তারানা হালিম আপনি পারবেন না!

সব-বিশ্ববিদ্যালয়েই-ফ্রি-ওয়াইফাই-সুবিধা-দেয়া-হবে-300x270অজয় দাশগুপ্ত

খবরে দেখলাম তারানা হালিমকে হুমকি দেয়া হয়েছে। সদ্য মন্ত্রিত্ব পাওয়া তারানা হালিম এখনো তরতাজা মন্ত্রী। হয়তো সে কারণে সবকিছু বুঝে উঠতে পারেননি। তাছাড়া গোড়াতে সবাই এরকম কড়া কড়া কথা বলে। ভালো কাজের স্পৃহা দেখালেও তারপর এক সময় গুটিয়ে খোলে ঢুকে পড়ে। উপমহাদেশের রাজনীতিতে বাংলাদেশ এখন সবচেয়ে আনপ্রেডিক্টেবল। এখানে কে যে কি করে কার কি কাজ বোঝা মুশকিল। সরকারি দলের লোকেরা এখানে বিরোধীর ভাষায় কথা বলেন। যারা শাসনে তাদের ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা ঘোরে চাকু নিয়েল তাদের হাতে দিনদুপুরে মানুষ খুন হয়। তাদের হাতে নিগৃহীত হয় অধ্যাপকেরা। তারপর ও সব শুনসান। একটা ছোট খাটো বা মাঝারি ধরনের ঢেউ ওঠে তারপর সব আবার আগের মত। এই যে বেসামাল ছাত্রলীগ, এই যে মাতাল কর্মীবাহিনী এরা কি করে? এরা জানে না কারা হুমকি দেয়? এদের কাজ কি দেশের পরিস্থিতি অশান্ত করে রাখা? আগে আমরা দেখেছি বড় দলগুলোর ছাত্রফ্রন্ট মানে তাদের নিরাপত্তা বলয়। এরা আপদে বিপদে রুখে দাঁড়াতো। ভরসা দিতো। সে জায়গাটা এখন আক্রমণের, সে ভরসা এখন আশঙ্কার ব্যাপার।
বলছিলাম তারানা হালিমের কথা। তাকেই বা কতটুকু বিশ্বাস করবো? মন্ত্রিত্ব পাবার জন্য তিনি ও কম কথা বলেননি। ইনুদের পথ ধরে কড়া কড়া কথা বলে তারপর জায়গায় পৌঁছেছেন। সে জায়গাটা ধরে রাখার তরিকা হয়তো এখনো পাননি বা জানেন না। জানলে তিনি ও সাইজ হয়ে যাবেন। সিম বন্ধের ব্যাপারটা এত সহজ না। কোন কিছু সহজ নয় দেশে। যাই করবেন তাতেই দুভাগ বা বহুধা বিভক্ত। এক ভাগ আরেক ভাগের ওপর চড়াও হতে সময় লাগে না, তবে এবারের খেলাটা ভিন্ন, নিজের সাথে নিজের লড়াই চলছে যেন। সে লড়াইয়ে আত্মঘাতী বাঙ্গালি এখন প্রায় বিপর্যস্ত। তারানা হালিম আপনি ও এখানে খেলার পুতুল মাত্র।
মজা লাগলো তার কথা জেনে। নিজের দৃঢ়তার কথা বলতে গিয়ে সেধে বলেছেন তার সাথে প্রধানমন্ত্রী আছেন। এ আরেক বিষয়, যে যেখানে যখন যা করছেন বা করতে পারছেন না ঠিক তখনই প্রধানমন্ত্রীর দোহাই দিচ্ছেন। এমন চমৎকার গণতন্ত্র আর কোথাও নেই। একদিকে সবকিছুর দায়িত্ব শেখ হাসিনার আরেক দিকে খালেদা জিয়ার। কিছু হলেই বা কোন কিছু ঘটলেই তাদের দোহাই। তাহলে আপনারা আছেন কি কারণে? দায় দায়িত্ব না নিয়ে মুখে বঙ্গবন্ধুর নাম বা জিয়ার নাম করলেই যদি পার পাওয়া যেতো এদেশে পঁচাত্তর ঘটতো না। ঘটতোনা খুনের রাজনীতি।
বললেই হয় সব এককেন্দ্রিক। তা ছাড়া প্রধানমন্ত্রী বা খালেদা জিয়ার নিশ্চয় নিজেদের কাজ আছে। তাঁদের নিজেদের কাজ করতে না দিলে বা সব ব্যাপারে টেনে আনলে গণতন্ত্র এমন একমুখি হয়েই থাকবে। জানি বাধ্য হবেই তারানা হালিম নেত্রীর দোহাই পেড়েছেন। কিন্তু এর ভেতর আরো একটা সত্য আছে। মন্ত্রী এখন কোন ঘটনা নয়। কেউ তাদের আর তোয়াক্কা করে না। মন্ত্রী যখন নিজেই চোখ তুলে নেয়ার কথা বলেন তখন নিজেরাও ধমক বা হুমকি খাবেন এটাইতো স্বাভাবিক। তারনা হালিম আপনি মোবাইল ব্যবসায়ি বা মাফিয়া চক্রের সাথে পারবেন এমনটি আমার মনে হচ্ছে না। আপনিও এখন খেলার পুতুল!
লেখক: কবি ও কলামিস্ট


শেয়ার করুন