পর্যটকরা মাতিয়ে গেল কক্সবাজার

কক্সবাজার বীচশাহেদ ইমরান মিজান, সিটিএন:
টানা অবরোধ-হরতালের মাঝে টানা তিন দিন ছুটি পেয়ে আকস্মিক কক্সবাজারে ছুটে এসেছে অসংখ্য পর্যটক। গত বৃহস্পতিবার স্বাধীনতা দিবসের ছুটিসহ শনিবার পর্যন্ত এ ছুটির মাঝে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা এসব পর্যটকদের পদভারে জেলার পর্যটন কেন্দ্রগুলো মাতিয়ে উঠে। হঠাৎ অনেক পর্যটকের আগমণে সম্বিৎ ফিরে পায় পর্যটন ব্যবসায়ীরা। তবে তিন দিনেই যেন আটকে ছিল পর্যটন মুখর কক্সবাজার। কেননা গতকাল শনিবার ২০ দলের আগাম হরতাল ঘোষণা না থাকলে ছুটি শেষ হওয়ার সাথে সাথে কক্সবাজার থেকে ছেড়ে গেছে অধিকাংশ পর্যটক। তবে এখনো কিছু পর্যটক কক্সবাজারে অবস্থান করছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তিনদিনের ছুটি পেয়ে বৃহস্পতিবার অনেক পর্যটক কক্সবাজারে কক্সবাজারে বেড়াতে আসে। শনিবার পর্যটক এসব কক্সবাজার অবস্থান করে। এসব পর্যটকরা কক্সবাজার সমুদ্র সৈকত, হিমছড়ি, দরিয়ানগর, রামুর বৌদ্ধ বিহার, সেন্টমার্টিন, ইনানী ও ডুলহাজরা সাফারী পার্কে ঘুরেছেন।
ফেনী থেকো আসার পর্যটক দম্পতি জুয়েল- নাছরিন বলেন, ‘অনেক দিন মন চাচ্ছিল কক্সবাজারে বেড়াতে আসার। কিন্তু হরতাল-অবরোধের কারণে তা সম্ভব হচ্ছিল না। টানা তিনদিনের সুযোগ পেয়েই ছুটে এলাম।’
হঠাৎ পর্যটকের আগমণে পর্যটন সংশ্লিষ্টদের মাঝেও যেন আকস্মিক প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে আসে। পর্যটকের আগমণে পর্যটন ব্যবসাগুলো মোটামুটি সাজিয়ে তুলতে দেখা গেছে। হোটেল-মোটেল, রেস্তোঁরা, বিপনীবিতান, শুটকি দোকানসহ সব খানেই পর্যটকদের নিখুত পদচারণা দেখা যায়।
অন্যদিকে হঠাৎ পর্যটক আগমণে পরিবহন ব্যবসায়ীদের খুশি হতে দেখা গেছে। বাস থেকে শুরু করে টমটম, রিক্সাওয়ালা পর্যন্ত পর্যটক আগমণের সুবিধা ভোগ করেছে। এসব ব্যবসায়ীরা বলছেন, এখন থেকে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে মৌসুম শেষ হলেও কক্সবাজারে পর্যটক আসবে। কেননা মৌসুমে বেড়াতে না পারায় ভ্রমনপিপাসুরা যেকোন সময়ে কক্সবাজারে ছুটে আসবেন। পর্যটক আসলে ব্যবসায় ক্ষতি পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে বলেও মত দিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
সৈকতের ব্যবসায়ী মাহমুদুল হক বলেন, ‘আশানুরূপের চেয়ে কম হলেও দীর্ঘদিন পর সমুদ্রের বালিয়াড়িতে পর্যটকদের মুখ দেখে আনন্দ লাগছে। আশা করি যদি সব রাজনৈতিক দলের নেতারা সহনশীল হয়ে রাজনৈতিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখেন তাহলে আমাদের আনন্দটা আরও বেড়ে যাবে।’
কক্সবাজার হোটেল-মোটেল গেস্ট হাউস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমরা সব সময় চেষ্টা করেছি কক্সবাজারে পর্যটক নিয়ে আসার। সে লক্ষ্যে অনেক কাজ করেছি। কিন্তু রাজনৈতিক বিরূপ পরিস্থিতির কারণে তা সম্ভবপর হয়নি। এতে আমাদের বিপুল অর্থের ক্ষতি হয়েছে। এখন থেকেই যদি পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয় তা হলে ক্ষতি কিছুটা পুষিয়ে নেয়া সম্ভব হবে।’
প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ৫ জানুয়ারী থেকে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের ডাকা টানা অবরোধ আর থেমে থেমে হরতাল এবং পেট্রল বোমা আতংকে ভর মৌসুমেও কক্সবাজারে পর্যটক আসতে পারেনি। এ নিয়ে কক্সবাজারের পর্যটন ব্যবসায় কোটি কোটি টাকার লোকসান হয়ে থমকে পড়ে অর্থনীতি।


শেয়ার করুন