জোহাকে সুস্থ ফিরে পেতে সরকারের কাছে স্ত্রীর অনুরোধ

„ywwwyvwvywসিটিএন ডেস্ক:
‘সাইবার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞ’ তানভীর হাসান জোহাকে সুস্থ ফিরে পাওয়ার জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁর স্ত্রী ডা. কামরুন্নাহার চৌধুরী। গত বুধবার দিনগত রাতে রাজধানীর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা থেকে তানভির হাসান জোহাকে অপহরণ করা হয় বলে অভিযোগ করেন তাঁর স্ত্রী।
গতকাল বৃহস্পতিবার জোহার স্ত্রী ডা. কামরুন্নাহার চৌধুরী সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওর (জোহা) এক বন্ধুর মাধ্যমে জানতে পারি যে ওরা দুজন এক সাথে সিএনজিতে (সিএনজিচালিত অটোরিকশা) করে ক্যান্টনমেন্ট এলাকা দিয়ে আসছিল। এ সময় ওদের সিএনজির দুই পাশে দুটি গাড়ি থেমে ওদের দুজনকে আলাদাভাবে নিয়ে যায় কালো কাপড় মুখে পেচিয়ে। তারপর সেই বন্ধুকে একটা জায়গায় নামিয়ে দিয়ে তারা চলে যায়।’
নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করতে গেলে পুলিশ তা গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেন তানভির জোহার স্ত্রী।
ডা. কামরুন্নাহার চৌধুরী বলেন, ‘রাতে আমরা কলাবাগান থানায় গিয়েছি। তাঁরা বললেন সেটা ওনাদের জোন না। ওনারা জিডি নিতে পারবেন না। আমরা সকাল বেলা কাফরুল থানায় গেলাম। ওনারাও কোনো পজেটিভ রেসপন্স করলেন না এ ব্যাপারে। তাঁর (জোহা) নিখোঁজে আমরা সবাই উদ্বিগ্ন। মানসিকভাবে সবাই বিপর্যস্ত। আমি সবার কাছে আকুল আবেদন জানাচ্ছি, আমি যেন আমার স্বামীকে সুস্থভাবে যেন ফিরে পাই।’
বৃহস্পতিবার রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খাঁন কামালের কাছে জোহার নিখোঁজ হওয়ার বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকরা। সে সময় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘ও (জোহা) যদি আটক হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই তাকে রিলিজ করা হবে, কিংবা কোর্টে সোপর্দ করা হবে। তো এই মুহূর্তে আমরা যেটা বলতে চাই, যারা প্রযুক্তির সঙ্গে জড়িত, আমাদের ধারণার জন্য তাদেরকেও আটক করা হচ্ছে। আর আপনারা জানেন তানভির কিছু কথা বলেছিল, আপনারা নিশ্চয় জানেন সেটা। সেই কথাগুলো জানার জন্য হয়তো তাকে আটক করা হতে পারে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরির বিষয়ে তানভীর নিজেকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের সাইবার নিরাপত্তা বিষেশজ্ঞ পরিচয় দিয়ে গণমাধ্যমে মতামত দিয়েছিলেন। তবে আইসিটি বিভাগ জানায় তানভীরের সঙ্গে আইসিটি বিভাগের কোনো সম্পর্ক নেই।
তবে ১৫ মার্চ একটি গণমাধ্যমের কাছে জোহা দাবি করেন, ‘আমি রাষ্ট্রায়ত্ত কোনো একটি ছায়া তদন্তকারী সংস্থার হয়ে কাজ করছি। বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোযোগ প্রযুক্তি বিভাগ থেকে গত অর্থবছরে সাইবার নিরাপত্তা নামের একটি কর্মসূচি নেওয়া হয়। যে কর্মসূচিতে আমি আমার এনজিও ইনসাইট বাংলাদেশ ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে কর্মসূচিটির ফোকাল পয়েন্ট কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত ছিলাম। যেহেতু এটা একটি সচেতনতা মূলক কর্মসূচি, এখানে আমি এর আগে বাংলাদেশের বিভিন্ন স্পর্শকাতর সাইবার অপরাধ বিষয়ে যেসব কর্মকা- হয়েছে সেসব বিষয় আমি রাষ্ট্রয়ত্ত গোয়েন্দাতে অনুরোধের কারণে কাজ করেছি। সেসব মামলা চলমান। তাই বিভিন্ন মিডিয়াতে আমাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সাইবার নিরাপত্তা দায়িত্বশীল ব্যক্তি হিসেবে জানেন। তবে এ ব্যাপারে আমি সচেতন ছিলাম। পরিচয় নিয়ে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে।’
জোহা আরো বলেন, ‘অনেক গণমাধ্যম আমাকে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের দায়িত্বশীল কর্মকর্তা হিসেবে জানত। এখন যে ব্যাপারটা হয়েছে, সেটা হচ্ছে মূলত আমি এই তদন্ত শুরু করতে গিয়ে অনেক বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছি এবং কিছু অপ্রিয় সত্য কথা মিডিয়াতে প্রকাশ করেছি। এ জন্য আমার মনে হয়, আমার তদন্তকে প্রশ্নবিদ্ধ করার জন্য উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে অনেকে অনেক মহল থেকে এটি করতে পারে।’


শেয়ার করুন