পেকুয়ায়

জেডিসি পরিক্ষার্থীর চুক্তিনামায় সই করলেন খোদ চেয়ারম্যান!

downloadপেকুয়া প্রতিনিধি :

পেকুয়ায় জুনিয়র দাখিল সার্কিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার্থী খাদিছা বেগম(১৪) এর বাল্য বিয়ের চুক্তিনামায় দস্তখত করেছেন ইউপির খোদ চেয়ারম্যান। সম্প্রতি ওই শিক্ষার্থীকে বিয়ের পিঁড়িতে বসাতে অআনুষ্টানিক এনগেজমেন্ট সম্পাদন হয়েছে। বিয়ের দিনক্ষন চুড়ান্ত হয়েছে। চলমান জেডিসি পরিক্ষা শেষে তাকে বরের হাতে তুলে দেওয়া হবে। এলক্ষ্যে কনে ও বর পক্ষ আনুষ্টানিক বিয়ের জন্য চুড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছেন। মেয়ে ও ছেলের কাবিন, স্বর্নালংকার, কাপড় চোপড়, আসবাবপত্র ছাড়াও ছেলেকে মেয়ে পক্ষ যৌতুক হিসেবে এক লাখ দশ হাজার টাকা দেওয়ার সিদ্ধান্ত পাকা পোক্ত হয়েছে। সমঝোতা হিসেবে বিয়ের ঠিকফর্দ নিষ্পত্তি হয়েছে। চুক্তিনামায় দু’পক্ষের অভিভাবক, গন্যমান্য ব্যক্তি স্বাক্ষি হিসেবে অর্ন্তভুক্ত হয়েছেন। ওই চুক্তিনামায় বরের এলাকার চেয়ারম্যানও সাক্ষি হিসেবে সই করেছেন। এনিয়ে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে।

অপরদিকে মেধাবী ওই শিক্ষার্থীর বয়স গোপন করে তাকে বিয়ে উপযুক্ত দেখিয়ে তার কাবিননামা সম্পাদন করা হয়েছে। স্থানীয় ইউপি কার্যালয় তথ্য গোপন করে জন্ম নিবন্ধন সনদ সরবরাহ করে। একই ভাবে টইটং ইউনিয়নের দায়িত্ব প্রাপ্ত নিকাহ রেজিষ্ট্রার (কাজি) মাহমুদুল হক ও তার সহকারী রাজাখালী পালাকাটা এলাকার জামায়েত নেতা মাহামুদুল করিম গোপনে মোটা টাকা হাতিয়ে নিয়ে কাবিন সম্পাদন করেন।

জানা গেছে খাদিছা বেগম (১৪) পেকুয়া উপজেলার বারবাকিয়া ইউনিয়নের দক্ষিন সবজীবন পাড়া এলাকার নুরুল আমিনের মেয়ে ও বারাইয়াকাটা ফাজিল মাদ্রাসার অষ্টম শ্রেণীর অধ্যয়নরত নিয়মিত ছাত্রী। সে চলতি ২০১৫সালের অনুষ্টিত জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার্থী। আনোয়ারুল উলুম মাদ্রাসা কেন্দ্রে ওই শিক্ষার্থী এ পর্যন্ত অনুষ্টিত জেডিসির সবকটি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। অপরদিকে তাকে বাল্য বিয়ের পিড়িতে বসাতে বাধ্য করছেন তার পিতামাতা। শিক্ষার অধিকার থেকে বঞ্চিত করে বিয়ে করতে রাজি নন ওই ছাত্রী। কিন্তু বাধ সাঁেধ তার মাতাপিতার অজ্ঞতার কারনে।

স্থানীয় সুত্রে জানাগেছে খাদিছা একজন মেধাবী শিক্ষার্থী। তার হবু বরের নাম মো.রিদুয়ানুল হক(২৮)। তিনি চট্টগ্রাম জেলার বাশখালী উপজেলার ছনুয়া ছালেহ আহমদ সিকদার পাড়ার মৃত.নুরুল হকের পুত্র। পেশায় একজন লবন চাষী। গত ৬অক্টোবর রাতে ওই ছাত্রীর কাবিন সম্পাদন হয়েছে। মোট মোহরনা ৪লক্ষ টাকা।
খাদিছার পিতা নুরুল আমিন জানিয়েছেন সবাইকে ম্যানেজ করে আমার বিয়ে দিচ্ছি। মেয়ে জেডিসি পরিক্ষা দিলেও বিয়ের উপযুক্ত বয়স হয়েছে। বিয়ের বিষয় নিয়ে বাড়াবাড়ি করা আপনাদের ঠিক হবেনা।

এ ব্যাপারে টইটং নিকাহ রেজিষ্ট্রার মাহমুদুল হক এর মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
এব্যাপারে জানতে চাইলে বারাইয়াকাটা ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ ও বারবাকিয়া ইউপির চেয়ারম্যান এ.এইছ.এম বদিউল আলম জিহাদি কোন ধরনের মন্তব্য না করে কৌশলে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।

বাঁশখালী উপজেলার ছুনয়া ইউপির চেয়ারম্যান রেজাউল হক চৌধুরী জানিয়েছেন ছেলে আমাকে দাওয়াত দেন। আমি এনগেজমেন্টে ছিলাম। ঠিক ফর্দে সইও করেছি। পরে অবশ্যই জেনেছি মেয়েটি এবারে জেডিসি পরিক্ষা দিচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমি পেকুয়ার ইউএনও’র সাথে কখা বলেছি।

এব্যাপারে পেকুয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.মারুফুর রশিদ খান বলেন আমি শুনেছি যদি ওই শিক্ষার্থীর কাবিননামা সম্পাদন হয়ে থাকে সেটি অত্যান্ত অন্যায়। অবশ্যই আমি কাজির বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেব।


শেয়ার করুন