তনু হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ

2016_03_22_21_24_39_allxbz5roQsvqrvikywKVxUDNad1WJ_originalসিটিএন ডেস্ক

কুমিল্লা সেনানিবাস এলাকায় কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজের একজন শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের পর হত্যার ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার অভিযোগ তুলে কুমিল্লা এবং রাজধানী ঢাকায় বুধবার বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ করেছে। তাঁর পরিবারও ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত এবং বিচার দাবি করেছে।

গত রোববার কুমিল্লা সেনানিবাসেরই বাসিন্দা সোহাগী জাহান তনু নামের ঐ শিক্ষার্থীর মৃতদেহ পাওয়া যায়।

Shilshoshi-1458724369-42e171b_xlargeনারী অধিকার আন্দোলনকারীরা বলেছেন, আগে ধর্ষণের জন্য নারীদের পোশাক-আশাককে দায়ী করা হতো। এখন এই ঘটনার পর পোশাকের শালীনতার সঙ্গে ধর্ষণের যোগাযোগ কতটা সম্পর্কিত তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।

সোহাগী জাহান তনুর বাবা কুমিল্লা সেনানিবাসে বোর্ডে একজন বেসামরিক কর্মচারী। সেই সুবাদে সেনানিবাসে কোয়াটারে তাদের বসবাস। তিন ভাইবোনের মধ্যে সবার ছোট সোহাগী জাহান তনু কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজে ইতিহাস বিভাগে দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। তাঁকে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগ তুলে তাঁর কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা বুধবার কুমিল্লায় বিক্ষোভ করেছে। ঢাকাতেও শাহবাগ এলাকায় গণজাগরণ মঞ্চ এবং ছাত্র ইউনিয়নসহ বিভিন্ন সংগঠন বিক্ষোভ করেছে।

সোহাগী জাহান তনু লেখাপড়ার পাশাপাশি তাঁর কলেজে নাটকসহ সাংস্কৃতিক কর্মকা-ের সাথেও জড়িত ছিলেন।

টানাটানির সংসারে তিনি কুমিল্লা সেনানিবাসের ভিতরেই টিউশনি করে নিজের খরচের কিছুটা যোগাতেন। তাঁর বড় ভাই নাজমুল হোসেন বলেছেন, গত রোববার ২০ মার্চ বিকালে তাঁর বোন টিউশনি করতে গিয়েছিল। কিন্তু রাত আটটাতেও না ফিরলে তাদের মা খুঁজতে রাস্তায় খুঁজতে যান।

হোসেন আরও জানিয়েছেন, তাঁর বোন যে বাসায় পড়াতে যেতেন, সেই বাসায় খোঁজ নিয়ে জানা যায়, সন্ধ্যা সাতটাতেই তনু চলে গেছে। রাত দশটার দিকে তাদের বাবা বাসায় ফিরলে তখন আবার তারা খুঁজতে বের হন। যে পথ দিয়ে টিউশনির বাসায় যেতেন, সেই পথেই সেনানিবাসের ভিতরে একটি কালভার্টের নীচে মৃতদেহ পাওয়া যায়।

ঢাকায় বিক্ষোভ থেকে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার চেষ্টার অভিযোগ তোলা হয়েছে। বিক্ষোভে অংশ নেয়া কয়েকজন বলছিলেন, ঘটনার ব্যাপারে কর্তৃপক্ষ পরিষ্কার করে কিছু বলছে না, সেজন্য তাদের সন্দেহ হচ্ছে।

03কুমিল্লা জেলার পুলিশ সুপার শাহ আবিদ হোসেন বলেছেন,ধর্ষণের চেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে হত্যা করা হতে পারে ,পুলিশ প্রাথমিকভাবে এমন ধারণা করছে। তদন্তের স্বার্থে এখনই তিনি বিস্তারিত বলতে রাজি নন।

সোহাগী জাহান তনু হিজাব পড়তেন। এ ধরণের ছবি সামাজিক নেটওয়ার্কে প্রকাশ হয়েছে। নারী অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারী সংগঠনগুলো বলছে, এর আগে কোনো নারী ধর্ষণের শিকার হলে তার পোশাক নিয়ে অনেকে প্রশ্ন তুলতেন।এখন সেই প্রশ্ন অবান্তর বলে মনে করেন নারী আন্দোলনের অন্যতম একজন নেত্রী ফরিদা আকতার। তিনি বলেছেন, ‘যারা নারীদের ওপর শারীরিকভাবে আক্রমণ করে, পোশাক বা বয়স কোনো কিছুই তাদের কাছে বিষয় নয়। এটা বাংলাদেশসহ আন্তর্জাতিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।’

ফরিদা আকতার আরও বলেছেন, ‘ধর্ষণের শিকার নারীর পোশাককে যারা দায়ী করতে চায়, তারা আসলে ক্ষতিগ্রস্ত নারীকে দোষী বানাতে চায়। তারা নারীর বিরুদ্ধেই কথা বলে।’

ঘটনাটিকে ঘিরে সামাজিক নেটওয়ার্ক ফেসবুকে কিছু তৎপরতা দেখা যায়। মুল ধারার সংবাদমাধ্যমে এই ঘটনা নিয়ে সেভাবে খবর চোখে পড়েনি।

সূত্র : বিবিসি বাংলা


শেয়ার করুন