পাহাড়-মেঘের আড়ালে যাবেন নাকি বেড়াতে

Bandarban news pic 1সিটিএন ডেস্ক:

সারি সারি সবুজ পাহাড়। সেখানে মেঘের আড়ালে হারিয়ে যেতে নেই মানা। বৃষ্টিময় প্রকৃতি যেনও তার সবটুকু রূপ ঢেলে দিয়েছে বান্দরবান পার্বত্য জেলাকে। শীত নয়, এই বর্ষায় সারি সারি সবুজ গালিচার ওপর যোগ হবে ভিন্ন মাত্রা। ঈদের ছুটিতে তাই সবুজের সঙ্গে স্নান করে নিতে পারেন এ সুযোগে।
এক ভিন্ন রূপেই দেখা যায় এই বর্ষাময় পর্যটন শহরকে। আমাদের দেশের ভ্রমণ পিয়াসুরা ভ্রমণের জন্য শীত মৌসুমকে উপযুক্ত হিসেবে বেছে নেয়। হয়তো অনেকেই জানেন না বৃষ্টির এই সময়ে পাহাড় ঘেরা জেলাটি যেনও একটি সবুজ কার্পেটের ওপর দাঁড়িয়ে থাকে। যেদিকে দু চোখ যাবে সবুজে সবুজে বর্ণিল এক নতুন সাজে ধরা দেবে আপনার কাছে।
অবিরাম বর্ষণের জলধারার পরশে পাহাড়ের বৃক্ষরাজি নব যৌবন লাভ করে। মেঘ আর পাহাড়ের সম্পর্কের কথা তো নতুন করে বলার কিছুই নেই। তবুও বলতে হয়, পাহাড়ের সঙ্গে আকাশের সারি সারি মেঘের ভেসে বেড়ানোর সর্ম্পকে নতুন মাত্রা এনে দেয় এই ঝুম বর্ষার সময়। পাহাড়ের বুক চিরে শতশত ঝর্ণা ধারা আপনাকে নিয়ে যাবে যেনও কোনও অচেনা এক নতুন রাজ্যে । এছাড়া শহরের কাছের নীলআচল, চিম্বুক, জীবননগর আর নীলগিরির ওপর দাঁড়িয়ে মেঘ স্পর্শ করার ইচ্ছে হলে আপনাকে অবশ্যই ভ্রমণের জন্য বেছে নিতে হবে বান্দরবানকে।
নিশ্চয় মন চাইছে মেঘের সঙ্গে লুকোচুরি খেলতে। তবে আর দেরি কেন, জীবনের ছক থেকে বেরিয়ে হারিয়ে যেতে পারেন নীলাচলের মেঘে ঢাকা পাহাড়ে, মেঘলা লেকের স্বচ্ছ জলে, ভাসাতে পারেন ডিঙ্গি নৌকা অথবা ঘুরে আসতে পারেন চিম্বুক পাহাড়ের আদিবাসীদের গ্রামে। ক্লান্ত শরীরকে জুড়িয়ে নিতে পারেন তিন্দু-রেমাক্রির হিমেল বাতাসে বা আদিবাসীদের মাচাং ঘরে। এছাড়া কৃষি প্রধান দেশের বিভিন্ন জেলার চাষাবাদের চেয়ে জুমচাষ আপনার নজর কাড়বে নিঃসন্দেহে।
জেলা শহর থেকে ৫ কিলোমিটার দূরে দেখতে পাবেন মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্স। আর ১৮শ’ ফিট উঁচু নীলাচল থেকে সবুজের চাদরে ঢেকে রাখে বান্দরবানকে। বান্দরবান-চিম্বুক রোডের ৮ কিলোমিটারে রয়েছে পাহাড়ি ঝর্ণা শৈল প্রপাত। সেখান থেকে গড়িয়ে পড়া জলরাশির স্রোত কখনও বিপদজনকও হয়ে ওঠে। তাই ঝর্ণায় না নামাই ভালো। Bandarban news pic 2
২৬ কিলোমিটার দূরে রয়েছে বাংলার দার্জিলিংখ্যাত চিম্বুক পাহাড়। এ ধরনের শত শত পাহাড় তার রূপ প্রদর্শনে ভিন্ন বাহার নিয়েই যেনও আপনার জন্য অপেক্ষা করছে। এই পাহাড়গুলোতে না উঠলে বান্দরবান ভ্রমণের মূল আনন্দই অধরা থেকে যাবে।
বান্দরবান শহরের গ্রিনহিল হোটেলের ম্যানেজার আশিষ ধর বলেন, প্রচার-প্রচারণার অভাবে বর্ষায় আমাদের দেশে পর্যটকদের ভ্রমণ বিমুখতা দেখা যায়।
নীলআচল পর্যটনে ঢাকা থেকে আসা পর্যটক আফসার উদ্দিন বলেন, শীতে বেড়াতে আসলে মেঘের ভেলা দেখা যায় না, বর্ষায় এসে সারি সারি মেঘের ভেলা দেখা খুব ভালো লাগছে।
বান্দরবান হোটেল মোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম বলেন, পাহাড়ের সৌন্দর্য দেখতে হলে শীত নয় আপনাকে অবশ্যই বর্ষায় বেড়াতে আসতে হবে।
বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা ভারতের দার্জিলিংয়ে বেড়াতে যান। অথচ পর্যাপ্ত আধুনিক সুযোগ-সুবিধা বাড়ালে এবং জেলার অভ্যন্তরীণ সড়ক যোগাযোগ অবকাঠামো আরও উন্নত করা গেলে আমাদের বান্দরবানের সৌন্দর্য ভারতের দার্জিলিংকেও হার মানাবে বলে মনে করেন অনেকেই।

3


শেয়ার করুন