দেশজুড়ে অস্ত্রের ঝনঝনানি : এত অস্ত্রের জোগান দিচ্ছে কারা

1457548485সিটিএন ডেস্ক

ছিনতাই, লুটপাট, আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ কোন্দল সব জায়গায় অস্ত্রের ঝনঝনানি। কোথা থেকে আসে এত অস্ত্রের জোগান? আগে বিরোধী দলের হরতাল কর্মসূচিতে ককটেল ফাটানো হচ্ছে বলে যে প্রচার–প্রচারনা ছিল। এখন সেই একই ককটেল, বোমা ব্যবহৃত হচ্ছে বিভিন্ন অপরাধে। এসব অপরাধের অধিকাংশই ঘটছে আইনশৃঙ্খলাবাহিনীর নাকের ডগায়। ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই অস্ত্র ও গোলাবারুদের এই ভয়াবহ ব্যবহার। আর এর সিংহভাগ ঘটনার সঙ্গে জড়িত রয়েছে সরকার সমর্থকরা। নির্বাচনী সহিংসতায় ক্ষমতাসীন দলের কর্মী-সমর্থকরা প্রকাশ্যেই আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার করছে। এতে হতাহতের ঘটনাও ঘটছে ব্যাপকহারে। নির্বাচনী সহিংসতার বাইরেও ডাকাতি, ছিনতাই ও চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধ কর্মকান্ডে ব্যবহৃত হচ্ছে আগ্নেয়াস্ত্র।

গত ৮ মার্চ আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গ সংগঠনের কর্মীদের মধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় একজন নিহত ও শতাধিক আহত হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে অন্তত ১৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার বড়শালঘর ইউপিতের আওয়ামী লীগ মনোনীত চেয়ারম্যান প্রার্থী জহিরুল ইসলাম এবং দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ইউনুছ মাস্টারের কর্মী-সমর্থকদের সংঘর্ষ ও ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। গত সোমবার গভীর রাতে ঘটনার সূত্রপাত হয়ে মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত ওই এলাকায় দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ভাংচুর অব্যাহত ছিল।

পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থীর উঠান বৈঠকে বিদ্রোহী প্রার্থীর সমর্থকদের হামলায় ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি আশরাফ ফকির (৩৫) নিহত হয়েছেন। এ ঘটনার আহত হয়েছে আরও কমপক্ষে ৫ জন। ৭ মার্চ রাত ১১টার দিকে উপজেলার আদাবাড়িয়া ইউনিয়নে এ ঘটনা ঘটে।

বগুড়ার শাজাহানপুর উপজেলায় পুলিশের উপর যুবলীগ নেতাকর্মীদের ককটেল হামলায় ৪ পুলিশ আহত হয়েছেন। এসময় পুলিশ এক যুবলীগ নেতার পায়ে গুলি করে তাকে গ্রেফতার করেছে।

ঢাকার সাভার উপজেলার নামা গেন্ডা এলাকায় ঝুট ব্যবসাকে কেন্দ্র করে গোয়েন্দা পুলিশ সঙ্গে সন্ত্রাসীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এসময় পুলিশ বেশ কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। এ ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশের এসআই জিল্লুর রহমানসহ প্রায় ১০ জন আহত হয়েছেন।

পুলিশ জানায়, নামা গেন্ডায় ডাইনামিক সোয়েটার নামের একটি পোশাক কারখানায় ঝুট ব্যবসা নিয়ে দু’দল মাস্তানের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এসময় ডিবি পুলিশের এসআই জিল্লুর এগিয়ে গেলের সন্ত্রাসীরা তাকেসহ ১০ জনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। স্থানীয় সূত্র জানায়, এসময় বেশ কয়েক রাউন্ড গুলির শব্দ শুনেছেন তারা।

কক্সবাজারের মহেশখালী উপজেলার বড় মহেশখালীতে আওয়ামী লীগের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে ৭ মার্চ রাতে হামলা ও গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ২০ জন আহত হয়েছেন।
প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও নির্বাচনী সহিংসতায় আগ্নেয়াস্ত্রের ব্যবহার লক্ষ্ করা যাচ্ছে। কয়েকদিন ধরে এই অবস্থা ভয়াবহ রূপ ধারণ করেছে। র্যাথবের অভিযানে প্রায় প্রতিদিনই দেশের কোথাও না কোথাও থেকে আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারের ঘটনা ঘটছে। নির্বাচনকে কেন্দ্র করেও অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধারে ইতিমধ্যে র্যা বের নির্দেশনা মাঠ পর্যায়ে পৌছেছে।

র্যা বের মিডিয়া উইংয়ের প্রধান মুফতি মাহমুদ খান গতরাতে বলেন, অবৈধ আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার চলমান একটি প্রক্রিয়া। র্যাওবের এই অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তিনি বলেন, এরপরেও কোন উপলক্ষ্যকে কেন্দ্র করে অপরাধীদের দৌরাত্ম্য যেভাবে বাড়ে, তেমনি অপরাধীদের নিয়ন্ত্রণে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও সক্রিয় থাকে।

তিনি বলেন, নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অপরাধীরা যাতে অস্ত্রবাজি করতে না পারে সেজন্য র্যা বের প্রতিটি ইউনিটে ইতিমধ্যেই নির্দেশনা চলে গেছে। যাকে যে অবস্থায় পাওয়া যাবে সে অবস্থায় আইনী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। – সূত্র: বিডি সংবাদ


শেয়ার করুন