পবিত্র কাবা সুরক্ষায় সেনা পাঠাতে প্রস্তুত আছি

Kaba-PM-Press-Conf-bg20160608174728সিটিএন ডেস্ক : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, সৌদি আরবের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের ধরন ও দিকমাত্রা পাল্টে গেছে। এখন আর স্রেফ শ্রমিক পাঠানোর মধ্যেই দুই দেশের সম্পর্ক আটকে নেই। এখন বাংলাদেশের সঙ্গে সৌদি আরবের সম্পর্ক বাণিজ্য-বিনিয়োগ দিয়ে নির্ধারিত। এখন সম্পর্ক দ্বি-পাক্ষিক সহযোগিতার।

পবিত্র কাবা সুরক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দিয়ে সহযোগিতা করতে বাংলাদেশ প্রস্তুত বলে জানিয়েছেন তিনি।
বুধবার (৮ জুন) দুপুরে সৌদি আরব, জাপান ও বুলগেরিয়া সফর নিয়ে গণভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে বক্তৃতা করছিলেন প্রধানমন্ত্রী।

এতে প্রথমেই তিনি সৌদি আরব সফর প্রসঙ্গে কথা বলেন। এসময় তিনি জানান সফর অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল।

তিনি বলেছেন, সফরে অনুষ্ঠিত বৈঠকে আলোচনায় সৌদি সরকার বাংলাদেশ থেকে দক্ষ-অদক্ষ বিভিন্ন পেশাজীবী শ্রমিক নেবে বলে জানিয়েছে। সৌদি ব্যবসায়ীরাও বাংলাদেশে বিনিয়োগের ব্যাপারে আগ্রহ দেখিয়েছেন।

শেখ হাসিনা বলেন, আমরা কেন শুধুই শ্রমিক পাঠাবো। শ্রমিকতো আমাদেরও লাগে। গ্রামে ধানকাটার মওসুম এলেই তা টের পাওয়া যায়।

গত ৩ জুন থেকে সৌদি আরব সফর করে মঙ্গলবার (৭ জুন) রাত ৮টার দিকে দেশে ফেরেন প্রধানমন্ত্রী। সৌদি বাদশাহ সালমান বিন আবদুল আজিজের বিশেষ আমন্ত্রণে এ সফর করেন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় পবিত্র ওমরাহ পালন ছাড়াও মদীনায় মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এর পবিত্র রওজা মোবারক জিয়ারত করেন তিনি।

সংবাদ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী জানান, অত্যন্ত ব্যস্ত সময় তার কেটেছে এই সফরে।

তিনি বলেন, সৌদি আরব থেকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আগ্রহ দেখানো হয়েছে। আমরা দক্ষ-আধাদক্ষ শ্রমিকের পাশাপাশি পেশাজীবি যেমন ডাক্তার ইঞ্জিনিয়ার, শিক্ষক নিয়োগের কথা বলেছি। আর তাতে আগ্রহ দেখিয়েছে দেশটির সরকার। এসময় দুই দেশের মধ্যে ফরেন অফিস কনসালটেশন বিষয়ক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়।

জেদ্দা চেম্বারের একটি ব্যবসায়ী প্রতিনিধি দল এবছরের পরের দিকে বাংলাদেশ সফর করে বিনিয়োগের সম্ভাবনা যাচাই করবে বলেও এই সফরকালে নিশ্চিত হয়।

বাংলাদেশে প্রতিটি জেলা উপজেলায় একটি করে মডেল মসজিদ নির্মাণ করার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়ার প্রস্তাবে সৌদি বাদশা সহযোগিতা দেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন বলেও জানান তিনি।

এই সফরে শ্রমিক রপ্তানির বিষয়ে সুনির্দিষ্ট কোনও সিদ্ধান্ত হয়েছে কিনা সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নে শেখ হাসিনা বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের বড় পরিবর্তন হয়েছে। আমরা বিনিয়োগ নিয়েই বেশি কথা বলেছি। তবে একই সঙ্গে আগে আকামা পরিবর্তনের সুযোগ ছিলো না, যা এখন সহজ হয়েছে যাতে সৌদি আরবে প্রবাসী বাংলাদেশিরা খুশি।

এছাড়া নারী শ্রমিক গেলে তার সঙ্গে পরিবারের একজন পুরুষ সদস্য বাবা কিংবা স্বামীও যেতে পারবেন। আর এখন আমরা শুধুই শ্রমিক পাঠাবো না। আমরা চিকিৎসক, প্রকৌশলী, শিক্ষকও পাঠাবো, বলেন তিনি।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা মুসলমানরা সৌদি আরবকে ভিন্নভাবে দেখি। সৌদি বাদশাহ মুসলমানদের প্রধান দুটি মসজিদের রক্ষক (কাস্টডিয়ান), এটার একটি বিশাল মর্যাদার দিক রয়েছে, বাংলাদেশ সে মর্যাদার স্থান থেকেই সৌদি আরবকে দেখে।

জঙ্গিবাদ দমনে সৌদি বাদশাহর ডাকে গঠিত জোটে সে কারণেই বাংলাদেশ রয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। সন্ত্রাস দমনের যেকোনও উদ্যোগের সঙ্গে বাংলাদেশ থাকবে, ঘোষণা দেন শেখ হাসিনা।

পবিত্র কাবা সুরক্ষায় বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দিয়ে সহযোগিতা করতে বাংলাদেশ প্রস্তুত বলে জানান তিনি। এরই মধ্যে এ লক্ষ্যে সেনা প্রধান সৌদি আরব ঘুরে এসেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানান প্রধানমন্ত্রী।

প্রধানমন্ত্রী এসময় আরও বলেন, আরব বসন্তের (স্প্রিং) নামে যারা আন্দোলন করেছেন তারা কোনও বসন্তের ফুল ফোটাতে পারেন নি। তারা স্রেফ রক্তের স্প্রিং (ঝর্ণা) ছুটিয়েছেন। সুতরাং সৌদি বাদশাহর ডাকে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে ৪০টি দেশ একজোট হয়েছে, বাংলাদেশ তার সঙ্গে রয়েছে।


শেয়ার করুন