নাফ নদীতে মা-মেয়ের লাশ, নিখোঁজ ৪ শিশু

টেকনাফ প্রতিনিধি :

নাফনদীতে ঈদের দিন ২ সেপ্টেম্বর আবারও নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছে। এতে মা ও মেয়ে নিহত হন। এছাড়া এ নৌকা ডুবির ঘটনায় ৪ জন শিশু নিখোঁজ রয়েছে। নৌকা ডুবির ঘটনায় ১ জন মুমুর্ষ ও অজ্ঞান শিশুকে কুতুপালং এনজিও পরিচালিত হাসপাতালে ভর্তি এবং নিহত মা-মেয়ের লাশ হোয়াইক্যং দাফন করা হয়েছে।

ঈদের দিন শনিবার ২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় হোয়াইক্যং বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন নাফ নদীর পারে নৌকা ডুবির ঘটনায় নিহত স্ত্রী ও মেয়ের লাশসহ আসা মিয়ানমারের মংডু থানাধীন মাংগালার প’খালী গ্রামের সৈয়দ উল্লাহ (৬৩) জানান সকাল ১০টার দিকে ২টি নৌকায় করে ২৮ জন রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ-শিশু বাংলাদেশের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দেয়। কুমিরখালী অতিক্রম করার পর ২১ জন রোহিঙ্গা বোঝাই নৌকাটি ডুবে যায়। খোঁজাখুজির পর স্ত্রী ফাতেমা খাতুন (৬০) এবং মেয়ে মিনারা আক্তারের (২২) মৃত দেহ পাওয়া গেলেও সাথে থাকা নিকট আতœীয় অপর ৪ জন শিশু পাওয়া যায়নি। নিখোঁজ ৪ জন শিশুর মধ্যে ৩ জনই একই পরিবারের। এরা হলেন মৃত রমজান হাকিমের পুত্র মোঃ তুহাদ (৮), আসমত আরা (৬), জরিদা বেগম (৪)। নিখোঁজ অপর ১ জন হলেন নুরুল ইসলামের পুত্র নুর কাবা (৫)। এ ঘটনায় মুমুর্ষ ও অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে সাথে নিয়ে আসা মৃত ফজল হাকিমের শিশু কন্যা সুফাইরা বেগমকে (৮) কুতুপালং এনজিও পরিচালিত হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

২ সেপ্টেম্বর সন্ধ্যায় ২টি মৃত দেহ এবং ১ জন মুমুর্ষ ও অজ্ঞান শিশু নিয়ে রোহিঙ্গার দলটি টেকনাফ উপজেলার হোয়াইক্যং বিজিবি ক্যাম্প সংলগ্ন নাফ নদীর পারে পৌঁছলে স্থানীয় লোকজন বিজিবি ও পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে পুলিশ ও বিজিবি পৌঁছে এদের উদ্ধার করে স্থানীয় ইউপি সদস্য সিরাজুল মোস্তফা লালু চৌধুরীর নিকট হস্তান্তর করেন। হোয়াইক্যং পুলিশ ফাঁড়ির আইসি উপ-পুলিশ পরিদর্শক মোহাম্মদ মহির উদ্দিন খান উর্ধতন কতৃপক্ষের নির্দেশক্রমে পুলিশ বিজিবি স্থানীয় মেম্বার ও গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গের উপস্থিতিতে মা-মেয়ের লাশ দাফন করা হয়েছে। ধারণ ক্ষমতার চেয়ে বেশী রোহিঙ্গা বোঝাই করার কারণে নৌকা ডুবির ঘটনা ঘটেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

রোহিঙ্গারা জানান, ঈদের দিনও তাঁদের এলাকায় মিয়ানমারের সেনাবাহিনীর হামলা শুরু হলে তড়িঘড়ি করে ঈদুল আযহার নামাজ পড়ে নৌকা যোগে এপারে আসার জন্য রওয়ানা হন। নাফ নদী হয়ে আসা কুমিরখালী স্থানে পৌঁছলে ডুবে যায় নৌকাটি। সারাদিন কষ্টে করে ওই মা মেয়ের মৃত দেহ পেলেও ৪ জনকে পাওয়া যায়নি।


শেয়ার করুন