‘পকেটে ইয়াবা দিয়ে’ মামলা, সাংবাদিকদের সড়ক অবরোধ

‘পকেটে ইয়াবা দিয়ে’ রাজধানীতে এক ফটো সাংবাদিককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে অভিযোগ এনে তার মুক্তির দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনের সড়কে দুই ঘণ্টার অবরোধ ও সমাবেশ করেছেন সাংবাদিকরা।

গত ২৭ জুন রাজধানীর শান্তিনগর থেকে আটকের পর কারাগারে আটক থাকা ফটো সাংবাদিক আশিক মোহাম্মদ ডেইলি অবজারভারের কর্মরত।

শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত তাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদ ও মুক্তির দাবিতে এ সড়ক অবরোধ ও সমাবেশে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন এবং ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির নেতারাসহ শতাধিক সাংবাদিক অংশ নেন।

এতে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম মহাসচিব পুলক ঘটক অভিযোগ করেন, কয়েকজন টহল পুলিশের সঙ্গে কথা কাটাকাটির জেরে আশিক মোহাম্মদকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়। পরে তার পকেটে ১০টি ইয়াবা দিয়ে মাদকের মামলা দেয়।

এর আগে কারাগারে থাকা আশিকের সঙ্গে কথা বলার পর পুলক ঘটক তার এক ফেইসবুক পোস্টে লেখেন, “গত ২৭ জুন (ঈদের পরদিন) রাত ১২টার পর টহল পুলিশের একটি দল শান্তিনগর কাঁচাবাজারের কাছে আশিকের মোটরসাইকেল থামায়। সেখানে তার সঙ্গে পুলিশের কথাবার্তা এবং তর্কবিতর্ক হয়। পুলিশ তার মোবাইল ফোন কেড়ে নেয় এবং মারধর করে ভ্যানে তোলে।”

পুলক আরও লেখেন, “বিভিন্ন জায়গায় ঘোরানোর পর রাত ২টার দিকে তাকে থানায় নিয়ে যায়। সেখানে আরেক দফা মারধর করলে তার নাকমুখ দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়। এরপর তাকে বলা হয় যে এক লাখ টাকা দিলে তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। নইলে মাদকের মামলার আসামি হিসেবে কোর্টে চালান দেওয়া হবে।
“আশিক বলে যে সে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত দিতে পারবে। এর বেশি দেওয়ার সামর্থ্য তার নেই। পরদিন আশিকের পকেটে ইয়াবা পাওয়া গেছে এই অভিযোগ তুলে তাকে আদালতে চালান করে পুলিশ।”

আশিক মোহাম্মদের বাবা ফরহাদ হোসেনও ফটো সাংবাদিকতায় যুক্ত ছিলেন। বর্তমানে অসুস্থতায় শয্যাশায়ী ফরহাদ হোসেন নিউ নেশন ও ডেইলি অবজারভারসহ বিভিন্ন পত্রিকায় ফটো সাংবাদিক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

বাবার মতো সাংবাদিকতা পেশায় আসা আশিককে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে সমাবেশের বক্তব্য অভিযোগ করেন ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের একাংশের সভাপতি শাবান মাহমুদ।

তিনি বলেন, “অবজারভারের সাংবাদিক ফরহাদ ভাইয়ের ছেলে ফটো সাংবাদিক আশিক মাহমুদকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাই।২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাকে মুক্তি না দিলে আমরা কঠোর কর্মসূচি দেব।”
আশিকের মুক্তির দাবিতে ইতোমধ্যে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী শনিবারও বেলা ১১টার দিকে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন করার পাশাপাশি পল্টন থানা ঘেরাওয়ের কর্মসূচি রয়েছে বলে জানান এই সাংবাদিক নেতা।

এর মধ্যে আশিকের মুক্তির ব্যবস্থা না হলে পরবর্তীতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ঘেরাওসহ পুলিশের সব ইতিবাচক খবর প্রকাশ থেকে সাংবাদিকরা বিরত থাকবে বলে হুঁমকি দেন ডিইউজে সভাপতি শাবান মাহমুদ।

সমাবেশে অন্যদের মধ্যে ডিইউজে একাংশের সাধারণ সম্পাদক সোহেল হায়দার চৌধুরী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন বাদশা এবং সাধারণ সম্পাদক মোরসালিন নোমানিসহ অন্যরা বক্তব্য দেন।

 


শেয়ার করুন