নাইকো দুর্নীতি : কাল আত্মসমর্পণ করছেন খালেদা

2015_09_10_14_37_44_qrIMPo4OispFrN2PTjDcvPPIdz6cxv_originalসিটিএন ডেস্ক :

দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) নাইকো দুর্নীতি মামলা বাতিল চেয়ে করা খালেদা জিয়ার আবেদন খারিজ করে হাইকোর্টের দেয়া আদেশে আগামীকাল সোমবার আদালতে আত্মসমর্পণ করবেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া।

বাংলামেইলকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন এ মামলায় খালেদা জিয়ার অন্যতম আইনজীবী অ্যাডভোকেট জয়নুল আবেদীন মেজবাহ।

এদিকে, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা, সুপ্রিম কোর্ট বারের সভাপতি অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, উচ্চ আদালতের আদেশের প্রতি সম্মান জানিয়ে আগামীকাল নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণ করতে যাবেন খালেদা জিয়া।

তিনি বলেন, ‘আশা করছি, খালেদা জিয়ার আদালতে হাজির হওয়া উপলক্ষে সরকার নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে। তিনি তিন বারের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। এ জন্য আমরা নিরাপত্তার বিষয়ে সরকারের কাছে আবেদন করব না।’

রোববার দুপুর সাড়ে ১২টায় সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতির কক্ষে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। এ সময় বারের সম্পাদক ও দলের যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, ঢাকা বারের সাবেক সভাপতি ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা সানাউল্লাহ মিয়া উপস্থিত ছিলেন।

খালেদার আদালতে উপস্থিত হওয়া উপলক্ষে গণজমায়েতের ব্যবস্থা করবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে মাহবুব বলেন, ‘আমাদের এ রকম পরিকল্পনা নেই। তবে আগামীকাল খালেদা জিয়া আদালতে যাচ্ছেন, খবরটি মিডিয়ায় দেখে নেতাকর্মীরা উপস্থিত হবেন।’

গত ১৮ জুন নাইকো মামলার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে দায়ের করা আবেদনের নিষ্পত্তি করে হাইকোর্ট তার রায়ে বলেছিলেন, এ মামলার কার্যক্রম নিম্ন আদালতে চলবে এবং রায়ের অনুলিপি হাতে পাওয়ার দু’মাসের মধ্যে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে হবে।

বিচারপতি মো. নূরুজ্জামান ও বিচারপতি জাফর আহমেদের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন।

গত ২৯ সেপ্টেম্বর হাইকোর্টের ওই রায়ের কপি ঢাকার ৯ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে এসে পৌঁছালে পরদিন ওই আদালতের বিচারক ৩০ নভেম্বর মামলাটির পরবর্তী তারিখ নির্ধারণ করেন।

প্রসঙ্গত, ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে এ মামলা দারে করা হয়। যেখানে বলা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী থাকা অবস্থায় বেগম জিয়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে ১৩ হাজার ৭৭৭ কোটি টাকা রাষ্ট্রের ক্ষতি করেছেন ।

এ মামলায় ২০০৮ সালের ৫ মে খালেদা জিয়াসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। এতে রাষ্ট্রের প্রায় ১৩ হাজার ৭শ ৭৭ কোটি টাকার ক্ষতি করার অভিযোগ আনা হয়।

পরে এ মামলা বাতিল চেয়ে খালেদা জিয়ার করা আবেদনে ২০০৮ মালের ৯ জুলাই খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে নাইকো দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম স্থগিত করেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রুল জারি করেন। এ রুলের উপর হাইকোর্টে গত ১৯ এপ্রিল শুনানি শুরু হয়ে শেষ হয় ২৮ মে। এরপর আদালত রায়ের জন্য অপেক্ষমান রাখেন। এরপর ১৮ জুন রুল খারিজ করে রায় ঘোষণা করেন হাইকোর্ট।

খালেদা জিয়া ছাড়া এ মামলার অপর আসামিরা হলেন সাবেক আইনমন্ত্রী ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী এ কে এম মোশাররফ হোসেন, সে সময়কার প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব কামাল উদ্দিন সিদ্দিকী, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সচিব খন্দকার শহীদুল ইসলাম, সাবেক সিনিয়র সহকারী সচিব সি এম ইউছুফ হোসাইন, বাপেক্সের সাবেক মহাব্যবস্থাপক মীর ময়নুল হক, বাপেক্সের সাবেক সচিব মো. শফিউর রহমান, গিয়াস উদ্দিন আল মামুন, ঢাকা ক্লাবের সাবেক সভাপতি সেলিম ভূঁইয়া এবং নাইকোর দক্ষিণ এশিয়া বিষয়ক ভাইস প্রেসিডেন্ট কাশেম শরীফ।

এদের মধ্যে সেলিম ভুঁইয়া নাইকোর কাছ থেকে কাশেম শরীফের মাধ্যমে তিন কোটি টাকা ঘুষ নেয়ার কথা স্বীকার করেন। সে সময় সাবেক প্রতিমন্ত্রী একেএম মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে নাইকোর কাছ থেকে একটি গাড়ি উপহার নেয়ার অভিযোগ উঠেছিল।


শেয়ার করুন