জঙ্গিবাদ প্রতিরোধে কোটি কণ্ঠে জাতীয় সংগীতের ডাক

2015_12_11_13_22_23_0u6vTTiVYg4lvMhyrwqR6sUGfzzLBw_originalসিটিএন ডেস্ক :

জঙ্গিবাদ প্রতিরোধের প্রত্যয় নিয়ে এবারের বিজয় দিবসে কোটি কণ্ঠে বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত গাওয়ার ডাক দিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ। ১৯৭১ সালে বর্বর পাকিস্তান বাহিনীর আত্মসমর্পণের ঐতিহাসিক ক্ষণ বিকেল ৪টা ৩১ মিনিটে বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বের বাঙালিদের একযোগে সমবেত কণ্ঠে জাতীয় সংগীতে অংশ নেয়ার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ওই দিন সকাল থেকে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতি বিজড়িত রাজধানীর ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হবে বিজয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং বিকেলে কনসার্ট ফর ফ্রিডম। এছাড়া বিকেলে দেশের তরুণ প্রজন্মকে আগামী বাংলাদেশের শপথ পাঠ করাবেন, একুশের জীবন্ত কিংবদন্তী লেখক, গীতিকার আব্দুল গাফফার চৌধুরী।

এ লক্ষে অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাতকে আহ্বায়ক, লেখক শিক্ষাবিদ জাফর ইকবালকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ডা. ইমরান এইচ সরকারকে সদস্য সচিব করে গঠন করা হয়েছে বিজয় দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটি। কমিটির উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন সাংবাদিক ও লেখক আবদুল গাফফার চৌধুরী।

গণজাগরণ মঞ্চ এক সংবাদ বিবৃতিতে জানিয়েছে, ২০১৩ সাল থেকেই সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে হয়ে আসা বিজয় উৎসবের ধারাবাহিকতায় এবছর ষোলোই ডিসেম্বরও বিজয় উৎসব উদযাপিত হবে।

বিবৃতিতে তারা বলেছে, ষোলোই ডিসেম্বর কেবল বাঙালির বিজয় দিবসই নয়, এর মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত হয় আমাদের সাহস, ত্যাগ আর দেশপ্রেমে প্রোজ্জ্বল দৃপ্ত সাহসিকতার এক অনন্য মশাল। স্বাধীনতার চুয়াল্লিশ বছরে বাংলাদেশ যেমন এগিয়ে এসেছে সামনে, তেমনি একাত্তরের পরাজিত শক্তির হিংস্র থাবা বারবার আক্রান্ত করেছে বাংলাদেশের অগ্রযাত্রাকে। একদিকে যেমন চলছে একাত্তরের কুখ্যাত যুদ্ধাপরাধীদের বিচার কাজ, কার্যকর হচ্ছে রাজাকারদের বিচার; তেমনি একাত্তরের মতোই মুক্তিযুদ্ধের পরাজিত শক্তি হত্যা করছে স্বাধীনতার স্বপক্ষের লেখক- প্রকাশকসহ মুক্তচিন্তক মানুষদের। তাই এবারের বিজয় দিবস উদযাপন হবে আরও সাহসী, আরও প্রাণবন্ত আরও বর্ণিল আয়োজনে।

বিবৃতিতে সকলকে আহ্বান জানিয়ে বলা হয়েছে, এবার কেবল লক্ষ কণ্ঠে নয়; কোটি কণ্ঠে বিশ্বব্যাপী জাতীয় সঙ্গীত গাইবেন সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে থাকা মুক্তিকামী সকল মানুষ। জাতীয় সঙ্গীতের পবিত্র সুরে বিশ্বব্যাপী প্রতিহত করবেন যুদ্ধাপরাধ, মৌলবাদ ও জঙ্গিবাদী অপশক্তিকে। শপথ নেবেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনাপ্রসূত শোষণমুক্ত, বৈষম্যহীন, অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য।

বিজয় দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটির ষোলোই ডিসেম্বরের বিজয় উৎসবের কর্মসূচিতে রয়েছে-
বেলা ১১টায় উদ্বোধন, সাড়ে ১১টা থেকে সাড়ে ৩টা বিজয়ের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান, বিকেল সাড়ে ৩টা থেকে ৪টা বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা, বিকেল ৪টা ৩১ মিনিটে বিশ্বব্যাপী কোটি কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশন, বিকেল ৪টা ৪০ মিনিটে- আগামী বাংলাদেশের শপথ। বিকেল ৪টা ৪৭ মিনিট থেকে সোয়া ৫টা পর্যন্ত স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শিল্পীদের কণ্ঠে মুক্তি সংগ্রামের গান, বিকেল ৫টা ২০ মিনিটে বিজয় আতশসজ্জা এবং বিকেল ৫টা ৪০ মিনিট থেকে রাত ১০টা পর্যন্ত বিজয় মঞ্চে জনপ্রিয় ব্যান্ডদলের অংশগ্রহণে কনসার্ট ফর ফ্রিডম।

সকালে বিজয় উৎসব ২০১৫ অনুষ্ঠানের উদ্বোধনীতে উদ্বোধক ও প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বিজয় দিবস উদযাপন জাতীয় কমিটির উপদেষ্টা পর্ষদের অন্যতম সদস্য সাবেক প্রধান বিচারপতি এবিএম খাইরুল হক। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এমিরেটাস অধ্যাপক ড. সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ.আ.ম.স আরেফিন সিদ্দিক, অধ্যাপক ড. অজয় রায় এবং মুক্তিযোদ্ধা ও ভাস্কর ফেরদৌসী প্রিয়ভাষণী।

বিজয় উৎসব ২০১৫-এ সারাদেশের সবাইকে জাতীয় পতাকা হাতে ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে সপরিবারে উপস্থিত থাকার আহবান জানানো হয়েছে গণজাগরণ মঞ্চের পক্ষ থেকে।


শেয়ার করুন