পিএসসি : ছেলেমেয়ে নিয়ে ছেলেখেলা

 

মাহ্ফুজুল হক:
গত বছর নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়ে বেশ কয়েকটি সরকারি-বেসরকারি প্রাইমারি স্কুল পরিদর্শনে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিলো। পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়ণরত ছাত্র-ছাত্রীদের সাথে কথা বলাই ছিলো আমারের সফরের উদ্দেশ্য। কিছুদিন পর তাদের পরিক্ষা। সবাই কেমন যেন চাপা উত্তেজনায় আতঙ্কগ্রস্ত, চোখে মুখে তার ছাপ সুস্পষ্ট। ক্লাসে ঢুকে কুশল বিনিময়ের পর বললাম, কয়েকদিন পরই তো তোমাদের পরিক্ষা। তো প্রস্তুতি কেমন ? উত্তর এলো ভালো। প্রশ্ন : তোমরা তো পরিক্ষায় অংশ নিতে তৈরি, তো কী সে পরিক্ষা ? অনেকটা হেলায় সমস্বরে জবাব : কী আবার, পিএসসি ! প্রশ্ন : আচ্ছা, ওই সংক্ষেপিত শব্দটির (এবরিভিয়েশন) পুরো অর্থ (ইলাবুরেশন) কী ? এবার জবাব দাতার সংখ্যা কয়েকজনে নেমে এসেছে।
জবাব এলো দু’প্রকার : প্রাইমারি স্কুল সার্টিফিকেট পরিক্ষা ও প্রাইমারি এডুকেশন কমপ্লিশন পরিক্ষা। এক স্কুলে প্রধান শিক্ষক মহোদয় আমার পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। তাঁকে জিজ্ঞেস করলাম দু’টির মধ্যে কোন্টি সঠিক ? তিনি বললেন, শেষেরটি।
যাই হোক, বিষয়টি নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত হয়ে পড়লাম। তার আগের বছর আমার ছেলেটি ওই পরিক্ষায় অংশ নিয়েছিলো। তার সার্টিফিকেটটি পড়তে বসলাম দ্বিধা দূর করার জন্য। সেখানে লেখা রয়েছে : সার্টিফিকেট। প্রাইমারি এডুকেশন কমপ্লিশন এক্সামিনেশন ২০১৪।
আরো নিচে গিয়ে লেখা রয়েছে : এটেনডেড প্রাইমারি স্কুল কমপ্লিশন এক্সামিনেশন ২০১৪। পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীরা বলেছে একই পরিক্ষার দু’টি নাম আর ডিপিই মারফত জানা গেলো আরও একটি নাম। মোট তিনটি। প্রাইমারি স্কুল সার্টিফিকেট পরিক্ষা, প্রাইমারি এডুকেশন কমপ্লিশন পরিক্ষা এবং প্রাইমারি স্কুল কমপ্লিশন পরিক্ষা। (স্মর্তব্য, আমার পুত্র সন্তানটি ইংরেজি মাধ্যমে পড়ে। তাই তার সনদটি ইংরেজিতে লেখা) আমার দ্বিধা এবার দ্বন্দ্বে রূপ নিলো।
স্কুল পরিদর্শনে গিয়ে মনে হয়েছিলো যে, কোমলমতি ছাত্রছাত্রীরা ভুল বলেছে। কিন্তু খোদ প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নামে ডাইরেক্টরেট অব প্রাইমারি এডুকেশন কর্তৃক প্রদত্ত সনদপত্রে যখন দেখি একই পরিক্ষার নাম একটি নয়, দু’টি। তখন দ্বিধা ও দ্বন্দ্ব দু’টোই লাগে বৈকি ! এহেন অবস্থায় ছাত্র-ছাত্রী বা শিক্ষক/অভিভাবকদের অভিযুক্ত করার যুক্তিসঙ্গত কোন কারণ থাকে কী ?
