি চাকুরি করি। এটি আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।


শেয়ার করুন