দ্বিতীয় দফায় বৃষ্টির হানা

2016_03_13_22_06_55_FJZkEYKqytwQpLwB34k4kbCiGk7kNE_800xautoধর্মশালায় বৃষ্টি বাধা উপেক্ষা করে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় মাঠে গড়ায় বাংলাদেশ ও ওমানের মধ্যকার ম্যাচ। রোববার হিমাচল প্রদেশ ক্রিকেট এসোসিয়েশন স্টেডিয়ামে টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ। তামিম ইকবালের সেঞ্চুরিতে ভর করে ২ উইকেটে ১৮০ রানের পুঁজি সংগ্রহ করে মাশরাফি বিন মুর্তজার দল।

১৮১ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে ব্যাট করতে নেমে শুরুটা ভালো হয়নি ওমানের। দলীয় ১ রানের মাথায় জিসান মাকসুদের (০) উইকেটটি হারিয়ে চাপে পড়ে মধ্যপ্রাচ্যের দলটি। তাসকিন আহমেদের বলে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে ক্যাচ তুলে দেন জিসান।

এই চাপ সামলে উঠতে না উঠতেই ফের ধাক্কা খায় ওমান। দলের আরেক ওপেনার খাওয়ার আলিও পথ ধরেন প্যাভিলিয়নের। তাকে এই পথ বাতলে দেন বাংলাদেশি বোলার আল-আমিন হোসেন। খাওয়ার আলিকে টাইগার দলপতি মাশরাফির তালুবন্দী করান আল-আমিন।

৭ ওভার যেতে না যেতেই ম্যাচটিতে বাগড়া বসাল বেরসিক বৃষ্টি। কিছুক্ষণ পর খেলা শুরু হলে বিশ্বকাপের মূলপর্বে যেতে বৃষ্টি আইনে ১৬ ওভারে ১৫২ রান দরকার হয় ওমানের। এক ওভার পর অর্থাৎ ওমানের ৮ ওভার পার হতেই দ্বিতীয় দফায় বৃষ্টি হানায় দেয় ম্যাচে। ধর্মশালায় বৃষ্টি নাটক চলছে অবিরত।

এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ওমানের সংগ্রহ ৮ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ৪৪ রান।

এর আগে টস নামক ভাগ্য পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন ওমানের অধিনায়ক সুলতান আহমেদ। টসে জিতে প্রথমে বোলিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তাই টসে হেরে প্রথমে ব্যাট করতে নামে বাংলাদেশ। বাঁচা-মরার ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে সাবধানেই পা ফেলেন টাইগাররা। তাই তাদের শুরুটাও ছিল কচ্ছপ গতির!

প্রথম ৬ ওভারে মাত্র ২৯ রান দলের স্কোরশিটে যোগ করেন সৌম্য সরকার ও তামিম ইকবাল। পরের ওভারেই অবশ্য সাজঘরের পথ ধরেন সৌম্য। ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে গিয়ে বলের লাইন মিস হয় তার। দলীয় ৪২ রানের মাথায় অজয় লালচেতার শিকারে পরিণত হন সৌম্য। ২২ বল খেলে ২টি চারে করেছেন মোটে ১২ রান। স্ট্রাইক রেট ৫৪.৫৪! টি২০ ক্রিকেটে বড্ড বেমানানই বটে।

এদিন তামিম ইকবাল বোঝালেন ফর্ম কাকে বলে? দুর্দান্ত ফর্মে থাকা এই ব্যাটসম্যানের ব্যাটে ছুটছে রানের ফোয়ারা। বিশ্বকাপের বাছাইপর্বে সেই ধারাবাহিকতা অব্যাহত রেখেছেন বাংলাদেশের ড্যাশিং ওপেনার। বাছাইপর্বের ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে ফিফটি আদায় করে নিলেন তিনি। ম্যাচের ১৩তম ওভারে ওমানের বোলার আমির আলির বলে বাউন্ডারি হাঁকিয়ে ৩৫ বলে অর্ধশতক পূর্ণ করেন তামিম। ফিফটি করার পথে ৭টি চার ও একটি ছক্কা মারেন তিনি। এটা তামিমের টি-২০ ক্যারিয়ারের পঞ্চম ফিফটি।

এর আগের ম্যাচেই অবশ্য ফিফটি করতে পারতেন তামিম। কিন্তু ২৬ বলে ৪৭ রান করে আউট হয়েছিলেন তিনি। সাজঘরে ফেরেন ৩ রানের আক্ষেপ নিয়ে। পরের ম্যাচে ওমানের বিপক্ষে সেই আক্ষেপ ঘোঁচালেন বাংলাদেশের সেরা এই ওপেনার। শেষ পর্যন্ত ওমানের বোলারদের কাছে হার মানেননি তামিম। বাংলাদেশের পক্ষে টি২০তে প্রথম সেঞ্চুরি করার কীর্তি গড়েন তিনি। ৬৩ বলে ১০টি চার ও ৫টি ছক্কায় করেন ১০৩* রান। যা বাংলাদেশের পক্ষে টি-২০তে ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ রানের ইনিংস।

সাকিবও হাজারের মাইলফলক ছোঁয়ার কাছাকাছি গিয়েছিলেন। ৯৯৬ রানে আটকে রইলেন তিনি। মাঠ ছাড়লেন ৪ রানের আক্ষেপ নিয়ে। শেষ পর্যন্ত ওমানের বিপক্ষে ৯ বলে দুটি চার ও একটি ছক্কায় ১৭ রান নিয়ে অপরাজিত ছিলেন বিশ্বসেরা এই অলরাউন্ডার।

এদিকে সাব্বির রহমান রুম্মানও বেশ ভালোই খেলছিলেন। কিন্তু আনোয়ার আলির হয়তো সেটা সহ্য হলো না। ওমানের বোলারের রহস্যময় ডেলিভারিতে কুপোকাত হলেন সাব্বির। তার আগে আম্পায়ার চেক করেন, নো বল হয়নি। বল ঘুরে গিয়ে লাগে স্টাম্পে। অনেক ক্ষণ বেলটা পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত আউট হন সাব্বির। তার আগেই বাংলাদেশের স্কোরশিটে ১৩৯ রান যোগ হয়।

বাংলাদেশ একাদশ : তামিম ইকবাল, সৌম্য সরকার, সাব্বির রহমান রুম্মান, মুশফিকুর রহিম, সাকিব আল হাসান, মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ মিঠুন, মাশরাফি বিন মুর্তজা (অধিনায়ক), আল-আমিন হোসেন, আবু হায়দার রনি ও তাসকিন আহমেদ।

ওমানের একাদশ: জিসান মাকসুদ, খাওয়ার আলি, যতীন্দর সিং, আদনান ইলিয়াস, আমির কালিম, সুলতান আহমেদ (অধিনায়ক), মেহরান খান, আমির আলি, অজয় লালচেতা, মুনিশ আনসারী ও বিলাল খান।


শেয়ার করুন