পরকালের জন্যও সঞ্চয় করুন

amol-400x267পরের জায়গা পরের জমিন/ঘর বানাইয়া আমি রই/ আমি তো সেই ঘরের মালিক নই। জনপ্রিয় এ সঙ্গীতটির মাধ্যমে আমরা নিশ্চয়ই অবগত হই পরকালীন জীবন সম্পর্কে। পরকালীন জীবন এবং কবর জীবন বিচ্ছিন্ন একটি জীবন। অবরুদ্ধ এ জীবনে দুনিয়ার সাথে যোগাযোগ করার কোনো ব্যবস্থা নেই। বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতার মাধ্যমে মঙ্গলগ্রহে যাওয়া সম্ভব হলেও কবর জীবনের খোঁজ খবর নিতে সবকিছুই ব্যর্থ।
দুনিয়ার অভাব পূরণের জন্য অগ্রিম নিশ্চয়তার ব্যবস্থা করা হয়। যেমন খাদ্যদ্রব্য মওজুদ করা, ব্যাংকে টাকা সঞ্চয়, বীমা, প্রভিডেন্ট ফান্ড, সার্ভিস বেনিফিটসহ আরো কত ব্যবস্থা আবিষ্কৃত হয়েছে। উদ্দেশ্য হচ্ছে, ভবিষ্যতের নিরাপত্তা ও নিশ্চয়তা বিধান করা। অনুরূপভাবে পরকালের, বিশেষ করে কবরের অভাব ও প্রয়োজন পূরণের জন্যও কিছু নিরাপত্তা নিশ্চয়তার ব্যবস্থা থাকা জরুরি। জীবদ্দশায় যদি কিছু ঘাটতি থেকে থাকে, তাহলে মৃত্যুর পর যাতে সে ঘাটতি পূরণের চেষ্টা করা সম্ভব হয়।
দুনিয়ার অর্থ-সম্পদ আমাদের মৃত্যু ও পরহেজগারিতাকে ভুলিয়ে রাখে। অথচ দুনিয়া ও অর্থ সম্পদ ক্ষণস্থায়ী। রাসুলুল্লাহ সা. সাহাবাদের বলেন, তোমাদের মধ্যে কে এমন আছে যার কাছে ওয়ারিসের সম্পদ নিজ সম্পদ অপেক্ষা বেশি প্রিয়? তাঁরা উত্তর দেন, আমাদের মধ্যে এমন কেউ নেই যার কাছে নিজ সম্পদ অপেক্ষা ওয়ারিসের সম্পদ অধিক প্রিয়। বরং নিজের সম্পদ ওয়ারিশের সম্পদ অপেক্ষাই বেশি প্রিয়। তখন নবী সা. বলেন, নিজ সম্পদ বলতে বুঝায় যা সে অগ্রিম পাঠিয়ে দিয়েছে। আর যে সম্পদ অবশিষ্ট তা তো ওয়ারিসের। (বুখারি)
এ হাদিসের মাধ্যমে প্রমাণিত হয়, মানুষ যতটুকু সম্পদ খরচ করে কিংবা আল্লাহর রাস্তায় ব্যয় করে, সে তো ততটুকুরই মালিক। আর যা রেখে যায় তা ওয়ারিসের। আমরা ওয়ারিসের জন্য কষ্ট করে অনেক সম্পদ রেখে যাচ্ছি কিন্তু নিজের বিদায়বেলাকে চরমভাবে অবহেলা করছি।
পরকালের সঞ্চয়ের ব্যাপারে রাসুলুল্লাহ সা. বলেন, আদম সন্তান ইন্তেকালের পর তার সকল আমল বন্ধ হয়ে যায়। মাত্র তিনটি আমলের সওয়াব জারি থাকে। সেগুলো হচ্ছে, ১. সদকাহ জারিয়াহ, ২. যে শিক্ষা দ্বারা উপকার সাধন করা যায় এবং ৩. নেক সন্তান, যারা মা-বাবার জন্য দোয়া করে। (মুসলিম)


শেয়ার করুন