টাম্পাকোয় আরও দুই লাশ, মালিকের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

গাজীপুরের টঙ্গীতে প্যাকেজিং কারখানা টাম্পাকো ফয়লস কারখানার ধ্বংসস্তুপ থেকে আরও দুটি মরদেহ উদ্ধার হয়েছে। এ নিয়ে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩১ জনে। এখনও অন্তত ১২ শ্রুমিকের স্বজনরা অপেক্ষা করে আছেন। তারা তাদের প্রিয় মানুষের কোনো খোঁজ পাচ্ছেন না।

দুর্ঘটনায় কারখানা মালিক বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য মকবুল হোসেনকে আসামি করে হত্যা মামলা করেছেন কারখানার একজন কর্মীর স্বজন। এতে মকবুলের সঙ্গে আরও সাত জনকে আসামি করা হয়েছে।

আরও দুই মরদেহ উদ্ধার

বিস্ফোরণের পর আগুনে ধসে পড়া ভবনে উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে ফায়ার সার্ভিস ও সেনাবাহিনীর একটি দল। তারা বিভিন্ন যন্ত্র দিয়ে ধ্বংসস্তুপ কেটে ও সরিয়ে নিচ্ছে। সকালে এভাবেই বের হয় দুটি মরদেহ।

উদ্ধার হওয়া দুটি মরদেহের পরিচয় জানাতে পারেননি উদ্ধারকারীরা। কারণ, আগুনে তাদের শরীর পুরোপুরি ঝলসে গেছে।

গত শনিবার ভোরে কারখানাটিতে বিস্ফোরণের সময় ভেতরে রাতের পালার কাজ চলছিল। কতজন শ্রমিক সেখানে ছিল সেটা নিশ্চিত করে কেউ বলতে পারেনি। প্রথম দিনই ২৪ টি মরদেহ উদ্ধারের নিশ্চিত খবর পাওয়া যায়। রবিবার হাসপাতালে মারা যায় আহতদের একজন। আর চারটি মরদেহ উদ্ধার হয় কারখানার ভেতর থেকে। আর সকালে আরও দুজনের মরদেহ উদ্ধারের পর মৃতের সংখ্যা বেড়ে হলো ৩১ জনে। এখনও আহত অবস্থায় বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন ৫০ জনের মত।

তবে টাম্পাকোতে মোট কতজন মারা গেছে, সেটা এখনও নিশ্চিত করে বলতে পারছে না কেউ। দুর্ঘটনার পর জেলা প্রশাসনের গঠন করা নিয়ন্ত্রণ কক্ষে স্বজনরা এখন পর্যন্ত নিখোঁজ ১২ শ্রমিকের নাম জমা দিয়েছেন। দুর্ঘটনার দুদিন পর সকালেও কারখানার সামনে স্বজনদের ভিড় করতে দেখা গেছে। এ সময় অনেকেই কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।

মালিক মকবুলের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা

শনিবার এই দুর্ঘটনার পর থেকেই কারখানা মালিক বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য সৈয়দ মকবুল হোসেন আত্মগোপনে রয়েছেন। একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে তিনি ফোনে কথা বললেও অন্য কোনো গণমাধ্যম বা গাজীপুরের জেলা প্রশাসন বহু চেষ্টা করেও তাকে পায়নি। কেবল মালিক নন, কারখানার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও কেউ ঘটনাস্থলে যাননি দুর্ঘটনার পর।

বেশ কয়েকজন মন্ত্রী ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন জানিয়েছে, মালিকের গাফিলতির কারণে এই ঘটনা ঘটে থাকলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

রবিবার রাতেই কারখানার কর্মী মোহাম্মদ হোসেন জুয়েলের বাবা আব্দুল কাদের পাটোয়ারি কারখানা মালিক মকবুল হোসেনসহ আট জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন। মকবুল ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন তার স্ত্রী পারভীন, কারখানার ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর আহমেদ, মহাব্যবস্থাপক সফিকুর রহমান, উপমহাপরিচালক আলমগীর হোসেন, ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মনির হোসেন, ব্যবস্থাপক (সার্বিক) সমির আহমেদ এবং ব্যবস্থাপক হানিফ।

—ঢাকাটাইমস


শেয়ার করুন