এদেশের স্বাধীনতার পর থেকে দেখে এসেছি পঞ্চম শ্রেণিতে কোন ধরণের বোর্ড বা পাবলিক পরিক্ষা নেবার প্রচলন ছিলো না। তবে বৃত্তি পরিক্ষা নেয়া হতো। প্রাথমিক বৃত্তি পরিক্ষায় স্বভাবতঃই মেধাবী ছাত্র-ছাত্রীরা অংশ নিতো। সঙ্গত কারণেই তাদের সংখ্যা ছিলো খুবই সীমিত।
২০০৯ সন থেকে এদেশে পিএসসি বা পিইসি পরিক্ষা নেয়া শুরু করলো প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ ডাইরেক্টরেট অব প্রাইমারী এডুকেশন সংক্ষেপে ডিপিই। এই পরিক্ষাটি হলো বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ পাবলিক পরিক্ষা যাতে সারা দেশের ১০৮,৫৩৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ২৪,১৫,৩৪১ জন ছাত্র-ছাত্রী অংশগ্রহন করে থাকে (২০১৪ সনের পরিক্ষার হিসাব)। আচ্ছা, যারা ওই পরিক্ষায় অংশ নিচ্ছে, না ভুল বললাম, যাদের ওই পরিক্ষায় অংশ নিতে বাধ্য করা হচ্ছে, তাদের বয়স কত। সরকারের নিয়ম অনুযায়ী একজন শিশুর শেখার হাতেখড়ি হয় মানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তি হয় যখন তার বয়স ৬ বছর বা ৬ প্লাস। তদনুসারে পিইসি বা পিএসসি পরিক্ষা যাই বলি না কেন তাতে অংশ নিতে হয় শিশুটির ১১ বছর বয়সে। আপনার-আমার সবারই তো ছেলেমেয়ে আছে। ওইটুকু বয়সে কোন ছেলেমেয়ে কি এমন বুঝ-জ্ঞান সম্পন্ন হয় যে, পাবলিক পরিক্ষার মতো এতো বড় আয়োজনে সে নিজেকে খাপ খাইয়ে নিতে পারে?
আর পাবলিক পরিক্ষার জন্য যে প্রস্তুতি, সিরিয়াসনেস এবং সবকিছু গোছগাছ করা যাকে কথায় বলে, কোমর বেঁধে কাজে নেমে পড়া, তা কি ওইটুকুন ছেলে বা মেয়ের পক্ষে আদৌ সম্ভব? না, মোটেই সম্ভব না। আর একথাটি খোদ কর্তৃপক্ষও জানেন, বুঝেন।
তাই তো দেখি, পরিক্ষা গ্রহনের বা খাতা কাটার পূর্বে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকদের ডেকে কর্তারা অনেকটা এই ভাষায় তালিম দেন যে, পঞ্চম শ্রেণির পড়া-শোনা শেষে পাবলিক পরিক্ষার আয়োজন করা কি অপরাধ হয়েছে? আগে যখন পাবলিক পরিক্ষা ছিল না, তখন কি আপনারা (শিক্ষকেরা) পঞ্চম শ্রেণিতে বার্ষিক পরিক্ষা নিতেন না আর তাতে কেউ ফেল করলে তাকে পরিক্ষায় উত্তীর্ণ দেখিয়ে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার ব্যবস্থা করে দিতেন না? সুতরাং সবাইকে নম্বর দিয়ে পাশ করিয়ে দেবেন। এমনকি কেউ সাদা খাতা জমা দিলে তাকেও পাশ করিয়ে দেবেন। বুঝহ সুজন !
