ঝিমিয়ে পড়েছে মহেশখালী বিএনপি

vvvvনিজস্ব প্রতিবেদক
মহেশখালীর রাজনৈতিক অঙ্গনে দেশের প্রধান বিরোধী দল বিএনপি এখন ঝিমিয়ে পড়েছে । যোগ্য, দক্ষতা, রাজনৈতিক মেধাবী সাহসী নেতৃত্বের অভাবে বিরোধী দলের সংগঠনটিতে এ অবস্থা দেখা দিয়েছে। মহেশখালী উপজেলা বিএনপি সভাপতির অবহেলার কারনে বিগত সময় সরকার বিরোধী আন্দোলন নিয়ে বেকায়দায় ছিল বিএনপি। অফিস কেন্দ্রিক কর্মসূচীতেই সীমাবদ্ধ ছিল দলটি। প্রায় ৫ বছর পূর্বে কক্সবাজার জেলা বিএনপির যুগ্ন সম্পাদক নির্বাচিত হয় এড. নূরুল আলম। পরে তাকে নিয়োগ দেওয়া হয় মহেশখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি হিসেবে । কিন্তু বিএনপির নেতৃত্বাধীন ২০ দলীয় জোটের আন্দোলনে মাঠে থাকেন না তিনি। এ অস্থায় তখন থেকে দলীয় সভাপতির ভূমিকা নিয়ে হতাশা ও অসন্তোজ বিরাজ করছিল বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতা কর্মীদের মাঝে।
যোগ্য, দক্ষতা, ত্যাগি রাজনৈতিক মেধাবী নেতৃত্বের অভাবে বিএনপির সংগঠনটিতে এ অবস্থা দেখা দিয়েছে মহেশখালীতে। যুগের পরিবর্তনের কারনে কক্সবাজার জেলা বিএনপির নেতারা মহেশখালীতে যোগ্য নেতৃত্ব প্রতিষ্টা করতে ব্যর্থ হয়। মহেশখালীর ৮ ইউনিয়ন ও পৌরসভা তৃণমূল কর্মীদের সাথে সরেজমিন আলাপ করে জানা গেছে, যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন এখন রাজনৈতিক শূন্য একটি দলে পরিণত হয়েছে। দলকে সু-সংগঠিত করতে হলে অবশ্যই যোগ্য নেতৃত্ব দরকার। অন্যথায় এ দলটি ভবিষ্যত অনিশ্চয়তায় মুখে পড়তে যাচ্ছে নিঃ সন্দেহে বলা যায়। মহেশখালী রাজনীতির মাঠে ময়দানে বিএনপির কোন কর্মকান্ড দেখা না গেলে ও মাঝে মধ্যে জেলা নেতৃবৃন্দের আগমনে স্থানিয় নেতা কর্মীরা কিছুটা সরব হয়ে উঠে। আগামীকাল শুক্রবার মহেশখালীতে জেলা বিএনপির নেতাদের আগমনের খবরে উপজেলা বিএনপির সভাপতি সরব হয়ে উঠছে চেষ্টা চালাচ্ছে। আত্মগোপনে থাকা রাজপথে নিস্ক্রিয় নেতাদের ঘোরাফেরা সবর্ত্রই। তাদের বেশ ভূষাও ফিট ফাট আর নামি-দামি।
মহেশখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি বলতে গেলে বিএনপি অঙ্গ সংগঠনের মহেশখালীর অভিবাবক হওয়ার সত্বেও এড.নুরুল আলমের অবহেলায় দুঃখজনক মন্তব্য করে বিএনপি নেতা ও কালারমারছড়া ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি সালাহ উদ্দিন নূরী পিয়ারু ও আব্দু শুক্রর বি.এ বলেন, আমরা উপজেলা বিএনপির সভাপতিকে অনেকবার বলেছি সক্রিয়ভাবে রাজনীতির মাঠে থাকার জন্য-যেভাবে অন্য উপজেলার সভাপতিরা রয়েছেন। ছাত্র-দল যুবদল নেতারা ও বলেছেন। তার পর ও তিনি মাঠে আসেননি। একজন সভাপতি হিসেবে তিনি মাঠে থাকলে এবং প্রতিটি ইউনিয়নে গিয়ে তৃণমূল কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করলে দলের নেতা – কর্মীরা আরো উজ্জীবিত হতেন, তিনি সভাপতি হওয়ার পর থেকে উপজেলার ৮ ইউনিয়নে কোন বর্ধিত সভা তো দূরের কথা তিনি কারো সাথে যোগাযোগ করেন না বলে অভিযোগ করছেন বিএনপির অঙ্গসংগঠনের সাবেক ও বর্তমান নেতারাসহ তৃণমূল বিএনপির সদস্যরা।
জানা গেছে, উপজেলা বিএনপির অভিবাবক হওয়ার সত্বেও কেন্দ্রীয় ঘোষিত কোন কমসূচিতে তিনি যোগদান না করে নিজের আখের গোছানোর কাজে ব্যস্ত থাকেন আদালতে । উপজেলা সভাপতি আদালতে বেশির ভাগ সময় ব্যয় করার কারণে মহেশখালী ইউনিয়ন গুলোতে ছাত্রদল যুবদলের কোন কমিটি নাই বললে চলে। বিএনপির কমিটি কাগজে কলমে থাকলে ও অনেক ইউনিয়নে সভাপতি সম্পাদক এলাকার বাইরে থাকেন দীর্ঘদিন। এ বিষয়ে খোঁজ খবর রাখেনি সভাপতি এড. নুরুল আলম সাহেবের মত সুবিধাভোগি