নারীরা সংসার রেখে ক্যারিয়ার গড়তে পারবে কি?

Dr.-Zakir-Naik_Newsshomoy1-400x250সিটিএন ডেস্ক:
সংসার রেখে নারীরা নিজের ক্যারিয়ার গড়তে পারবে কি? এমন প্রশ্নে উত্তরে বিশিষ্ট ইসলামি চিন্তাবীদ ডাক্তার জাকির নায়েক বলেন, একজন নারীকে অর্থনৈতিক সাবলম্বী হওয়ার জন্য কাজ করতেই হবেÑ এটা অবশ্যক না। পক্ষান্তরে একজন পুরুষকে অবশ্যই কাজ করতে হবে। কারণ স্ত্রী-সন্তানদের ভরণ-পোষণে দায়িত্ব পুরুষের ওপর, নারীর ওপর নয়। ইসলাম ধর্মে একজন নারীর বিয়ে হওয়ার আগে তার দায়িত্ব হলো তার বাবা ও ভাইয়ের ওপর। বিয়ের পর স্বামী এবং বৃদ্ধ বয়সে ছেলের ওপর। পুরুষরা নারীদের থাকা-খাওয়াসহ যাবতীয় খরচে ভার গ্রহণ করবেন। তাই একজন নারীর জন্য কাজ করা আবশ্যক নয়। তবে নিজের ইচ্ছায় করতে চাইলে করতে পারে। না করতে চাইলে, স্বামী জোড় করতে পারবেন না।
অবশ্য নারীর কর্মক্ষেত্র হতে হবে ইসলামি বিধান মেনে, ভদ্রতা বজায় রেখে। নারীরা হিজাব পরে অফিস করবে। নারী-পুরুষ আলাদা আলাদা থাকবে। একসঙ্গে কাজ করবে না। যেমন কোনো পুরুষ বসের ব্যক্তিগত সচিব (পিএস) হলো একজন নারী। বস আলাদা ঘরে থাকেÑ আর নারী পিএস তার পাশে বসে কাজ করে। এটা বৈধ হবে না। নবীজি সা. বলেছেন, গাইরে মাহরাম (যার সঙ্গে বিয়ে বৈধ) পুরুষ আর মহিলা কোনো ঘরে একা থাকলে সে ঘরে তৃতীয়জন হলো শয়তান। তখন তাদের মাঝে কী হতে পারেÑ সেটা আপনারা ভালো জানেন। হয়তো বস পিএসকে বলবে, ‘তুমি আর কিছুক্ষণ থাক, আরও কিছু কাজ আছে।’ তারপর যা ঘটার তাই ঘটবে। আর এমনটা হওয়াই স্বাভাবিক। কারণ, একসঙ্গে থাকলে একবার, দু’বার, তিনবার ঠিক থাকলেও চারবারের সময় কিছু একটা হতেই পারে! সে জন্যে ইসলাম বলে কাজের জায়গা আলাদা। তারা কাজ করবে হিজাব পরে। অবশ্য আলাদা মানে এই না যে, অফিসে নারী পুরুষ পরস্পর কথা বলতে পারবে না। প্রয়োজন হলে কথা বলবে। তবে কোনো আবদ্ধ ঘরে না, অপ্রয়োজনেও না। অতএব বুঝা গেলÑ মেয়েরা কাজ করতে পারে, তবে ইসলামি বিধান মেনে। এর বাইরে যাবে না।
এর পেছনের কারণ হলোÑ তারা যেহেতু নারীÑ তাদের প্রধান দায়িত্ব সংসারে মা হিসাবে থাকা, স্ত্রী হিসাবে থাকা। এ দায়িত্ব ছেড়ে দেয়া মানে পরিবারকে অবহেলা করা। এতেকরে সে নিজেই তার শ্রেষ্ঠত্ব হারাবে। কারণ নারী ‘মা’ হওয়ার কারণে যে সম্মান পায়, সেটা অনেক বড়। সেজন্যেই নবীজি সা. বলেছেন, ‘মায়ের পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত’। সহিহ বুখারিতে উল্লেখ আছেÑ এক ব্যক্তি নবীজি সা.কে জিজ্ঞাসা করল, সবচে’ বেশি ভালোবাসা পাওয়া কার প্রাপ্য? নবীজি সা. বললেন, তোমার মা। লোকটি আবারও জিজ্ঞাসা করল, তারপর কে? নবীজি সা. বললেন, তোমার মা। লোকটি দ্বিতীয়বার জিজ্ঞাস করল, তারপর কে? নবীজি সা. বললেন, তোমার মা। লোকটি আবারও জিজ্ঞাসা করল, তারপর কে? নবীজি সা. বললেন, তোমার বাবা। তার মানে চার ভাগের তিন ভাগ ভালোবাসা পাবেন মা, আর মাত্র এক ভাগ ভালোবাসা পাবেন বাবা। আর কোনো নারী যদি এই সম্মান ত্যাগ করে ক্যারিয়ারের জন্য ছুটে, সেটা তার ব্যাপার। ক্যারিয়ার পৃথিবীর জন্য খুব ভালো (হালাল ক্যারিয়ারের কথা বলছি, হারাম ক্যারিয়ার নয়)। তবে ক্যারিয়ারে ভালোর জন্য মা ও দায়িত্বশীল স্ত্রী হওয়ার শ্রেষ্ঠত্ব হারাতে চাইলে এটাও নারীর একান্ত ব্যাপার। তবে এটাও সত্যÑ মানুষ চাইলেই কিছু হতে পারে না। যেমন আমরা পুরুষরা চাইলেই ‘মা’ হতে পারবো না। নারীরা সেটা হতে পারে। কিন্তু তারা যদি সেই সুযোগ না নিয়ে ক্যারিয়ারের পিছনে হাঁটতে চান, আর স্বামীর বড় কোনো আপত্তি না থাকে, তাহলে করতে পারবে কিন্তু ইসলামি বিধানের গন্ডির ভেতরে থেকে করতে হবে।
সূত্র : ইউটিউব থেকে


শেয়ার করুন