পরিক্ষা তো পরিক্ষাই। এর জন্য করতে হয় বিরাট আয়োজন। ছবি, জন্ম নিবন্ধন, সই ইত্যাদি সহকারে ফরম পূরণ, পরিক্ষার ফিস গ্রহন, প্রবেশ পত্র তৈরি ও সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রেরণ, প্রশ্নপত্র তৈরিকরণ, সারা দেশে পরিক্ষা কেন্দ্র স্থাপন, পরিক্ষা পরিদর্শক নির্ধারন, বিভিন্ন স্তরের নেতা-কর্মকর্তা কর্তৃক পরিক্ষা চলাকালে ঘটা করে পরিক্ষার হল পরিদর্শন, ছবি তোলা ও তা পত্রিকায় প্রকাশ করা, পিতা-মাতা-অভিভাবক সমভিব্যাহারে পরিক্ষার্থীর পরিক্ষা হলে সময় মতো পৌঁছানো, উদ্বেগ-উৎকন্ঠা নিয়ে অপেক্ষা, পরিক্ষা শেষে ঘরে নিয়ে আসা, উত্তরপত্র যাচাইয়ের জন্য ওইগুলো বিভিন্ন শিক্ষকের কাছে প্রেরণ, নম্বর টেবুলেশন, ফলাফল প্রস্তুতকরণ, ফল প্রকাশের তারিখ নির্ধারণ করতঃ পত্র-পত্রিকা, রেডিও-টিভি, মোবাইল ফোন মারফত ঘোষণাকরণ, মন্ত্রী-প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক ফল ঘোষণা, তা ছবিসহ বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে পরিবেশন, প্রতিষ্ঠান বা ইটারনেট অথবা মোবাইল ফোনে ফল সংগ্রহের জন্য হুড়োহুড়ি, সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানে গিয়ে প্রধান শিক্ষকসহ যৌথ ছবি তুলে তা সংবাদ মাধ্যমে প্রেরণ ও তা দেখার-পড়ার জন্য ঔৎসুক্য, ফল পূণঃ যাচাই করার জন্য মোটা অংকের টাকাসহ অনলাইনে আবেদন, সনদ পত্র তৈরি ও তা সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে বিতরণ। আর এই সকল কাজের জন্য মোটা অংকের টাকা-পয়সার কাজ-কারবার তো আছেই। সব মিলিয়ে এলাহী কারবার, রাজকীয় আয়োজন! এতো কিছু করার পরও যখন শুনি যে, ‘সবাইকে পাশ করিয়ে দেবেন’ জাতীয় উক্তি এবং যখন দেখি যে, একেবারে বেক-বেঞ্চার, ডা-ল (Dull) শিক্ষার্থীটিও মেধাবী ও অধ্যবসায়ী শিক্ষার্থীর সাথে পাল্লা দিয়ে ভালোই ফল করেছে, তখন খট্কা একটু লাগে বৈকি ! তবে আহত হয় ওই অধ্যবসায়ী শিক্ষার্থীটি। সে ভাবে, এতো পরিশ্রম করে যে রেজাল্ট আর পড়া-শোনা না করা শিক্ষার্থীটিরও একই রেজাল্ট !
