জরিমানায় ‘জায়েজ’ পাহাড় কাটা

কক্সবাজারের খুরুশকুল নতুন ঘোনা এলাকায় কেটে ফেলা হয়েছে বিশাল এই পাহাড়। গত ১০ অক্টোবর দুপুরে।কক্সবাজারের খুরুশকুল নতুন ঘোনা এলাকায় কেটে ফেলা হয়েছে বিশাল এই পাহাড়। গত ১০ অক্টোবর দুপুরে।

প্রথম আলোঃ
পাহাড় কাটার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে আছেন রাজনৈতিক নেতা, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, সদস্যসহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা।

চকরিয়ার খুঁটাখালীর ফুলছড়ি। এখানে একটি পাহাড় কাটা হচ্ছিল এক বছরের বেশি সময় ধরে। গত জানুয়ারিতে পরিদর্শন করে কক্সবাজার পরিবেশ অধিদপ্তর। তখন ২ লাখ ৮ হাজার ঘনফুট পাহাড় কাটা হয় বলে প্রতিবেদন দেন অধিদপ্তরের পরিদর্শক মাহবুবুল ইসলাম। পরে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। তখনো ২০ ফুট উঁচু ছিল কিছু পাহাড়। পরে একই স্থানে আবার পাহাড় কাটার অপরাধে উপজেলা ভূমি কার্যালয় ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে ২০ হাজার টাকা জরিমানা করে।

এরপর ২২ জুলাই আবার পরিদর্শনে যান পরিদর্শক মাহবুবুল ইসলাম। তখন নতুন করে ১ লাখ ৬০ হাজার ঘনফুট পাহাড় কেটে জায়গাটি সমতল করে ফেলা হয় বলে প্রতিবেদন দেওয়া হয়। বিষয়টি পুনঃ তদন্তের আবেদন জানান বিবাদী। পরে ১০ অক্টোবর খুঁটাখালীতে গিয়ে অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক সংযুক্তা দাশ গুপ্তা দেখেন, সেখানে পাহাড় কেটে সমতল করে স্থাপনা নির্মাণ করা হয়েছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিরা সবাই প্রভাবশালী এবং স্থানীয় সাংসদ জাফর আলমের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

জরিমানা দিয়ে আবার পাহাড় কিংবা বনাঞ্চল ধ্বংস করার নজির কক্সবাজারের পিএম খালী ও খুরুশকুলসহ বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে। জেলার বিভিন্ন স্থানে পাহাড় কাটার জন্য গত এক বছরে শতাধিক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু জরিমানা দিয়ে আবার পাহাড় কেটেছেন তাঁরা। ফলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই পাহাড়গুলো রক্ষা করা যায়নি। পরিবেশ বিধ্বংসী এসব কাজের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বড় একটি অংশ রাজনৈতিক নেতা, উপজেলা চেয়ারম্যান, ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান, ইউপি সদস্যসহ স্থানীয় প্রভাবশালীরা।

৯ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়–সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় জানানো হয়, সারা দেশের মধ্যে কক্সবাজারে সবচেয়ে বেশি, ৫৯ হাজার ৪৭১ একর বনভূমি বেদখল হয়ে গেছে। সারা দেশে দখল হয়েছে ২ লাখ ৮৭ হাজার একর। এ স্থায়ী কমিটির সদস্য মো. জাফর আলম কক্সবাজারের চকরিয়া এলাকার সাংসদ। যাঁরা পাহাড় কাটায় সম্পৃক্ত, তিনি তাঁদের প্রশ্রয় দেন বলেও অভিযোগ আছে।

সাংসদ জাফর আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘একবার এক বা দুই লাখ টাকা জরিমানা করার পর আবার নোটিশ দেওয়ার সুযোগ কী থাকে? খুঁটাখালীতে আর পাহাড় কাটা হয়নি। তবে রেললাইনে মাটি দেওয়ার জন্য অনেক জায়গায় কিছু পাহাড় কাটা হয়েছে। আর যেহেতু এখানে আমি দলের প্রধান। তাই দলের কেউ এ ধরনের কাজ করলে তার দায় আমার ওপর বর্তায়। তা ছাড়া আমি সংসদীয় স্থায়ী কমিটিরও সদস্য।’

পাহাড় কাটার এ উৎসব মূলত শুরু হয় চট্টগ্রাম-কক্সবাজার ঘুমধুম রেললাইনকে কেন্দ্র করে। রেললাইনের গতিপথে পাহাড় পড়লে তা নির্ধারিত পরিমাপে কাটার জন্য পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমতি রয়েছে। কিন্তু এ সুযোগে যে যেমন পারছে, পাহাড় কেটে মাটি বিক্রির পাশাপাশি জমি সমতল করে স্থাপনা নির্মাণ করছে।

