নারীর সম্মান রক্ষায় পুরুষের ভূমিকা

Mujta-nariসিটিএন ডেস্ক:
প্রত্যেক পুরুষের উচিৎ কোন ঘরে প্রবেশের আগে গৃহবাসীর অনুমতি নেয়া। এটা আল্লাহর একটি বিধান। আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন,‘ হে ঈমানদারগণ! নিজেদের ঘর ছাড়া অন্যের ঘরে প্রবেশ করো না যতক্ষণ না গৃহবাসীর সম্মতি লাভ করো এবং তাদেরকে সালাম করো। এটিই তোমাদের জন্য ভালো পদ্ধতি, আশা করা যায় তোমরা এদিকে নজর রাখবে। (সুরা নূর : ২৭)
এই আয়াত থেকে প্রথমত যে কথাটি বুঝে নিতে হবে সেটি হচ্ছে এই যে, আল্লাহর শরীয়ত কোন অসৎ কাজ নিছক হারাম করে দিয়ে অথবা তাকে অপরাধ গণ্য করে তার জন্য শাস্তি নির্ধারিত করে দেয়াই যথেষ্ট মনে করে না বরং যেসব কার্যকারণ কোন ব্যক্তিকে ঐ অসৎ কাজে লিপ্ত হতে উৎসাহিত করে অথবা তার জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে দেয় কিংবা তাকে তা করতে বাধ্য করে, সেগুলোকেও নিশ্চিহ্ন করে দেয়। তাছাড়া শরীয়ত অপরাধের সাথে সাথে অপরাধের কারণ, অপরাধের উদ্যোক্তা ও অপরাধের উপায়-উপকরণাদির ওপরও বিধি-নিষেধ আরোপ করে। এভাবে আসল অপরাধের ধারে কাছে পৌঁছার আগেই অনেক দূর থেকেই মানুষকে রুখে দেয়া হয়।
নবী করীমের (সা.) এর নিজের নিয়ম ছিল এই যে, যখন কারো বাড়িতে যেতেন, দরজার ঠিক সামনে কখনো দাঁড়াতেন না। কারণ সে যুগে ঘরের দরজায় পরদা লটকানো থাকতো না। তিনি দরজার ডান পাশে বা বাম পাশে দাঁড়িয়ে অনুমতি চাইতেন। (আবু দাউদ)
রসূলুল্লাহর (সা.) খাদেম হযরত আনাস বলেন, এক ব্যক্তি বাইরে থেকে রসূলের কামরার মধ্যে উঁকি দিলেন। রসূল (সা.) হাতে সে সময় একটি তীর ছিল। তিনি তার দিকে এমনভাবে এগিয়ে এলেন যেন তীরটি তার পেটে ঢুকিয়ে দেবেন। (আবু দাউদ)
কেবলমাত্র অন্যের গৃহে প্রবেশ করার সময় অনুমতি নেবার হুকুম দেয়া হয়নি। বরং নিজের মা-বোনদের কাছে যাবার সময়ও অনুমতি নিতে হবে। এক ব্যক্তি নবী (সা.) কে জিজ্ঞেস করলো, আমি কি আমার মায়ের কাছে যাবার সময়ও অনুমতি চাইবো? জবাব দিলেন, হ্যাঁ। সে বললো, আমি ছাড়া তাঁর সেবা করার আর কেউ নেই। এক্ষেত্রে কি আমি যতবার তাঁর কাছে যাবো প্রত্যেক বার অনুমতি নেবো? জবাব দিলেন,‘তুমি কি তোমার মাকে নগ্ন অবস্থায় দেখতে পছন্দ করবে?’(ইবনে কাসীর)
আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদের উক্তি হচ্ছে, ‘নিজেদের মা-বোনদের কাছে যাবার সময়ও অনুমতি নিয়ে যাও।’ বরং ইবনে মাসউদ তো বলেন, নিজের ঘরে নিজের স্ত্রীর কাছে যাবার সময়ও অন্ততপক্ষে গলা খাঁকারী দিয়ে যাওয়া উচিত। তাঁর স্ত্রী যয়নবের বর্ণনা হচ্ছে, হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ যখনই ঘরে আসতে থাকেন তখনই আগেই এমন কোন আওয়াজ করে দিতেন যাতেন তিনি আসছেন বলে জানা যেতো। তিনি হঠাৎ ঘরের মধ্যে এসে যাওয়া পছন্দ করতেন না। (ইবনে জারীর)


শেয়ার করুন