মহেশখালীর

পানিরছড়ায় ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক সবুজ উপকূল কর্মসূচি

unnamed (1)নিজস্ব প্রতিনিধি :

স্কুল পড়ুয়া ছেলেমেয়েদের প্রতি সবুজ সুরক্ষার আহবানের মধ্যদিয়ে উপকূলীয় জেলা কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার নিভৃত গ্রাম পানিরছড়ায় ২৯ অক্টোবর ২০১৫ বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হল ‘ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক সবুজ উপকূল ২০১৫’ কর্মসূচি।

উপজেলা সদর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার দূরে পানিরছড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ে আয়োজিত এ অনুষ্ঠান ঘিরে বিদ্যালয় ক্যাম্পাস উৎসবমূখর হয়ে ওঠে। অনুষ্ঠানে বিদ্যালয়ের ৫ শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের পৃষ্ঠপোষকতায় এই কর্মসূচির আয়োজন করে উপকূল বিষয়ক কমিউনিটি জার্নাল উপকূল বাংলাদেশ।

অনুষ্ঠানের মধ্যে ছিল আলোচনা সভা, গাছের চারা রোপণ, পুরস্কার বিতরণ ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। কর্মসূচি উপলক্ষে বিদ্যালয়ের আলোকযাত্রা দল প্রকাশ করে ‘বেলাভূমি’ নামের দেয়াল পত্রিকা। এতে শিক্ষার্থীদের পরিবেশ বিষয়ক লেখা প্রকাশিত হয়।

‘সবুজ বাঁচাই, সবুজে বাঁচি’ স্লোগান সামনে রেখে অনুষ্ঠিত এ কর্মসূচিতে আলোচনার নির্ধারিত বিষয় ছিল ‘সবুজ উপকূল সুরক্ষায় আগামী প্রজন্মের করণীয়’। এতে প্রধান অতিথি ছিলেন বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কোস্টট্রাস্টের কর্মকর্তা মকবুল আহমদ। পানিরছড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সবুজ উপকূল ২০১৫-এর স্থানীয় বাস্তবায়ন কমিটির আহবায়ক মো. রাজি উল্লাহ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

বিষয়ের ওপর আরও আলোকপাত করে বক্তব্য দেন ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক কক্সবাজার শাখার ম্যানেজার (অপারেশন) হারুনার রশিদ, সাংবাদিক জয়নাল আবেদীন, মাহবুব রোকন, বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ব্রজ গোপাল ঘোষ, বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সদস্য আবদুল খালেক, মো. হোসেন এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্র এ এফ এম সাঈদ ইসলাম।

অনুষ্ঠানের শুরুতে কর্মসূচির সার্বিক দিক তুলে ধরে স্বাগত বক্তব্য দেন উপকূল বাংলাদেশ-এর পরিচালক রফিকুল ইসলাম এবং অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন পানিরছড়া আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয়ের শারীরিক শিক্ষক আনসারুল করিম। বক্তব্য শুরুর আগে পবিত্র কোরআন থেকে তেলাওয়াত ও জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশিত হয়।

অনুষ্ঠানে পরিবেশ রক্ষায় আগামী প্রজন্মের ভূমিকার ওপর জোর দেয়া হয়। বক্তারা বলেন, পরিবেশ রক্ষা ও উপকূলের সবুজ বাঁচিয়ে রাখতে সবার আগে এগিয়ে আসতে হবে তরুণ প্রজন্মকে। গাছ লাগানোর পাশাপাশি গাছ কাটা রোধের ওপর জোর দেন বক্তারা। অনুষ্ঠানে স্কুল পড়ুয়াদের মাঝে সচেতনতা বাড়াতে শিক্ষার্থীদের লেখালেখি চর্চা অব্যাহত রাখার আহবান জানানো হয়।

অনুষ্ঠানে ‘সবুজ উপকূল সুরক্ষায় আমার ভাবনা’ বিষয়ে রচনা লিখন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করে দশম শ্রেণীর তানিয়া সোলতানা তারিন, দ্বিতীয় স্থান অধিকার করেছে নবম শ্রেণীর সানজিদা নুসরাত, তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে নবম শ্রেণীর সারমিন সোনিয়া লাকী। একই বিষয়ে পত্র লিখন প্রতিযোগিতায় প্রথম স্থান অধিকার করেছে অস্টম শ্রেণীর উমাইয়া বিনতে রিয়া, দ্বিতীয় হয়েছে অস্টম শ্রেণীর আসিফ রহমান সৌরভ এবং তৃতীয় হয়েছে সপ্তম শ্রেণীর এ এফ এম সাঈদ ইসলাম। দেয়াল লিখন প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে দশম শ্রেণীর আকলিমা হেলালী মিশু, দ্বিতীয় হয়েছে দশম শ্রেণীর মো. শওকত, তৃতীয় হয়েছে দশম শ্রেণীর কাউচার। বিজয়ীদের পুরস্কার হিসাবে বই ও সাফল্য সনদ দেয়া হয়।

আলোচনা সভা ও পুরস্কার বিতরণ শেষে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এতে অংশ নেয় বিদ্যালয়ের আসিফ রহমান সৌরভ, সাইফুল ইসলাম, জিপসী আকতার, সিনিয়র শিক্ষক পথিক চন্দ্র দে এবং স্থানীয় সঙ্গীত শিল্পী প্রদীপ ঘোষ।

অনুষ্ঠানে মিডিয়া পার্টনার হিসাবে ছিল এটিএন বাংলা, এটিএন নিউজ ও দৈনিক সমকাল, আইটি পার্টনার ছিল আইটি প্রতিষ্ঠান ডট সিলিকন। আয়োজনে সহযোগিতা করেছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা কোস্টট্রাস্ট ও স্কুল পড়ুয়াদের লেখালেখির সংগঠণ আলোকযাত্রা।

উপকূলের ১০ জেলার ১৩টি উপজেলা এই কর্মসূচির আওতায় এসেছে। ১৫টি স্থানের ৭০টি স্কুলের প্রায় ২৮ হাজার শিক্ষার্থী এই কর্মসূচিতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে অংশ নিচ্ছে। স্কুল-ভিত্তিক কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে ভোলার তজুমদ্দিন, মনপুরা, বরগুনা সদর, পটুয়াখালীর কলাপাড়া, সাতক্ষীরার তালা, খুলনার পাইকগাছা, বাগেরহাটের সদর, মোরেলগঞ্জ, পিরোজপুরের কাউখালী, লক্ষ্মীপুরের কমলনগরের তোরাবগঞ্জ, ফজুমিয়ারহাট, চট্টগ্রামের বাঁশখালী এবং কক্সবাজারের সদর ও মহেশখালীতে।

মহেশখালীর এই কর্মসূচির মধ্যদিয়ে ১৪টি স্কুল-ভিত্তিক কর্মসূচি সমাপ্ত হলো। এরই ধরাবাহিকতায় নভেম্বরের শেষ সপ্তাহে কেন্দ্রীয় কর্মসূচি আয়োজন করা হচ্ছে দ্বীপ জেলা ভোলা সদরে। ৮ সেপ্টেম্বর ভোলার তজুমদ্দিন থেকে এই কর্মসূচির সূচনা ঘটে।

কর্মসূচিতে স্কুল-কলেজ পড়ুুুয়াদের সৃজনশীলতার ওপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। রচনা লিখন, পত্র লিখন এবং দেয়াল পত্রিকা প্রকাশ প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। লেখালেখির মাধ্যমে ওরা প্রকাশ করেছে নিজেদের কথা।


শেয়ার করুন