কক্সবাজার থেকে খুরুশকুল ইউনিয়নের আদর্শ গ্রাম। সেখানে গাছপালা কেটে প্রায় ৬০ ফুট উঁচু ও ১৫০ ফুট দৈর্ঘ্যের পাহাড়টির বড় অংশ সাবাড় হয়ে গেছে। এ ছাড়া পিএমখালী, ইসলামপুর, উখিয়া, চকরিয়া, চট্টগ্রামের সাতকানিয়া, লোহাগাড়াসহ বিভিন্ন স্থানে এভাবে নির্বিচারে পাহাড় কাটা চলছে। খুরুশকুল আদর্শ গ্রাম থেকে কিছুদূর এগোলে নতুন ঘোনার পাড়া। প্রায় ১৭০ ফুট উঁচু এবং লম্বায় প্রায় ৫০০ গজ দীর্ঘ পাহাড় কেটে সমতল করা হয়েছে। মো. ইসলাম, নুরুল আলম বহদ্দারসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে এ পাহাড় কাটার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

খুরুশকুলের সঙ্গে লাগোয়া পিএমখালী ইউনিয়ন। এখানে পাহাড় কাটছেন শেখ কামাল মেম্বার ও বাবুল। ইতিমধ্যে শেষ হয়ে গেছে ৭০ ফুট উঁচু পাহাড়টি। কেটে ফেলা হয়েছে শত শত গাছ। এর পাশে চৌধুরী পাড়ায় ৫০ ফুট উঁচু আরেকটি পাহাড়ের একাংশ বিলীন হয়ে গেছে গত দুই মাসে। সেখানে এখন মুরগির ফার্ম করা হয়েছে। অভিযোগ শাহাবুদ্দিন নামের এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে।

রেললাইনে মাটি দেওয়ার জন্য অনেক জায়গায় কিছু পাহাড় কাটা হয়েছে। আর যেহেতু এখানে আমি দলের প্রধান, তাই দলের কেউ এ ধরনের কাজ করলে তার দায় আমার ওপর বর্তায়।
মো. জাফর আলম স্থানীয় সাংসদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়–সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি

কক্সবাজারে ভবিষ্যতে পাহাড় থাকবে কি না, সংশয় প্রকাশ করে পরিবেশ অধিদপ্তরের পরিচালক মোহাম্মদ মোয়াজ্জম হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, রেললাইন প্রকল্পের জন্য কিছু পাহাড় নির্দিষ্ট পরিমাপে কাটার অনুমতি রয়েছে। কিন্তু এ সুযোগ নিয়ে সবাই পাহাড় কাটায় লিপ্ত রয়েছেন। তিনি বলেন, ‘জড়িতরা সবাই প্রভাবশালী। বেশ কয়েকজন জনপ্রতিনিধিকে জরিমানা ও নোটিশ দিয়েছি। নানাভাবে আমাদের চাপের মধ্যে রাখা হয়েছে।’

কক্সবাজারের সাতটি উপজেলার পাহাড়, টিলা, পাহাড়ি বন কাটা রোধে এবং সমুদ্রসৈকত রক্ষার বিষয়ে ৯ ডিসেম্বর রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) এক রিটের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে দেওয়া রুলে পাহাড়, পাহাড়ি বন, টিলাকে কোনো ধরনের পরিবর্তন, রূপান্তর, কাটা থেকে রক্ষার নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না, তা জানতে চাওয়া হয়েছে। মন্ত্রিপরিষদ সচিব, পরিবেশ সচিবসহ ২২ বিবাদীকে ওই রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

বেলার নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান প্রথম আলোকে বলেন, পাহাড় ও বন কাটার সঙ্গে জড়িত শ্রমিকদের গ্রেপ্তার বন্ধ করে মূল হোতাদের ধরা জরুরি। পাশাপাশি আইনের যথাযথ প্রয়োগ নিশ্চিত করা এবং দু-একজন পাহাড় কর্তনকারীকে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া না হলে তা বন্ধ হবে না। জরিমানা যথেষ্ট নয়। জরিমানা করে পাহাড় বেষ্টনী দিয়ে বনায়ন করতে হবে।

