এস এম আরোজ ফারুক, শাহপরীর দ্বীপ থেকে ফিরে:
শুষ্ক মৌসুমে যাতায়াত ভোগান্তী ও বর্ষায় পানিতে ডুবে থাকে শাহপরীর দ্বীপ, এভাবেই কষ্টসাধ্য জীবন অতিবাহীত করছেন ঐ এলাকার হাজারো মানুষ। বেড়ি বাধঁ নির্মাণ না হওয়ার কারণে এমন ভোগান্তী পোহাচ্ছেন দ্বীপটির মানুষ। কক্সবাজার টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের তিন বছরেও বেড়ি বাধঁ নির্মাণ হয়নি। এতে প্রতি বছর বর্ষা মৌসুমে ৪০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে জীবন যাপন করছেন। ১৯৯১ সালের পর থেকে ২০১১ সাল পর্যন্ত শাহপরীর দ্বীপের ৬৮ নাম্বার পোল্ডারের প্রায় শত কোটি টাকা ব্যয় করার পরও ঠিকাদারী প্রতিষ্টানগুলো দূর্নীতির মাধ্যমে কাজ হওয়ায় জোয়ারের তোড়ে ভেঙে গেছে। ২০১২ সালের ২২ জুলাই থেকে ৪০হাজার মানুষকে ভোগান্তী পোহাতে হচ্ছে বাধঁ না থাকার কারণে। বর্ষা মৌসুমে জোয়ারের পানিতে এই এলাকার ঘরবাড়ি, রাস্তা-ঘাট, ফসলি জমি কোমড় সমান পানিতে থাকে।
সরেজমিনে দেখা যায়, টেকনাথ থেকে শাহপরীর দ্বীপ যাওয়ার প্রায় ১৪ কি.মি. রাস্তা পুরোটাই কাঁচা। প্রতিদিন দূর্ঘটনার ঝুঁকি নিয়ে শাহপরী থেকে শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ টেকনাফে আসা যাওয়া করছেন। তাছাড়া সামনে বর্ষা মৌসুম এ সময়টাতে দূর্ভোগের শেষ থাকে না এই দ্বীপ বাসীর।
শাহপরীর দ্বীপের বাসিন্দা টেকনাফ ডিগ্রি কলেজে শিক্ষার্থী আবদুল বাসেদ বলেন, স্থানীয় সাংসদ ও জনপ্রতিনিধির গাফলতির কারণে তিন বছরেও এ বাধঁ নির্মাণ হয়নি। জানিনা কখন এ বাধঁ হবে। জোয়ার-ভাটায় কষ্ট করে প্রতিনিয়ত কলেজে আসা-যাওয়া করছেন প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী। ভাটার সময় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার কর্দমাক্ত রাস্তা হেটে কলেজে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। জুরুরী ভিত্তিতে এ বাধঁ নিমার্ণ করার জন্য প্রধান মন্ত্রীর কাছে আমরা অনুরোধ জানাচ্ছি।
শাহপরীর দ্বীপ সাংগঠনিক ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি আলহাজ্ব সোনা আলী বলেন, তিন বছর ধরে বেড়ি বাধঁ নির্মাণ না হওয়ায় এ দ্বীপের প্রায় ৪০ হাজার মানুষ কষ্টের দিন যাপন করছেন। আগামী বছরের মধ্যে এ বাধঁ করা না হলে বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে শাহপরীর দ্বীপ হারিয়ে যাবে। তাই জরুরী ভিত্তিতে বেড়ি বাধঁ নিমার্ণের জন্য প্রধান মন্ত্রীর সু-দৃষ্টি কামনা করছি ।
সাবরাং ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মো. ইসলাইল বলেন, জোয়ার-ভাটায় কষ্ট করে প্রতিনিয়ত কলেজে আসা-যাওয়া করছেন দ্বীপের প্রায় অর্ধশত শিক্ষার্থী। ভাটার সময় সাড়ে পাঁচ কিলোমিটার কর্দমাক্ত রাস্তা হেটে কলেজে যাওয়া সম্ভব হচ্ছে না। পাশাপাশি সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বেড়িবাধ নির্মাণ করে দ্বীপের মানুষের বসবাস নিশ্চিত করার দাবী জানান তিনি।
শাহপরীর দ্বীপ রক্ষা ও উন্নয়ন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এমএ হাশেম বলেন, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বেড়িবাধ নির্মাণ করে ৪০হাজার মানুষের বসতবাড়ি হারানোর পথ থেকে রক্ষার দাবী জানান।
উল্লেখ্য গত বছরের আগষ্টে সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে বেড়িবাধ নিমার্ণ করার দাবিতে শিক্ষাপ্রতিষ্টানের শিক্ষার্থী, শিক্ষক, জেলে, কৃষক, বিভিন্ন পেশার মানুষ, রাজনৈতিক ব্যক্তিরা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান-সদস্যসহ হাজারো মানুষ শাহপরীর দ্বীপে এক বিশাল মানববন্ধনে অংশ নিয়েছিল।