ট্রাকচাপা থাকা ছেলে বলল বাবাকে বাচাঁন; বাবা বলল ছেলেকে বাচাঁন!

ইসলাম মাহমুদঃ

সন্তান ও পিতার মধ্যে আল্লাহ যে সম্পর্ক দিয়ে সৃষ্টি করল আরো একবার প্রমাণ পেলাম।
ছেলে বলল বাবাকে বাচাঁন; বাবা বলল ছেলেকে বাচাঁন। এই আবেক মাখা কথাগুলি কলাতলীতে ট্রাকচাপা পড়া উদ্ধার কর্মীদের বলছিলেন, ছেলে রাশেদুল ইসলাম (১৩) বাবা আবুল হাসেম। ফায়ার সার্ভিসের ডব্লিউএইচআই জসিম উদ্দিন প্রধান ও ফায়ার ফাইটার ওবাইদুল হক বলেন তাদের কথাগুলো এখনো আমাদের কানে বাজছে।
আমাদের উদ্ধার কাজে এরক ঘটনা বিরল। মৃত্যুর পথেও বাবা-ছেলের সম্পর্ক সত্যি বিস্ময়কর।

তবে এক ঘণ্টার বেশি সময় ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে থাকা মহেশখালীর স্কুলছাত্র রাশেদুল ইসলাম (১৩) অলৌকিকভাবে বেঁচে গেছে। তার বাবা আবুল হাসেমও আহত হয়েছেন। বর্তমানে তারা কক্সবাজার সদর হাসপাতালে ভর্তি আছেন।

শনিবার (৬ মার্চ) রাত ১১টার দিকে কলাতলী মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহত রাশেদুল ইসলাম বড় মহেশখালী ইউনিয়নের পানিরছড়া হাইস্কুলের সপ্তম শ্রেণির ছাত্র।

হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে রাশেদুলকে ওয়ার্ডে নেয়া হয়েছে। তবে তখনও তার চোখে-মুখে ভয়ের ছাপ।

রাশেদুল ট্রাকের ধাক্কায় সঙ্গে সঙ্গে নিচে পড়ে যায়। এ সময় তার দুই পা ট্রাকের চাকায় পৃষ্ঠ হয়। দীর্ঘ এক ঘণ্টা ধরে সেখানে চাপা পড়েছিল সে।

আহত স্কুলছাত্র রাশেদুল ইসলাম জানায়, পেটের অপারেশন শেষে বাবা আবুল হাসেমের সঙ্গে চট্টগ্রাম থেকে কক্সবাজারে ফিরছিল সে। রাত ১১টার দিকে তাদের বাস কলাতলী মোড়ে এসে দাঁড়ায়। তারা বাস থেকে নেমেই সিএনজিতে উঠে বসে। সেই মুহূর্তে একটি ট্রাক পেছন থেকে এসে সিএনজিটিকে ধাক্কা দেয়। এতে আমরা ছিটকে পড়ে যায়।

খবর পেয়ে হাসপাতালে ছুটে আসা রাশেদুলের মামাতো ভাই নিয়াজ আহমেদ বলেন, বাড়ি থেকে ফোন পেয়ে প্রথমে ঘটনাস্থল ও পরে হাসপাতালে এসে তাদের খুঁজে পাই। রাশেদুলের পা বিচ্ছিন্ন হওয়ার পথে। তার বাবাও খুবই আহত। রাশেদুলের ইতোমধ্যে একটি অপারেশন হয়েছে। তারপরও আল্লাহ তাকে বাঁচিয়ে রেখেছে। এর জন্য শুকরিয়া।

কক্সবাজার ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনের ফায়ার ফাইটার ওবাইদুল হক বলেন, রাশেদুলের পা দুটি চাকার নিচে চাপা ছিল। সিমেন্ট থাকায় তাকে উদ্ধার করতে সময় লেগেছে। তবে ছেলেটা সাহসী। মনোবল হারায়নি, তাই হয়তো আমরা তাকে জীবিত উদ্ধার করতে পেরেছি।
নিহতরা হলেন- কলাতলীর চন্দ্রিমা এলাকার মৃত লাছ মিয়ার স্ত্রী মহুনা বেগম (৬৫) ও ঢাকার উত্তরার বাসিন্দা শাহাদাত হোসেন ও কক্সবাজার আইনজীবী সমিতির সদস্য এডভোকেট ওসমান গনি।


শেয়ার করুন