স্বপরিবারে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর টেকনাফ সফর

টেকনাফের পর্যটন স্পটগুলো দর্শনার্থীদের পদভারে মুখরিত

আমান উল্লাহ আমান, টেকনাফ ॥
বৃষ্টি উপেক্ষা করে ঈদে টেকনাফের পর্যটন স্পটগুলো দর্শনার্থীদের পদভারে এখন মুখরিত হয়ে উঠেছে। ভ্রমণপিপাসু অনেকেই পরিবার পরিজন, বন্ধু বান্ধব, প্রেমিক যুগলরাই বৃষ্টি উপেক্ষা করেই ছুটে এসেছেন টেকনাফের দর্শনীয় স্থানে। টেকনাফ সমুদ্র সৈকত, নাফনদীর উপর নব নির্মিত বাংলাদেশ মিয়ানমার ট্রানজিট জেটি, নেচার পার্ক, মারিশবনিয়া পাথর সৈকত, শাহপরীরদ্বীপ, মাথিনের কূপ ও কুদম্বগুহা এবং নব দিগন্তে উন্মেচিত দেশের একমাত্র দীর্ঘ মেরিন ড্রাইভে হাজার হাজার দর্শনার্থীরা ভীড় করছে।

এদিকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল স্বপরিবারে টেকনাফ সফর করেছেন। ১ জুলাই বিকাল ৫ টায় মেরিন ড্রাইভ হয়ে নব নির্মিত ট্রানজিট জেটি পরিদর্শন এবং স্পীড বোট যোগে নাফ নদী ভ্রমন এবং নাফ ট্যুরিজমের জন্য নির্ধারিত জইল্যার দ্বীপ পরিদর্শন করেছেন। এসময় চট্টগ্রাম ডিভিশন পুলিশের ডিআইজি এস,এম মনির উজ্জামান, টেকনাফ ২ বর্ডার গার্ড ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক এসএম আরিফুল ইসলাম, উপজেলা চেয়ারম্যান জাফর আহমদ, টেকনাফ মডেল থানার ইনচার্জ মাঈন উদ্দিন খান সাথে ছিলেন।

অপরদিকে, মেরিন ড্রাইভ সড়ক উদ্ভোধন হওয়ায় গত বছরের তুলনায় এবারের ঈদে মানুষের ঢল নেমেছে মেরিন ড্রাইভ সড়কসহ সমুদ্র সৈকতে। ঈদের দিন থেকে থেমে থেমে বৃষ্টি হলেও আটকাতে পারেনি প্রকৃতিপ্রেমী মানুষদের। ঈদের দিন থেকে মানুষের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। পানিতে নিজের ঘাঁ ভাসিয়ে দিতে দূর দূরান্ত থেকে ছুটে এসেছে অনেক আবাল বৃদ্ধ বনিতা। সৌন্দর্য দেখে মুগ্ধ হয়েছে দেশের ভ্রমণপিয়াসী মানুষ। প্রকৃতির অপরূপ সৃষ্টি সেতুবন্ধন করে, সবুজের চাঁদরে যেখানে প্রকৃতি খেলা করে আপন মনে, ঝুম ঝুম শব্দে বয়ে চলা ঝর্ণাধারায় গা ভিজিয়ে মানুষ যান্ত্রিক জীবনের অবসাদ থেকে নিজেকে ধুয়ে সজীব করে তুলছে। অতি সম্প্রতি উদ্ভোধন হওয়া কক্সবাজার সাবরাং পর্যন্ত দীর্ঘ ৮৪ কিলোমিটার মেরিন ড্রাইভে চলাচল করলে মন জুড়িয়ে যায়। এই মেরিন ড্রাইভের এক পাশে সমুদ্র সৈকত অপর পাশে শুধু পাহাড় আর পাহাড়। বাঁধের ধারে অপেক্ষমান সারি সারি ডিঙি নৌকো আর ইঞ্জিনচালিত বোট। পাহাড়ের কোল ঘেঁষে স্বচ্ছ পানিতে তাকাতেই দেখা যায় নীলাকাশ।

কিছুদূরেই দেখা গেছে পাহাড়ের কান্না। অঝোরে কাঁদছে পাহাড়। অথচ তার কান্না দেখে নিজের কাঁদতে একটুও ইচ্ছে হয়নি। বরং কান্নার জলে গা ভাসিয়েছে অনেকেই। তবে সংশ্লিষ্টদের উদাসিনতা, অবহেলা ও প্রচারের অভাবে পর্যটকদের কাছে টেকনাফের দর্শনীয় স্থানগুলো দেখা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে বলে মনে করছেন সচেতন মহল। এদিকে প্রাকৃতিক ও কৃত্রিম সৌন্দর্যে ভরপূর, পাহাড়ী হাতি এবং পাক-পাখালির ডাকে মূখরিত টেকনাফের নেচার পার্কসহ বিভিন্ন স্পট পর্যটক বান্ধব হলেও প্রচারের অভাবে দেশের মানুষের কাছে প্রসার নেই। ফলে পর্যটক খাত থেকে সরকার বিপুল পরিমান রাজস্ব আয় থেকে বঞ্চিত হচ্ছে তেমনি দেশ-বিদেশের ভ্রমন পিপাসু পর্যটকরা সীমান্ত ও পর্যটন নগরী টেকনাফের দর্শনীয় স্থানগুলো অবলোকন করছেনা।
টেকনাফ ন্যাচার পার্ক পাহারা দলের সভাপতি উসমান গণি জানান, বিশাল এলাকা জুড়ে ন্যাচার পার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। এতে পর্যটকদের জন্য টং ঘরসহ বিভিন্ন সুবিধা থাকলেও তা পর্যাপ্ত পরিমাণ নয়। প্রচারের অভাবে অবহেলায় রয়ে গেছে পার্কটি। প্রচারের মাধ্যমে দেশে ছড়িয়ে দিলে প্রকৃতি প্রেমীরা ছুটে আসবেন। এতে সরকার প্রচুর রাজস্ব আয়ে সক্ষম হতো।
টেকনাফের জাইল্যারদ্বীপ, সাবরাং খুরেরমুখসহ পর্যটন স্পটগুলোকে দ্রুত প্রচার ও শতভাগ পর্যটনবান্ধব করতে দাবী জানিয়েছেন উপজেলাবাসী।


শেয়ার করুন