বাংলাদেশে শিক্ষার জন্য মন্ত্রণালয় আছে দু’টি : একটি শিক্ষা মন্ত্রণালয় অপরটি প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণিতে অধ্যয়ণরত শিশুদের বিষয়-আসয় নিয়ে কাজ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে সর্বোচ্চ স্তর পর্যন্ত শিক্ষা সংক্রান্ত বিষয়াদি দেখভাল করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অবশ্য মাস এডুকেশন (Mass Education) তথা নিরক্ষর, বয়স্ক ইত্যাদি পর্যায়ে শিক্ষা বিস্তারেও ভূমিকা রাখে। ড. কুদরত-ই-খোদা শিক্ষা কমিশন প্রদত্ত শিক্ষা নীতির দোহাই দিয়ে সম্প্রতি দু’মন্ত্রণালয়ই এক নাটক সাজিয়েছে। নাটককে ইংরেজিতে ড্রামা বলা হয়। আবার প্লে-ও বলে। অন্যদিকে প্লে মানে খেলা। বিষয়টিকে নাটক বলবো নাকি খেলা বলবো, সে বিষয়ে কিছুটা সংশয়ে আছি। মাস দু’য়েক আগে (১৮ মে, ২০১৬ খৃস্টাব্দ) দু’মন্ত্রণালয় ঘটা করে এক সংবাদ সম্মেলন ডাকলো। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ এবং প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাননীয় মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান দু’জনই তাতে উপস্থিত থেকে বক্তব্য রাখলেন। ‘শিক্ষা জীবনের জন্য আজ এক ঐতিহাসিক দিন’ মন্তব্য করে শিক্ষামন্ত্রী নূরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘এতবড় একটা মৌলিক পরিবর্তন আমাদের শিক্ষা ক্ষেত্রে কখনও হয়নি।’ তিনি বলেন, ‘জাতীয় শিক্ষানীতি অনুযায়ী আজ (বুধবার) আমরা চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছি। এতে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সব ধরণের শিক্ষা প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় চলে গেল। অবিলম্বে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত সকল শিক্ষা প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কাছে হস্তান্তর করব। তারা এটা গ্রহন করে পরিচালনা করবে।’ ব্যাস, হয়ে গেলো অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত প্রাথমিক শিক্ষা। এবিষয়ে বিদগ্ধ জনেরা বহু কথা বলেছেন। আমি সেদিকে যাচ্ছি না। এখন প্রশ্ন হলো : প্রাথমিক শিক্ষা যদি অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত হয়, তবে পঞ্চম শ্রেণি শেষে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপণী পরিক্ষার আর কোন প্রয়োজনীয়তা থাকে কী? এ প্রশ্নের জবাব অবশ্য দিয়েছেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা বিষয়ক মাননীয় মন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমান স্বয়ং উল্লিখিত ঘোষণার মাসখানিক পরে (১৪ জুন, ২০১৬)। তাঁর কথার সার সংক্ষেপ, সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, চলতি বছর থেকে (২০১৬ সন), পরের বছর থেকে নয়, পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য পিএসসি পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হবে না। এই সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। এখন এটি অনুমোদনের জন্য মন্ত্রী পরিষদে পাঠানো হবে। চলতি বছর পঞ্চম শ্রেণিতে কোন পিএসসি পরিক্ষা হবে না। (No PSC for 5th graders from now on. Staff correspondent | Update: 18:27, Jun 21, 2016 Daily Prothom Alo.)
