সেমিফাইনালে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ ভারত

আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে রবিবার রাতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ৮ উইকেটে হারিয়ে ‘বি’ গ্রুপ থেকে প্রথম দল হিসেবে সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে ভারত। ভারত গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় ‘এ’ গ্রুপের রানার-আপ হিসেবে বাংলাদেশ সেমিফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারতে।

এর আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত করেছে বাংলাদেশ। শুধু অপেক্ষায় ছিল প্রতিপক্ষের। এবার সেটাও নিশ্চিত হয়ে গেল।

ভারতের বিপক্ষে বাঁচা-মরার লড়াইয়ে গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচ জিতলে সেমিফাইনালের টিকিট মিলবে, এমন সমীকরণ সামনে রেখে মাঠে নামা প্রোটিয়ারা অলআউট হয়ে যায় মাত্র ১৯১ রানে। ভারতীয় বোলারদের তোপের মুখে ৪৪.৩ ওভারে গুটিয়ে যায় তারা। এর পর প্রত্যাশামতো খুব সহজেই ম্যাচটি হাতে চলে আসে ভারতের। বর্তমান চ্যাম্পিয়নদের জয়টা ৮ উইকেটের।

এর আগে লন্ডনের কেনিংটন ওভালে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। কিন্তু মাঝপথে ভেঙে পড়ে তাদের ব্যাটিং লাইনআপ। কুইন্টন ডিক কক, হাশিম আমলা ও ফাফ দু প্লেসিস যা একটু প্রতিরোধ গড়েছিলেন। বাকি সবাই ব্যস্ত ছিলেন আসা-যাওয়ায়।

সবচেয়ে অবাক করা বিষয় হলো দক্ষিণ আফ্রিকার তিন ব্যাটসম্যান ফিরেছেন রান আউট হয়েছে। যার মধ্যে আছে এবি ডি ভিলিয়ার্স ও ডেভিড মিলারের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট দুটি। দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ের সঙ্গে ভারতীয় বোলাররাও ছিলেন অসাধারণ। ভুবনেশ্বর কুমার ও জসপ্রিৎ বুমরাহ ২টি করে উইকেট নেন, রবিচন্দ্রন অশ্বিন ও রবীন্দ্র জাদেজা ১ উইকেট করে পান।

কেনিংটন ওভালে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা দক্ষিণ আফ্রিকার শুরুটা মন্দ ছিল না অবশ্য। উদ্বোধনী জুটিতে ডি কক-আমলা যোগ করেন ৭৬ রান। আমলা ৩৫ রান করে ফিরলেও ডি কক তুলে নেন হাফসেঞ্চুরি। তিন নম্বরে নেমে ফাফ দু প্লেসিসও করছিলেন সাবলীল ব্যাটিং। তবে ডি কক ৫৩ রান করে আউট হওয়ার পর ভেঙে পড়ে প্রোটিয়াদের ব্যাটিং লাইন।

ডি ভিলিয়ার্সের দুর্ভাগ্যজনক রান আউটে যার শুরু। ফর্মহীনতায় ভোগা প্রোটিয়া অধিনায়ক ফেরেন মাত্র ১৬ রান করে। খানিক পর মিলারও (১) প্যাভিলিয়নে ফেরেন রান আউট হয়ে। চাপ কাটিয়ে ওঠার চেষ্টা করা দু প্লেসিস (৩৬) ফিরে গেলে দক্ষিণ আফ্রিকার সব আশাই শেষ হয়ে যায়। এক প্রান্ত আগলে রেখে শেষ পর্যন্ত ২০ রানে অপরাজিত থাকা জেপি দুমিনিকে শুধু দেখতে হয়েছে উইকেট হারানোর দৃশ্য।

লক্ষ্যটা বড় ছিল না। তারপরও ২৩ রানে একমাত্র হোঁচট খায় ভারত। টানা ২ ম্যাচে হাফসেঞ্চুরি পাওয়া রোহিত শর্মা মাত্র ১২ রানে মরনে মরকেলের শিকার হন। এর পর দ্বিতীয় উইকেটে শিখর ধাওয়ান ও বিরাট কোহলির হাফসেঞ্চুরিতে সহজে জেতে ভারত। যদিও ধাওয়ান দলের সঙ্গে জয়ের বন্দরে ভিড়তে পারেননি। ৮৩ বলে ১২ চার ও ১ ছয়ে ৭৮ রানে ইমরান তাহিরের শিকার হন এ ওপেনার। ১২৮ রানের জুটি গড়েন তারা।

কোহলির সঙ্গে যুবরাজ সিং ক্রিজে থেকে দলকে জিতিয়ে মাঠ ছাড়েন। ১০১ বলে ৭৬ রানে অপরাজিত ছিলেন কোহলি, আর যুবরাজ টিকে ছিলেন ২৩ রানে। ৩৮ ওভারে ২ উইকেটে ১৯৩ রান করে গতবারের চ্যাম্পিয়নরা।

এ জয়ে ‘এ’ গ্রুপের চ্যাম্পিয়ন হয়ে সেমিফাইনালে উঠার দ্বারপ্রান্তে থাকল ভারত।

ওইদিন বার্মিহামে দ্বিতীয় সেমিফাইনালে ভারতের মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। সোমবার পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা মধ্যকার ম্যাচে কেউ যদি অস্বাভাবিক ভালো খেলে, তবেই ভারতকে টপকে গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হতে পারবে। সেক্ষেত্রে তাদের মধ্যে জয়ী দলটি বাংলাদেশের বিপক্ষে সেমিফাইনাল খেলবে।

শুক্রবার কিউইদের হারানোর পর অপেক্ষায় থাকতে হয়েছিল লাল-সবুজদের। শনিবার চ্যাম্পিয়নস ট্রফির গ্রুপ পর্বের ‘এ’ গ্রুপের শেষ ম্যাচে অস্ট্রেলিয়াকে ডাকওয়ার্থ লুইস পদ্ধতিতে ৪০ রানে হারায় ইংল্যান্ড। এর সুবাদে মাশরাফিদের সেমিফাইনাল নিশ্চিত হয়।

সেমিফাইনাল ম্যাচ নিয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় মাশরাফি বলেছেন, ‘দলের কেউই সেমিফাইনাল নিয়ে বাড়তি চিন্তা করছে না। আমরা প্রত্যেকটি ম্যাচ যেমন পরিকল্পনা নিয়ে খেলি, সেমিফাইনালও সেই পরিকল্পনা নিয়েই খেলব। জয়ের লক্ষ্যতো থাকবেই, তবে সেটা যেন চাপ তৈরি করতে না পারে সেইদিকে লক্ষ্য রাখা জরুরি।’


শেয়ার করুন