জরিমানা দিয়ে খালাস
পরিবেশ অধিদপ্তর দায়িত্ব শেষ করেছে পাহাড় কাটার বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে। পরিবেশ আদালতেও মামলা করছে। দেখা গেছে, একই স্থানে পাহাড় কাটার কারণে কয়েকবার জরিমানা করা হয়েছে। যাঁরা পাহাড় কাটছেন, তাঁরা জরিমানা দিয়ে আবারও পাহাড় কাটা অব্যাহত রেখেছেন। একসময় পুরো পাহাড়টি সমতল ভূমিতে পরিণত হয়ে যাচ্ছে।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজারের উপপরিচালক শেখ নাজমুল হক বলেন, ‘জরিমানা দিয়ে অনেকে মনে করে, তারা বৈধতা পেয়ে গেছে। আবার এসে পাহাড় কাটা শুরু করে। এদের ঠেকাতে হিমশিম খেতে হয় আমাদের।’

খুঁটাখালীর ফুলছড়ির পাহাড়টি কেটে সমতল হয়েছে এভাবেই। মো. সরোয়ার মাস্টার, আবদুস সালাম, হাসানুল ইসলাম ওরফে আদরসহ কয়েকজনের বিরুদ্ধে এ পাহাড় কাটার অভিযোগ।

কক্সবাজার সদরের ইসলামপুরের নাপিতখালী এলাকায় বিএনপিদলীয় চেয়ারম্যান আবুল কালামের বিরুদ্ধে ১২ লাখ ঘনফুট পাহাড় কাটার অভিযোগ ওঠে এক বছর আগে। তখন তাঁকে নোটিশ দেওয়া হয়। বিবাদীর আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি পুনঃ তদন্তে পাঠানো হয়। পরে গত মাসে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। কিন্তু এর মধ্যে পুরো পাহাড় উজাড় হয়ে সেখানে স্থাপনা উঠে গেছে।

করোনার জন্য ২৭ মার্চ থেকে সারা দেশে লকডাউন শুরু হয়। এ সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের কাজকর্ম ছিল কিছুটা স্তিমিত। কিন্তু পাহাড় কাটা থেমে ছিল না। জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৫২টি পাহাড় কাটার স্থান চিহ্নিত করেছে অধিদপ্তর। গত বছর তা ছিল ১০৫

খুরুশকুলের জালিয়া বাপের পাড়া এলাকার পাহাড়টি গত বছর কাটা শুরু হয়। ওই বছরের ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত ৭৫ হাজার ঘনফুট পাহাড় কাটা হয়েছিল। এ নিয়ে মামলা করা হয়। আবার চলতি বছরের ২৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ৯০ হাজার ঘনফুট পাহাড় কাটার প্রমাণ মেলে। স্থানীয় ইউসুফ, কায়সার ও জিয়াবুলের সম্পৃক্ত পেয়েছে অধিদপ্তর। তাঁদের জরিমানা করা হয়েছে। কিন্তু পাহাড়টি রক্ষা পায়নি।

এর পর গত ১৩ অক্টোবর জালিয়া বাপের পাড়া এলাকায় গিয়ে দেখা যায় পাহাড়টির এক পাশ এখন সম্পূর্ণ বিলীন। গাছপালা কেটে ফেলে রাখা হয়েছে।

চট্টগ্রামের লোহাগাড়ার চুনতিতে দুই বছর ধরে দুটি পাহাড় কেটে বিলীন করে ফেলার অভিযোগ রয়েছে তমা কনস্ট্রাকশন নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। তারা রেললাইন প্রকল্পে মাটি ভরাটের কাজ করছে। তাদের নোটিশ দিয়েছে পরিবেশ অধিদপ্তর। তবে তমার প্রকল্প ব্যবস্থাপক অনুমোদিত অংশে পাহাড় কাটা হচ্ছে বলে দাবি করেছেন।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ ও বনবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ কামাল হোসাইন প্রথম আলোকে বলেন, জরিমানা করে কখনো পাহাড় কিংবা বনাঞ্চল রক্ষা করা যাবে না। এর জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। জরিমানা দিয়ে এ অপরাধীরা মনে করে তারা বৈধতা পেয়ে গেছে। বন ও পাহাড় ধ্বংসের সঙ্গে জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীরা জড়িত। রোহিঙ্গারাও এর সঙ্গে জড়িত।

জড়িত জনপ্রতিনিধি ও প্রভাবশালীরা
করোনার জন্য ২৭ মার্চ থেকে সারা দেশে লকডাউন শুরু হয়। এ সময় পরিবেশ অধিদপ্তরের কাজকর্ম ছিল কিছুটা স্তিমিত। কিন্তু পাহাড় কাটা থেমে ছিল না। জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত ৫২টি পাহাড় কাটার স্থান চিহ্নিত করেছে অধিদপ্তর। গত বছর তা ছিল ১০৫।

