টমটমের শহর কক্সবাজার, প্রতিদিনই দুর্ঘটনা

asferewকক্সবাজারে ব্যাটারিচালিত টমটমের ব্যবহার আশংকাজনকহারে বৃদ্ধি পেয়েছে। চীন থেকে আমদানিকৃত গাড়িটি উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি করছে বলে জানিয়েছেন সচেতনমহল। কক্সবাজারে মাত্রাতিরিক্তহারে বেড়েছে এর ব্যবহার। ছোট্ট একটি শহরে এভাবে ব্যাঙের ছাতার মত টমটম ব্যবহার পর্যটকসহ এলাকার সবাইকে ভাবিয়ে তুলেছে। এমন কোনো দিন নেই, এ গাড়িতে ৪/৫টি দুর্ঘটনা সংঘটিত হচ্ছে না। পৌর কর্তৃপক্ষ এ গাড়ির লাইন্সেস দেওয়া গত কয়েক বছর ধরে বন্ধ করে দিলেও ফের চালু করেছে। আমদানিকারকরা প্রতিদিনই ২/৪টি টমটম বিক্রি করছেন। সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের নাগের ডগা দিয়ে এসব অবৈধ টমটম সড়কে চলাচল করলেও রহস্যজনক কারণে যথাযথ কর্তৃপক্ষ এসব গাড়ি আটক করছে না। অনেকেই জানিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের বড় বড় কর্তাদের ম্যানেজ করেই তা শহরে চলছে। যার ফলে কোনো অভিযান নেই। মাঝে-মধ্যে দু’একটি অভিযানের খবর শোনা গেলেও তা প্রয়োজনের তুলনায় নগণ্য।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক টমটম ব্যবসায়ী জানান, গাড়িটি পরিবেশবান্ধব হলেও টেকসই নয়। গাড়ির গতির সঙ্গে ব্র্যাকের কোনো সঙ্গতি নেই। গাড়ির যন্ত্রাংশের নানা ত্রুটির কারণে গাড়িটি প্রায় সময়ই দুর্ঘটনায় পতিত হয়। লাভ বেশি বলেই এ ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছি।
সম্প্রতি কক্সবাজার বিমানবন্দর থেকে একটি টমটমে চড়ে হোটেলে যাওয়ার সময় শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ের সামনে টমটমে ওড়না পেঁচিয়ে শারমিন আকতার (১৪) নামের এক গৃহপরিচারিকা কিশোরীর মর্মান্তিক মৃত্যু হয়। সে দিনাজপুর সদরের নতুন পাড়া এলাকার মাজেদুর রহমানের কন্যা। নিহত শারমিন ঢাকায় যে বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজ করতো, তাদের সঙ্গে সে কক্সবাজার বেড়াতে আসে।
সম্প্রতি সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে কক্সবাজার শহরের আলীর জাঁহাল এলাকায় ব্যাটারিচালিত টমটমের ধাক্কায় আয়েশা ছিদ্দিকা রেশমী (৬) নামে এক শিশু নিহত হয়। নিহত রেশমী ওই এলাকার আব্দুল খালেকের মেয়ে। রেশমীর পারিবারিক সূত্র জানায়, সন্ধ্যায় রাস্তা পার হওয়ার সময় দ্রুতগামী একটি টমটম তাকে সজোরে ধাক্কা দিলে রেশমী ঘটনাস’লেই মারা যায়।
এছাড়াও কিছুদিন আগে কলেজ থেকে বাড়ি ফেরার পথিমধ্যে কক্সবাজার সরকারি কলেজের প্রথম বর্ষের এক ছাত্রী গাড়ির চাকার সাথে ওড়না পেঁচিয়ে শহরের হাশেমিয়া মাদ্রাসার সামনে মর্মান্তিকভাবে মৃত্যুবরণ করে।
এভাবে প্রতিদিনই বাড়ছে এ গাড়ির দুর্ঘটনার সংবাদ। জনবিধ্বংসী এ গাড়ির লাইন্সেস বন্ধ করে দেয়ায় এলাকার সচেতনমহল সাধুবাদ জানালেও ফের চালু করায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছেন তারা।

দূর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)-এর কক্সবাজার পিপি অ্যাডভোকেট মো. আবদুর রহিম জানান, টমটম গাড়িতে চড়তে যেমন আরাম, তেমনি বিপজ্জনক। ত্রুটিপূর্ণ এ গাড়ি কোনোমতেই শংকামুক্ত নয়। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে,
অদক্ষ চালকেরাই এ গাড়ি চালায়। রিকশা চালাতে জানে না যারা, এমন অনেকেই এখন টমটম চালক। এ গাড়ি চালনার ব্যাপারে সরকারিভাবে আইন প্রণয়ন জরুরি।


শেয়ার করুন