তাঁর এ ঘোষণাটি আশা জাগানিয়া। পঞ্চম শ্রেণির কোমলমতি শিশুরা তাদের বুকের উপর চেপে থাকা পিএসসি/পিইসি নামক পরিক্ষার অসহনীয় ভার থেকে মুক্ত হয়ে মুক্ত বিহঙ্গের মতো বুক ভরে শ্বাস নিলো। তাদের মাঝে আনন্দের ঢেউ খেলে গেলো। আর শিক্ষক, অভিভাকেরাও হলেন টেনশনমুক্ত। তাঁরা হাঁফ ছেড়ে বাঁচলেন। পরিক্ষার প্রস্তুতিস্বরূপ স্কুলে স্কুলে অনুষ্ঠেয় এক্সট্রা টাকায় বিশেষ কোচিং, মডেল টেস্ট, বিশেষ বিশেষ শিক্ষকের ঘরে ঘরে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে প্রাইভেট টুইশন করতে যাওয়া ছাত্র-ছাত্রীদের তৎপরতা থেমে গেলো। আপাততঃ থেমে থাকলো ওই বিশেষ শ্রেণির শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্যও। দিকে দিকে বয়ে যেতে লাগলো আনন্দের সুবাতাস।
নাটক, নভেল জাতীয় থ্রিলারগুলোতে শুধু একশন, সুপার একশন, থ্রিল, কমেডি, ক্লাইমেক্স থাকলেই চলে না ; থাকতে হয় ট্রাজেডিও। ট্রাজেডির পর আবার ট্র্যাজিকমেডি মানে বিয়োগান্ত পরিণতি শেষে আবার মিলন। শিশুদের আনন্দ বারতা, অভিভাবকদের হাঁফ ছেড়ে যাওয়া আর স্কুলে স্কুলে বিশেষ বিশেষ তৎপরতা নিমিষে থেমে গেলো। সবার মুখ ঘন কুয়াশার চাদরে ঢেকে গেলো। রৌদ্র করৌজ্জ্বল দিবস অমাবস্যার নিকষ কালোয় ঢাকা পড়লো প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের মূখ্য সচিবের এক সংবাদ ব্রিফিংয়ের পর (২৭ জুন, ২০১৬)। তিনি জানালেন যে, চলতি বছরের পিএসসি পরিক্ষা বাতিল সংক্রান্ত প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ঘোষণা মন্ত্রী পরিষদ অনুমোদন করেনি। সুতরাং চলতি ২০১৬ সনে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের প্রাইমারী স্কুল সার্টিফিকেট (পিএসসি) এবং সমমানের ইবতেদায়ী পরিক্ষা যথারীতি অনুষ্ঠিত হবে। (Now PSC exams to stay. 02:29 PM, June 27, 2016 / LAST MODIFIED: 02:48 PM, June 27, 2016 / The Daily Star.)
সত্যিই ট্রাজিক ! বিয়োগান্ত ! আশার গুঁড়ে বালি ! এক্সপেরিমেন্টের খেলা চলছে। হয়তো ভবিষ্যতে আরো চলবে। কর্তারা আমাদের কোমলমতি শিশুদের নিয়ে, জাতির ভবিষ্যৎ কর্ণধারদের নিয়ে এক্সপেরিমেন্ট নামক ছেলেখেলায় মেতে রয়েছেন। মনীষী ঈশপের ‘কারো ছেলেখেলা, কারো মরণখেলা’ গল্পটি বলে ইতি টানছি। পুকুর পাড়ে বসে একদল ছেলে পুকুরে ভাসমান ব্যাঙের প্রতি ঢিল ছুড়ে ছুড়ে খেলা করছে। জোরে জোরে ছোড়া ঢিলগুলো যেই না ব্যাঙের গায়ে পড়ছে, অমনি ব্যাঙটি আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। ওদিকে ছেলেরা ব্যাঙের ওই যন্ত্রণা কাতর অবস্থা দেখে উল্লসিত হয়ে দ্বিগুণ উৎসাহ নিয়ে পরপ্সর ঢিল ছোড়ার প্রতিযোগিতা করছে। কে কতোটি ব্যাঙকে আঘাত করতে পারলো তার হিসাব কষে তারা আনন্দে আতœহারা হয়, পরস্পর গড়াগড়ি করে, হাসাহাসি করে আর আরো জোরে জোরে ঢিল ছুড়তে থাকে। ব্যাঙগুলোর এই করুণ পরিণতির দৃশ্য সহ্য করতে না পেরে এক বয়োবৃদ্ধ ব্যাঙ সাহস করে মাথা উঁচিয়ে খেলায় মগ্ন ছেলেদের ডেকে বললো, তোমরা আমাদের প্রতি ঢিল ছুড়ে ছুড়ে যে খেলা খেলছো, তা তোমাদের কাছে নিছক খেলা বটে ; কিন্তু তা যে আমাদের জন্য মরণখেলা।
সেল নাম্বার : ০১৮৬৯ ৮৬৬৯০০ কক্সবাজার
তারিখ : ১৭.০৭.২০১৬ খৃস্টাব্দ, ১২ শাওয়াল, ১৪৩৭ হিজরী, ০২ শ্রাবণ,১৪২৩ বঙ্গাব্দ, রোববার।


শেয়ার করুন