নেতারা। মাতারবাড়ী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নুরুল ইসলাম এ. কম মাঝে মধ্যে এলাকায় আসলে ও সম্পাদক ভেন্ডার রফিক নামে মাত্র থাকলে তিনি এলাকায় ছেড়ে ৩ বছর যাবত স্বপরিবারে চট্টগ্রাম বসবাস করেন। কোন মতে মাতারবাড়ী ইউনিয়ন যুবদলের সাবেক সভাপতি ও উপজেলা বিএনপির সমবায় সম্পাদক হোছাইন মাসুম, উপজেলা ছাত্রদলের সিনিয়র সহ-সভাপতি রিয়াদ মোঃ আরাফাত হোছাইন কিছু বিএনপি অংঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীদের নিয়ে দলকে চাঙ্গা রেখেছেন মাতারবাড়ীতে এমনটা জানালেন তৃণমুল বিএনপির নেতারা। একই অবস্থা বৃহত্তর কালারমারছড়া ইউনিয়নে, বলতে গেলে উত্তর মহেশখালীর প্রাণ কেন্দ্র বললে চলে এ কালারমারছড়া ইউনিয়ন। এ ইউনিয়নে উপজেলা সভাপতি নির্বাচিত হয়ে কোন সময় মিটিং করেননি বলে জানালেন বিএনপির নেতা জকরিয়া। ইউনিয়ন সভাপতি আবু তাহের চৌধুরী বয়সের ভারে নুয়ে পড়লেও মাঝে মধ্যে দলীয় কিছু কর্মসূচী পালন করেন । তবে সাধারণ সম্পাদক ফরিদুল আলম নামে মাত্র থাকলে তিনি দলীয় কোন কমসূচীতে দেখা মিলেনি। ধলঘাটা ইউনিয়নের চিত্র একই সভাপতি ইউসুপ হারুণ, সাধারণ সম্পাদক আলী আহসান স্বপরিবারের চট্টগ্রাম অবস্থান করেন। শাপলাপুর ইউনিয়নের অবস্থা একই সভাপতি আমিনুল হককে মাঠে ময়দানে দেখা গেলেও সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল হক একেবারেই উধাও হয়ে গেছেন এলাকা থেকে। এই হল মহেশখালী উপজেলা বিএনপির রাজনৈতিক হালচাল। একাবারেই হ-য-ব-র-ল অবস্থা। অপরদিকে মহেশখালী উপজেলা যুবদলের সভাপতি মকছুদল আলম নিরু গত তিন মাস পূর্বে সকল ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড কমিটি বিলুপ্তি ঘোষনার মাধ্যমে সকল এলাকায় কৃত্রিম শূন্যতা সৃষ্টি করে। গুরুত্বপূর্ণ পদ প্রত্যাশিদের কাছ থেকে পকেট কমিটি দেওয়ার জন্য মোটা অংকের অর্থ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। টাকা দিতে দিতে সাধারণ নেতা কর্মীরা ফেরাশন হয়ে নিস্বক্রিয় হয়ে গেলে ও অদ্যবধি কোন ইউনিয়ন কমিটি ঘোষণা করা হয় নাই বলে জানালেন ইউনিয়ন যুবদলের নেতা কর্মীরা। যার কারনে আন্দোলনে থাকা রাজপথের নেতা কর্মীদের মনে ব্যাপক সন্দেহের অবকাশ সৃষ্টি হওয়ায় শেষ পর্যন্ত অনেকে নিস্বক্রিয় হয়ে গুটিয়ে রয়েছেন। যার পুরোদমে সুযোগ নিচ্ছে আ.লীগ। তৃণমূলের নেতা কর্মীরা জানিয়েছেন, মহেশখালী বিএনপির সভাপতি এড. নুরুল আলমকে অবসর দিয়ে নতুন করে যদি উপজেলা বিএনপির কমিটি ঢেলে সাজানো না হয় নিশ্চিত ভবিষ্যতে মহেশখালীতে বিএনপির কোন কর্মী খোঁজে পাওয়া যাবে না। হারিয়ে যাবে দেশের বৃহত্তম সংগঠন বিএনপি মহেশখালী থেকে। এ বিষয়ে মহেশখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতি এড. নূরুল আলমের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হয় নাই।
জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এডভোকেট শামীম আরা স্বপ্নার সাথে যোগাযোগ করা তিনি এসব বিষয়ে জানতে মহেশখালী উপজেলা বিএনপির সভাপতির সাথে যোগাযোগ করতে প্রতিবেদককে পরামর্শ দেন।
এ সব বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে কক্সবাজার জেলা বিএনপির সভাপতি সাবেক সাংসদ আলহাজ্ব শাহাজাহান চৌধুরী বলেন, অবৈধ সরকারের রোষানলে পড়ে মাঠ পর্যায়ের নেতারা গা- ঢাকা দিয়েছিল, উপজেলা বিএনপির সভাপতি এড. নুরুল আলমের অবহেলার কারনে মহেশখালী উপজেলা বিএনপি ঝিমিয়ে পড়েছে বলে অবহিত করা হলে তিনি বলেন দলকে চাঙ্গা করার জন্য শুক্রবার মহেশখালীতে যাচ্ছি আমিসহ জেলা বিএনপির নেতারা। সে খানে গেলে দলের কি অবস্থা বুঝব।


শেয়ার করুন