আসামীদের ধরার আশ্বাস

টেকনাফের নিহত মার্কিনের বাড়ি পরিদর্শন করলো এএসপি

12088325_1662206947399689_6662269479392826371_nবার্তা পরিবেশক :
টেকনাফের নৃশংসভাবে হত্যার শিকার আজিজুল হক মার্কিন মিয়ার বাড়ি পরিদর্শন করে পরিবারের সাথে সাক্ষাত করেছেন সহকারী পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) আবদুল মালেক। শনিবার দুপুরে তিনি উপজেলার সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়ায় মার্কিনের বাড়িতে গিয়ে পরিবারের লোকজনের সাথে সাক্ষাতে মিলিত হন তিনি। এএসপি কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন মার্কিনের স্ত্রী ও অন্যান্য স্বজনরা।
সাক্ষাতকালে এএসপির কাছে নিহত মার্কিনের পরিবারের সদস্যরা তাদের অসহায়ত্ব, দুর্দশা, আসামীদের হুমকি ও আহত ভাইয়ের মরণাপন্ন অবস্থার কথা তুলে ধরেন। এসব কথা খুব আন্তরিক ভাবে শুনেন এএসপি আবদুল মালেক। এসময় তিনি পরিবার স্ত্রী পারভিনসহ অন্যান্য সদস্যদের স্বান্তনা দেন। পাশাপাশি খুনের বর্ণনা শুনেন। একই সাথে অতি দ্রুত সময়ে আসামীদের গ্রেফতার করে শাস্তির আওতায় আনার কথা জানান। পাশাপাশি পরিবারকে সহযোগিতা করার দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্তয় করেন। এছাড়া আসামীরা কোন হুমকি দিলে তা তাকে সাথে সাথে জানানোর জন্য বলেন।
গত ১৪ সেপ্টেম্বর টেকনাফে সদর ইউনিয়নের আজিজুল হক মার্কিন মিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করে একই এলাকার ছিদ্দিক বাহিনী। এ ঘটনায় মামলা হয়। এ মামলার আসামীরা হচ্ছে, সদর ইউনিয়নের নাজিরপাড়ার ছিদ্দিক আহমদের ছেলে ফরিদ আলম (২৫), ছোট হাবিবপাড়ার খলিলুর রহমানের ছেলে হামজালাল (৪০), তার ভাই মো: জালাল (৩৪), ইউছুপ জালাল বাহাদুর (৪৩), মৃত নজির আহমদের ছেলে ছিদ্দিক আহমদ প্রকাশ চোরাকারবারী ছিদ্দিক (৪৫) ও তার ভাই জালাল আহমদ (৪০), জালাল আহমদের ছেলে জসীম উদ্দিন (২৫), মৃত মকবুল আহমদের ছেলে নুর মোহাম্মদ (৩২) ও সৈয়দ আলম (২৮), ছিদ্দিকের জামাই মন্ডলপাড়ার মৃত রহিম আলীর ছেলে শামসুল আলম (৩৫), নাজিরপাড়ার মৃত আবদুল মজিদ নুরুল ইসলাম প্রকাশ বাইগ্গা (৪৫), সুলতান আহমদ (৪২), ছোট হাবিবপাড়ার আবুল বশরের ছেলে আব্দুল্লাহ (৪৫)।
হত্যার ২০ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো ধরা পড়েনি খুনিরা। এতে চরম অসহায় ও নিরাপত্তাহীনতায় দিন যাপন করছে মার্কিনের স্ত্রী-সন্তান ও মামলা বাদীসহ। একই সাথে কান্না থামছে না পরিবারের সদস্যদের। অন্যদিকে হাসপাতালে মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে আহত আরেক ভাই মাওলানা নুরুল হক। markin
এসব আসামীদের বিরুদ্ধে হত্যাসহ আরো ডজন মামলা রয়েছে বলে জানা গেছে। এত মামলা থাকা সত্ত্বেও সন্ত্রাসীরা আদালত থেকে জামিন নিতে দৌড়ঝাঁপ চালাচ্ছে।
নিহতের পরিবারের অভিযোগ, আসামীরা জামিন না পেয়ে আরো ক্ষুব্ধ হয়েছে নিহতের পরিবারের সদস্য ও মামলার বাদি শাহাব উদ্দীনের উপর। আসামীদের অব্যাহত হুমকিতে নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে তারা। এর ধারাবাহিকতায় ঈদুল আযহা কাটিয়েছেন চরম অসহায়ত্বে মধ্য দিয়ে। একইভাবে আসামীরা ধরা না পড়ায় মামলার ভবিষ্যৎ নিয়ে শংকা করছেন বাদিসহ অন্যরা। অন্যদিকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে হামলায় গুরুত আহত মার্কিনের বড় ভাই নুরুল হক। তার অবস্থা এখনো শঙ্কটাপন্ন বলে জানা গেছে।
বাদি শাহাব উদ্দীন জানান, টেকনাফের ইয়াবা বদৌলতে কোটিপতি হওয়া ছিদ্দিক এতোদিন ধরে প্রশাসনের প্রান কেন্দ্রে বসে কোন অদৃশ্য শক্তির বলে অবৈধ কর্মকান্ড চালিয়ে আসছিল। বিভিন্ন পত্রিকায় তার বিরুদ্ধে সংবাদ ছাপা হলেও প্রশাসনের নজরে আসেনি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তালিকাভূক্ত ইয়াবা ব্যবসায়ী, শ্রেষ্ঠ চোরাকারবারী তথা ‘ব্লেকার’ হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন তিনি। ছিদ্দিক বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড হাম জালালের নেতৃত্বে এইসব অপকর্ম ঘটে বলে স্থানীয়রা জানায়। নাজিরপাড়ায় কেউ ইয়াবা ব্যবসা করলে তার সন্ত্রাসী গ্রুপকে মাসিক মাসোহারা দিতে হয়। তার ভয়ে এলাকার কেউ মুখ খুলছে না।
ভুক্তভোগী ও বাদীপক্ষের দাবী তাদেরকে দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় এনে যথাযত শাস্তির ব্যবস্থা করে।


শেয়ার করুন