পাহাড় কাটার অভিযোগে কক্সবাজারের ইসলামপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল কালামকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ ছাড়া রামুর রশিদনগরের চেয়ারম্যান মো. শাহ আলম, আওয়ামী লীগ নেতা হুমায়ুন তাহের চৌধুরী ওরফে হিমু, রামুর খুনিয়াপালং ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আবদুল মাবুদ, মিঠাছড়ির চেয়ারম্যান ইউনুছ ভুট্টু, চকরিয়ার উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদীর বিরুদ্ধে অবৈধভাবে পাহাড় কাটা এবং বালু উত্তোলন, ডুলাহাজারার ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিন, চকরিয়ার ফাসিয়াখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন, ইউপি সদস্য গিয়াস উদ্দিনসহ অন্তত ৫০ জনপ্রতিনিধি ও রাজনৈতিক নেতার বিরুদ্ধে পাহাড় ও বন উজাড়ের অভিযোগ রয়েছে।

জরিমানা করে কখনো পাহাড় কিংবা বনাঞ্চল রক্ষা করা যাবে না। এর জন্য কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। জরিমানা দিয়ে এ অপরাধীরা মনে করে তারা বৈধতা পেয়ে গেছে।

মোহাম্মদ কামাল হোসাইন, অধ্যাপক , চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়

চকরিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ফজলুল করিম সাঈদীর বিরুদ্ধে উপজেলার পাগলির বিল এলাকার ১০ একর জায়গায় অবৈধভাবে বালু উত্তোলন, গাছপালা কাটা এবং ছড়া ভরাটের অভিযোগ এনেছে পরিবেশ অধিদপ্তর। এর সঙ্গে ডুলাহাজারার ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল আমিনও জড়িত।

জানতে চাইলে ফজলুল করিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘বালু উত্তোলনের জন্য আমার কাগজপত্র আছে। তারা (পরিবেশ অধিদপ্তর) হয়তো তা পায়নি। এ ছাড়া ছড়াটা পানি না থাকায় এমনিতে ভরাট হয়ে গেছে।’

চকরিয়ার ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিনের বিরুদ্ধে পাহাড় ও গাছপালা কেটে ইটভাটা করার অভিযোগ রয়েছে। তাঁর মালিকানাধীন চকরিয়ার জি এল বি ব্রিকস ম্যানুফ্যাকচারকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করে পরিবেশ অধিদপ্তর। এ ছাড়া বন উজাড়ের দায়ে বন বিভাগের একটি মামলায় ২০১৪ সালে গিয়াস উদ্দিনকে আদালত ছয় মাসের কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেন।

গিয়াস উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ইটভাটা এখন বন্ধ রয়েছে। আর মামলার বিষয়টি আমার মনে নেই।’

যোগাযোগ করা হলে স্থানীয় সাংসদ জাফর আলম বলেন, ‘গিয়াসের বিরুদ্ধে ইটভাটার একটা অভিযোগ ছিল। আর কিছু আছে কি না আমি জানি না। আর উপজেলা চেয়ারম্যান (সাঈদী) এক জায়গা থেকে বালু উত্তোলন করার অনুমতি নিয়ে অন্য এলাকা থেকে বালু তুলছেন।’

  • ৯ অক্টোবর পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়–সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভায় জানানো হয়, সারা দেশের মধ্যে কক্সবাজারে সবচেয়ে বেশি, ৫৯ হাজার ৪৭১ একর বনভূমি বেদখল হয়ে গেছে। সারা দেশে দখল হয়েছে ২ লাখ ৮৭ হাজার একর

সাংসদ জাফর আলম চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আর সাঈদী সহসভাপতি ও গিয়াস উদ্দিন সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বে রয়েছেন।

উখিয়ার উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আলম ও ইউপি চেয়ারম্যান শাহ আলমকেও পাহাড় কাটার অভিযোগে নোটিশ দিয়েছিল পরিবেশ অধিদপ্তর। উখিয়ার তাইংখালী এলাকায় ইউপি সদস্য নুরুল হক, ছাত্রলীগ নেতা আলী আহমদ, স্থানীয় প্রভাবশালী মো. আলমগীর ফরহাদ, শাহ আলমগীর, ফরিদ আলমের বিরুদ্ধে পাহাড় কাটা ও বন উজাড়ের অভিযোগ রয়েছে।

চট্টগ্রামের প্রধান বন সংরক্ষক আবদুল আওয়াল সরকার প্রথম আলোকে বলেন, অনেকেই বনের জায়গা দখল করে রেখেছে। অনেক জায়গায় গাছপালা এবং পাহাড় কেটে ফেলেছে। মামলা ও ভ্রাম্যমাণ আদালতে জরিমানা করা হচ্ছে। সবচেয়ে বেশি কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগে বেদখল হয়েছে।


শেয়ার করুন