জঙ্গিদের মদতদাতাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না

143_120675প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, জঙ্গিদের মদতদাতাদের কাউকে ছাড় দেয়া হবে না। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে বক্তৃতা করার সময় একথা বলেন।জাতীয় সংসদে গোলাম দস্তগীর গাজীর (নারায়ণগঞ্জ-১) এক সম্পূরক প্রশ্নের জবাবে বুধবার জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনা বলেছেন, গুলশানে জঙ্গি হামলার মদতদাতা, পরিকল্পনাকারী, অর্থদাতা এবং পর্দার আড়ালে যারা রয়েছে তাদের খুঁজে বের করা হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, পর্দার অন্তরালে থেকে দেশি বিদেশি মদতদাতা, পরামর্শদাতা, পরিকল্পনাকারী ও যারা অস্ত্র-অর্থ দিচ্ছেন তাদের খুঁজে বের করা হবে। জঙ্গি তৎপরতা মোকাবেলায় আমরা বিদেশি সহায়তার আশ্বাস পেয়েছি। যেহেতু আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আমাদের পাশে আছে তাই জঙ্গি অপরাধীদের খুঁজে পাওয়া কঠিনত হবে না। এদের খুঁজে বের করা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।

তিনি বলেন, গুলশানের জঙ্গি হামলার ঘটনা তদন্ত চলছে। কয়েকজনকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। সন্দেহভাজনদের ভিডিও চিত্র প্রকাশ করা হয়েছে। এই অপরাধীদের শনাক্ত করতে পারলে আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে জানানোর আহ্বান জানান তিনি।

সরকারি দলের সদস্য মো. মনিরুল ইসলামের এক প্রশ্নের জবাবে শেখ হাসিনা বলেন, বর্তমান সরকার মহাকাশে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের কার্যক্রম গ্রহণ করেছে।

তিনি বলেন, আগামী ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বরে ‘বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট’সফলভাবে উৎক্ষেপিত হলে নির্দিষ্ট অরবিটার স্লট ১১৯ দশমিক ১ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমাংশে পৌঁছতে প্রায় ২ সপ্তাহের মত সময় লাগবে। সফল উৎক্ষেপণের পর স্যাটেলাইটের ‘ইন-অরবিট টেস্ট (আইওটি) সম্পন্ন করতে আনুমানিক ৩ মাস সময় লাগবে। সম্পূর্ণ ‘টেস্টিং মিসনিং’ শেষে ২০১৮ সালের এপ্রিল নাগাদ বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট পূর্ণাঙ্গভাবে বাণিজ্যিক কার্যক্রম করতে পারবে বলে আশা করা যায়।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট সফলভাবে উৎক্ষেপণের পর পর্যায়ক্রমিকভাবে বঙ্গবন্ধু-২ ও বঙ্গবন্ধু-৩ নামক আরও ২টি স্যাটেলাইট মহাকাশে প্রেরণের পরিকল্পনা সরকারের রয়েছে।

শেখ হাসিনা বলেন, স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণের ফলে সমগ্র বাংলাদেশের স্থল ও জলসীমায় নিরবচ্ছিন্ন টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচারের নিশ্চয়তা পাওয়া যাবে এবং স্যাটেলাইট টেকনোলজি ও সেবা প্রসারের মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটে মোট ৪০টি ট্রান্সপন্ডার থাকবে তার মধ্যে ২০টি বাংলাদেশের জন্য এবং ২০টি দেশের বাইরে ব্যবহার করে বিশেষতঃ মধ্যপ্রাচ্যের কোন কোন দেশসহ পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে ট্রান্সপন্ডার লীজের মাধ্যমে বৈদেশিক মুদ্রা আয় সম্ভব হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ ও সম্প্রচার সেবার পাশাপাশি টেলিমেডিসিন, ই-লার্নিং, ই-এডুকেশন, ‘ডিটিএইচ (ডাইরেক্ট টু হোম) প্রভৃতি সেবা প্রদান এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগে টেরিস্ট্রিয়াল অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হলে সারাদেশে নিরবচ্ছিন্ন যোগাযোগ ব্যবস্থা বহাল রাখা সম্ভব হবে। এছাড়া পরিবেশবান্ধব যোগাযোগ মাধ্যম হিসাবে ই-সেবা নিশ্চিত কর হবে।

শেখ হাসিনা বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট স্পেস টেকনোলজির জ্ঞান সমৃদ্ধ মর্যাদাশীল জাতি গঠনে অনবদ্য ভূমিকা রাখবে।

তিনি বলেন, বর্তমানে বিদেশী স্যাটেলাইটের ভাড়া বাবদ প্রদেয় বার্ষিক প্রায় ১৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার সাশ্রয়সহ বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের সুযোগ সৃষ্টি হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপণের ফলে বাংলাদেশের মানুষ এ সেবাসমূহ লাভ করবে।


শেয়ার করুন