জেলা কারাগারের ২ রক্ষীর বিরুদ্ধে ৯০ আইনজীবীর অভিযোগ

downloadএম.শাহজাহান চৌধুরী শাহীন:
কক্সবাজার জেলা কারাগারের অনিয়ম ও দুর্নীতি কিছুতেই থামছে না। ঘাটে ঘাটে টাকা দিয়ে দাগি অপরাধীরা নিয়ন্ত্রণ করছে কারাগারের সবকিছু। উন্নত খাবার, স্বজনদের একান্ত সাক্ষাৎ, অভিজাত জীবনযাপন, সুস্থ হয়েও হাজতি-কয়েদিদের মাসের পর মাস হাসপাতালে অবস্থানসহ এসবই অপরাধ চলছে অহরহ। টাকার জোরেই কুখ্যাত দাগি সন্ত্রাসী, ইয়াবা ব্যবসাযী, মানব পাচারকারী, চোরাচালানি এমনকি মাদক ব্যবসায়ীরাও কারাগারে বিলাসী জীবনযাপন করছে। কারাগারে বসেই হচ্ছে বড় বড় অপরাধ পরিকল্পনা। এসব অভিযোগের শেষ নেই। এবার নতুন করে অভিযোগ উঠেছে দুইজন কারারক্ষী বিভিন্ন মামলার দুর্ধর্ষ হাজতি ও কয়েদিরে জামিন করে দেয়ার নামে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার। এসব অভিযোগে খোদ কক্সবাজার জেলা আইনজীবি সমিতির ৯০ জন আইনজীবি স্বাক্ষরিত একটি লিখিত অভিযোগ গত ৩ নভেম্বর জেলা প্রশাসকসহ উর্ধবতন কর্তৃপক্ষের নিকট দায়ের করা হয়েছে। এঘটনায় জেলাকারা অভ্যন্তরে তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।
অভিযোগে জানা যায়, জেলা কারাগারে কর্মরত কারারক্ষী ইমাম হোসেন ( কারা রক্ষী নং-২৩৪৪) ও কারারক্ষী আল আমিন বিভিন্ন আইনজীবীদের কাছে পেন্ডিং মামলা তাদের পছন্দমতো আইনজীবীর কাছে নিয়ে মামলা জামিনের জন্য তদবীর করার কারণে আইনজীবীদের মাঝে এবং হাজতিদের ও তাদের আত্মীয় স্বজনদের সাথে প্রতিনিয়ত মারামারি ও বিচার শালিস হচ্ছে।
এ কারারক্ষীদ্বয় মামলা জামিন করানোর আশ্বাস দিয়ে হাজতি ্র কয়েদিদের আত্মীয় স্বজনদের কাছ থেকে লাখ লাখ নিয়ে আত্মসাৎ করেও আসছে বলে অভিযোগ।
সুত্র মতে, কারারক্ষী ইমাম হোসেন ও আল আমিন প্রায় সময় আদালত প্রাঙ্গনে এসে মামলা তদবির করে এবং তাদের নিয়োজিত আইনজীবীদের চেম্বারেও সেখানে তাদের উৎপাত চোখে পড়ার মতো।
এরা অনেক সময় জেলা আইনজীবি সমিতির অনেক সদস্যের সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়ার দৃষ্টতাও দেখিয়েছে ইতোপূর্বে। এমন কি বিভিন্ন মামলা তারা পরিচালনা করার কথা বলে জামিন আবেদন না করার জন্যও বিভিন্ন আইনজীবিকে হস্তক্ষেপ করে আসছে।
এমনও অভিযোগ রয়েছে, কারারক্ষী ইমাম হোসেন ও আল আমিন আইনজীবীদের সাথে প্রকাশ্যে বাকবিতন্ডা ও তর্কে জড়িয়ে পড়ে। ইতোপূর্বে এ ধরনের ঘটনা আদালত চত্বরে অনেক আইনজীবি ও আইনজীবী সহকারী তাদের নিবৃত্ত করেছে। অনেক হাজতির জামিনের টাকা তাদের কাছে জমা রাখে। এই কারারক্ষীরা দীর্ঘদিন ধরে জেলা কারাগারে বন্দি নারী নির্যাতন, মানবপাচার মামলা, বড় চালানের ইয়াবা আটক মামলার হাজতিদের কাছ থেকে বা হাজতিদের আত্মীয় স্বজনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে লাখ লাখ টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগও উঠেছে।
কারাগারে মোবাইল ফোন ডুকার নিয়েধাজ্ঞা থাকলেও কারারক্ষীরা তা মানছে না। এরা জেলা কারাগারের ভেতর মোবাইল ডুকিয়ে টাকার বিনিময়ে হাজতি ও কয়েদিদের আত্মীয় স্বজনদের সাথে ঘন্টার পর কথা বলার সুযোগ করে দিচ্ছে। জামিন অযোগ্য ব্যক্তিগণকে জামিন করিয়ে দিতে পারে বলে এমন সব কথা আদালত হাজতে আনা হাজতিরা বলাবলি করতে শুনা যায়। কারারক্ষীরা মামলা নিয়ে দালালিপনা করায় ও এধরনের কর্মকান্ডের কারণে কারারক্ষী বাহিনীর ব্যক্তিগত পারফরমেন্স ও ভাবমুর্তি চরম ভাবে ক্ষুন্ন করছে বলে জানা যায়।
জরুরী ভিত্তিতে তাদের কিবরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণসহ তাদের বদলির দাবী জানিয়ে গতকাল ৩ নভেম্বর কক্সবাজার জেলা আইনজীবী সমিতির পক্ষে এড.নাজিবুল আলম নজিব, এড. মুহাম্মদ নুরুল ইসলাম,এড. সলিম উল্লাহ বাহাদুর, এড. রফিকুল আলমসহ ৯০ জন আইনজীবি স্বাক্ষর করে জেলা প্রশাসক বরাবর লিখি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগটি জেলা প্রশাসক ছাড়াও আইজিপি প্রিজন, ডিআইজি প্রিজন, জেলা সুপার ও পুলিশ সুপারের নিকটও অনুলিপি দেয়া হয়েছে।


শেয়ার করুন