দেশে করোনায় আরও ৪৫ মৃত্যু, সর্বোচ্চ সংক্রমণের রেকর্ড

সিটিএন ডেস্কঃ 

করোনায় লণ্ডভণ্ড সারাবিশ্ব। প্রাণঘাতী ভাইরাসটিতে আক্রান্ত হয়ে সারাবিশ্বে প্রতিদিন হাজারো মানুষের মৃত্যু হচ্ছে। আক্রান্ত হচ্ছেন লাখ লাখ মানুষ। বাংলাদেশেও তাণ্ডব চালাচ্ছে প্রাণঘাতী ভাইরাসটি। দীর্ঘদিন তাণ্ডব চালানোর পর টানা কয়েকমাস করোনার প্রকোপ কিছুটা কমলেও ফের হঠাৎ করেই বেড়ে গেছে ভাইরাসটিতে সংক্রমণ ও মৃত্যু। কিছুদিন ধরে দেশে করোনা রোগী শনাক্তের হার উদ্বেগজনকভাবে বেড়েছে।

সবশেষ গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে নতুন করে আরও ৪৫ জনের মৃত্যু হয়েছে অচেনা ভাইরাসটিতে। এছাড়া নতুন করে করোনা শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ১৮১ জনের দেহে, যা বাংলাদেশে এ পর্যন্ত একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত। এর আগে গত বছরের ২ জুলাই দেশে করোনা শনাক্ত হয়েছিল ৪ হাজার ১৯ জনের শরীরে। এতদিন এটিই ছিল দেশে করোনায় একদিনে সর্বোচ্চ শনাক্ত।

সোমবার বিকালে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়েছে।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে পাঁচ হাজার ১৮১ জন নতুন রোগী শনাক্ত হয়েছে। আগের সাত দিনে দেশে যথাক্রমে ৩৯০৮, ৩৬৭৪, ৩৭৩৭, ৩৫৮৭, ৩৫৬৭, ৩৫৫৪ ও ২৮০৯ জন রোগী শনাক্ত হয়।

সর্বশেষ তথ্য অনুসারে দেশে নভেল করোনাভাইরাসে মোট আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ছয় লাখ ৮৯৫ জনে।

একই সময়ে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত আরও আরও ৪৫ জনের মৃত্যু হওয়ায় ভাইরাসটিতে মোট মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল আট হাজার ৯৪৯ জনে।

গত ২৪ ঘণ্টায় মারা যাওয়া ৪৫ জনের মধ্যে ৩০ জন পুরুষ, বাকি ১৫ জন নারী। এ মধ্যে হাসপাতালে ৪৪ অন্যজন বাড়িতে মারা গেছেন। এ পর্যন্ত মোট মারা যাওয়া আট হাজার ৯৪৯ জনের মধ্যে পুরুষ ছয় হাজার ৭৪৬ জন, বাকি দুই হাজার ২০৩ জন নারী।

বয়সভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, মারা যাওয়া ৪৫ জনের মধ্যে ষাটোর্ধ্ব ২৭ জন, ৫১ থেকে ৬০ বছরের আট, ৪১ থেকে ৫০ বছরের চার, ৩১ থেকে ৪০ বছর পাঁচ এবং ২১ থেকে ৩০ বছর বয়সী একজন রয়েছেন।

বিভাগভিত্তিক বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ঢাকা বিভাগে ২৮, চট্টগ্রামে ছয়, রাজশাহীতে পাঁচ, খুলনায় তিন এবং বরিশাল, সিলেট ও রংপুরে একজন করে মারা গেছেন।

গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মোট ২৮ হাজার ১৯৫টি নমুনা পরীক্ষা করা হয়েছে। আর পরীক্ষাকৃত এসব নমুনার ১৮ দশমিক ৩৮ শতাংশের মধ্যে করোনা ভাইরাসের উপস্থিতি পাওয়া গেছে।

একই সময়ে আরও দুই হাজার ৭৭ জন করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন। এ নিয়ে মোট ৫ লাখ ৩৮ হাজার ১৮ জন করোনা থেকে সুস্থ হয়েছেন।

২০১৯ সালের শেষ দিকে চীনের উহানে প্রথম করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ধরা পড়ে। গত বছরের ৮ মার্চ দেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্তের ঘোষণা আসে। দেশে প্রথম করোনায় সংক্রমিত ব্যক্তির মৃত্যুর ঘোষণা আসে ১৮ মার্চ।

দেশে করোনা সংক্রমণ শুরুর দিকে রোগী শনাক্তের হার কম ছিল। গত মে মাসের মাঝামাঝি থেকে সংক্রমণ বাড়তে শুরু করে। মে মাসের শেষ সপ্তাহ থেকে আগস্টের তৃতীয় সপ্তাহ পর্যন্ত রোগী শনাক্তের হার ২০ শতাংশের ওপরে ছিল। এরপর থেকে নতুন রোগীর পাশাপাশি শনাক্তের হারও কমতে শুরু করেছিল। মাস দুয়েক সংক্রমণ নিম্নমুখী থাকার পর গত নভেম্বরের শুরুর দিক থেকে নতুন রোগী ও শনাক্তের হারে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা শুরু হয়। ডিসেম্বর থেকে সংক্রমণ আবার কমতে শুরু করে। তবে পাঁচ সপ্তাহ ধরে সংক্রমণ আবার ঊর্ধ্বমুখী।

করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে গত ২৭ জানুয়ারি দেশে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হয়। এদিন গণভবন থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভার্চ্যুয়ালি টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন। ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে দেশে গণটিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়।


শেয়ার করুন