পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, সেনা মোতায়েনের ‘চিন্তা’ নেই : সিইসি

2015_12_19_14_40_57_UTtwpxjuAMESxmJv8qlgfuZgmPxDC0_originalআসন্ন পৌর নির্বাচনে সারাদেশের পরিস্থিতি সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে তাই সেনা মোতায়েনের দরকার নেই বলে মনে করছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিবউদ্দিন আহমদ। নির্বাচন নিয়ে সারাদেশে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

শনিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর বিয়াম মিলনায়তনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচনে নিয়োজিত মাঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সিইসি সাংবাদিকদের এ কথা জানান।

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা বাহিনী ও নির্বাচনে নিয়োজিত মাঠ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করে যে পরিস্থিতি শুনলাম, তাতে এখনো সেনা মোতায়েনের কোনো চিন্তা-ভাবনা নেই। বিজিবি-র‌্যাব বলেছে তারা ফোর্স বাড়িয়ে দেবে।’

তিনি আরো বলেন, ‘নির্বাচনেরর পরিস্থিতি সুষ্ঠু, স্বাভাবিক এবং নিয়ন্ত্রণে আছে। কোথাও কোনো উদ্বেগজনক পরিস্থিতি নেই। সব প্রার্থীই নির্বাচনী আচরণবিধি মেনে চলছেন। সারাদেশে নির্বাচনকে ঘিরে উৎসবমুখর পরিবেশ বিরাজ করছে।’

মাঠে দুয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা ঘটেছে উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘মাঠে উৎসবমুখর পরিবেশে আচরণবিধি মেনেই প্রচারণা চলছে। দুয়েকটি বিক্ষিপ্ত ঘটনা যা ঘটেছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। পরিস্থিতি অনুকূলে রয়েছে বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে।’

ভোটে পূর্ণ শৃঙ্খলা থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী এলাকার ভোট পরিস্থিতি শুনেছি, এখন পর্যালোচনা করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করব।’

সন্ত্রাসী কার্যক্রম নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে উল্লেখ করে কাজী রকিবউদ্দিন বলেন, ‘জঙ্গি ও সন্ত্রাসের সমস্যা ‘জেনারেল’ সমস্যা। এটা তেমন সমস্যা হবে না। এখনো পর্যন্ত সেরকম কোনো সমস্যা নেই বলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী জানিয়েছে। সন্ত্রাসীদের ধরপাকড়ে এ্যাকশন নেয়া হচ্ছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ভোট পর্যন্ত সন্ত্রাসী-অপরাধী ধরপাকড় কার্যমক্রম আরো তরান্বিত হবে।’

রিটার্নিং কর্মকর্তাদের অনিয়মের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে জানিয়ে সিইসি বলেন, ‘যে কোনো অভিযোগ সত্যতা যাচাই করে ব্যবস্থা নিতে বলেছি। আমরাও অ্যাকশন নেবো। তবে রিটার্নিং কর্মকর্তারা ফিল্ডে রয়েছেন, তারাই এটা দেখবে। আমাদের প্রতিবেদন দেবে।’

এখনো পর্যন্ত আচরণবিধি লঙ্ঘনে কোনো মন্ত্রী-এমপির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তা এড়িয়ে সিইসি বলেন, ‘কিছু প্রার্থীর বিরুদ্ধে নির্বাহী হামিক ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে গণমাধ্যমে জেনেছি। তারা আমাদের কাছেও প্রতিবেদন দেবে। অনিয়ম ঘটলে প্রম্পট অ্যাকশন (দ্রুত ব্যবস্থা) নেবে এখন থেকে।’

তিনি বলেন, ‘কেন্দ্রভিত্তিক কি পরিমাণ সদস্য নিয়োগ হবে তা প্রস্তাব রয়েছে আমাদের। তবে ঝুঁকিপূর্ণ বিবেচনা করে ফোর্স বাড়ানো হবে কেন্দ্রে। আমরাও এ সংক্রান্ত তথ্য পাব। পরে নিরাপত্তা সদস্য মোতায়েনের সময় তা ঠিক করা হবে।’

বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সচিব, সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অব অফিসার, পুলিশ, বিজিবি, আনসার, এনএসআই, ডিজিএফআই, ডিবি ও কোস্টগার্ড, নির্বাচন পরিচালনার দায়িত্বে নিয়োজিত রিটার্নিং অফিসার ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তাসহ সব বাহিনীর প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

সিইসি, চার নির্বাচন কমিশনার আবদুল মোবারক, আবু হাফিজ, জাবেদ আলী, মো. শাহনেওয়াজ এবং ইসি সচিব মো. সিরাজুল ইসলাম ভোট পরিস্থিতি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মতামত নেন।

ঘোষিত তফসিল অনুসারে, আগামী ৩০ ডিসেম্বর ২৩৪টি পৌরসভায় ভোটগ্রহণ। এতে ১৯টি দল ও স্বতন্ত্র মিলিয়ে মেয়র পদে মোট ৯২৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। এছাড়া সাধারণ ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদে ১১ হাজার প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। মোট ৩ হাজার ৫৮২টি ভোটকেন্দ্রে ভোটগ্রহণ করা হবে। মোট ভোটার প্রায় ৭২ লাখ। ভোটগ্রহণে নিয়োজিত থাকবেন মোট ৬১ হাজার ১৪৩ জন কর্মকর্তা।


শেয়ার করুন