জীবনঘনিষ্ট সাহিত্য মানুষকে কাছে টানে-জেলা প্রশাসক

downloadবার্তা পরিবেশক:
কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মো. আলী হোসেন বলেছেন, জীবনঘনিষ্ট সাহিত্যই মানুষকে কাছে টানে। তাই জীবনঘনিষ্ট সাহিত্য চর্চার মাধ্যমে মানুষকে বই মুখো করতে কবি-সাহিত্যিকদের দায়িত্ব নিতে হবে। পাশাপাশি ভবিষ্যৎ প্রজন্ম শিশুদের সুকুমার বৃত্তির বিকাশে কবি-সাহিত্যিকদের কাজ করতে হবে। এসব সৃজনশীল কাজে যেকোনো সময় আমাকে আপনাদের পাশে পাবেন।
১৩ এপ্রিল ২০১৬ বুধবার বিকালে কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি সাংবাদিক-লোকগবেষক মুহম্মদ নূরুল ইসলামের নেতৃত্বে সাহিত্য একাডেমীর একটি প্রতিনিধিদল জেলা প্রশাসকের সাথে সৌজন্য সাক্ষ্যাৎকালে তিনি এসব কথা বলেন।
জেলা প্রশাসকের চেম্বারে সাক্ষ্যাৎকালে একাডেমীর প্রতিনিধিদলে অন্যদের মধ্যে ছিলেন সাধারণ সম্পাদক কবি রুহুল কাদের বাবুল, স্থায়ী পরিষদের সদস্য গবেষক নূরুল আজিজ চৌধুরী, কবি অধ্যাপক দিলওয়ার চৌধুরী, সহকারী সাধারণ সম্পাদক ছড়াকার জহির ইসলাম, নির্বাহী পরিষদ সদস্য কক্সবাজার সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক গল্পকার সোহেল ইকবাল, রাজাপালং কামিল মাদরাসার আরবি বিভাগের প্রভাষক একাডেমীর সদস্য রহমত সালাম ও নাইক্ষ্যংছড়ি হাজী আবুল কালাম কলেজের ইংরেজি বিভাগের প্রভাষক একাডেমীর সদস্য হাসান আহমদ সোবহানী প্রমুখ।
জেলা প্রশাসক বলেন, বিগত শতকের নব্বই দশকের পর থেকে দেশের সাহিত্য চর্চায় খরা দেখা দিয়েছে। মানুষ বই থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে। পূর্বে মানুষ চিঠিপত্র লেখালেখির মাধ্যমে সাহিত্য চর্চা করতো কিন্তু কম্পিউটার ও মোবাইল হাতে আসার পরে মানুষ সেই চিঠি লেখা বন্ধ করে দিয়েছে। এ থেকে উত্তরণের উপায় হচ্ছে শিশুদের বই মুখী করা।
জেলা প্রশাসক কক্সবাজারে সাহিত্য চর্চার সাথে শিশুদের সম্পৃক্ত করার জন্য কর্মসূচী গ্রহণের জন্য সাহিত্য একাডেমীর প্রতিনিধিদলকে আহবান জানান।
সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলাম সম্প্রতি সমাপ্ত কক্সবাজার বই মেলা-২০১৬ এর সফল সমাপ্তির জন্য জেলা প্রশাসক এবং জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ধন্যবাদ জানান। একাডেমীর সভাপতি বলেন, কক্সবাজারে দীর্ঘদিন ধরে বই মেলা আয়োজনের সংস্কৃতি চালু ছিলো কিন্তু বিগত কিছুদিন পূর্বে এই বই মেলা আয়োজনে বন্ধ্যাত্ব নেমে আসে। মেলা আয়োজনের জন্যই মেলা। বই মেলা আয়োজনের প্রকৃত উদ্দেশ্য সম্পর্কে মানুষ জ্ঞাত ছিলো না। কিন্তু বর্তমান জেলা প্রশাসকের নেতৃত্বে যে সফল বই মেলার আয়োজন হয়েছে তা অতীতের সকল অর্জনকে ম্লান করে দিয়েছে। একাডেমীর সভাপতি বলেন শুধু মাত্র জেলা প্রশাসক ও জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তার সার্বক্ষণিক মনিটরিং-এর কারণেই এবারের মেলায় ৪০ থেকে ৫০ লক্ষ টাকার বই বিক্রি হয়েছে।
জেলা প্রশাসকের উদ্দেশ্যে সাহিত্য একাডেমীর সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলাম আরো বলেন, ২০০১ সালে কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমী প্রতিষ্ঠার পর থেকে এযাবৎ একাডেমী ৭০টি বই, একাডেমীর মুখপত্র সমুদ্র সংলাপ-এর ২০টি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে এবং পাক্ষিক সাহিত্য আড্ডার সাহিত্যপত্র প্রকাশ করেছে একাধিক সংখ্যা। জেলার ঝিমিয়ে পড়া সাহিত্যচর্চাকে বেগবান করার জন্য একাডেমী কাজ করছে। একাডেমী কারো অনুদান বা অনুগ্রহের জন্য কাজ করছে না। তিনি আরো বলেন, শিশুদের বাইমুখী ও সাহিত্য মুখী করার জন্য একাডেমী স্কুল পর্যায়ের কর্মসূচী শুরু করেছে। এই কর্মসূচী পর্যায়ক্রমে পুরো জেরাব্যাপী ছড়িয়ে দেওয়া হবে। এসব কর্মসূচী বাস্তবায়নে একাডেমী শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো সহযোগী কামনা করছে।

বাংলা নববর্ষ পালনে একাডেমীর কর্মসূচী
আগামী ১৪ এপ্রিল ২০১৬, ১লা বৈশাখ বৃহস্পতিবার বিভিন্ন কর্মসূচীর মাধ্যমে কক্সবাজার সাহিত্য একাডেমী বাংলা নববর্ষ পালন করবে। এউপলক্ষে গৃহীত কর্মসূচীর মধ্যে রয়েছে আলোচনা সভা ও কবিতা পাঠ। ১৪ এপ্রিল সকাল ৯টায় কক্সবাজার প্রেসক্লাবে আলোচনা সভ ও কবিতা পাঠের আসর অনুষ্ঠিত হবে। আসরে একাডেমীর সংশ্লি¬ষ্ট সকলসহ জেলার কবি-সাহিত্যিক, সাহিত্যামোদি, সাহিত্যানুরাগী, চিন্তাশীল গবেষক, বুদ্ধিজীবীসহ সকলকে যথাসময়ে উপস্থিত থাকার জন্য একাডেমীর সভাপতি মুহম্মদ নূরুল ইসলাম ও সাধারণ সম্পাদক কবি রুহুল কাদের বাবুল আহবান জানিয়েছেন।


শেয়ার করুন