চট্টগ্রামে শিশু সামিকে খুন সৎমা ও ভাইয়ের ‘প্ররোচনায়’

ctg--murdered-child_Samiসিটিএন ডেস্কঃ

হত্যাকাণ্ডের পাঁচদিন পর সৎমা বেবী আক্তার (৩৯), তার ১৬ বছর বয়সী শিশু রফিক (ছদ্মনাম) এবং  তার তিন বন্ধু, যাদের সবার বয়স ১৬ বছরের নিচে।

বুধবার রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে  বন্দর থানার এস মো. কামরুজ্জামান জানিয়েছেন।

তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, রফিক ও তার মায়ের উপর অন্য সৎ ভাইদের নির্যাতনের প্রতিশোধ নিতে এই হত্যাকাণ্ড ঘটানোর কথা আসামিরা স্বীকার করেছেন।

নিহত সামির বাবা ইলিয়াছের দুই স্ত্রী। সামি দ্বিতীয় স্ত্রীর তিন ছেলে এবং এক মেয়ের মধ্যে সবার ছোট। বড় স্ত্রী বেবী আক্তারের রফিক ছাড়াও আরও দুটি ছেলে-মেয়ে আছে।

গত ৭ অক্টোবর রাতে বন্দর থানার ধুমপাড়া বেড়ি বাঁধ এলাকা থেকে পুলিশ সামির লাশ উদ্ধার করে।

এসআই মো. কামরুজ্জামান জানান, প্রথমে সামির সৎ ভাই রফিককে আটক করা হয়। তার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মা বেবী ও অন্য বন্ধুদের গ্রেপ্তার করা হয়। এই ঘটনায় ব্যবহৃত ছুরিও উদ্ধার করা হয়েছে।

বন্দর থানার এসআই মো. জহির হোসেন বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন,“সামিকে হত্যা করার জন্য এক মাস ধরে পরিকল্পনা করছিল গ্রেপ্তারকৃতরা। এজন্য বেবী তাদের ২৫ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে অগ্রিম পাঁচ হাজার টাকা দেন।”

গ্রেপ্তারকৃতরা পুলিশকে বলেছেন, রফিকের সৎভাইয়েরা (সামির আপন ভাই) কয়েকমাস আগে তাকে, তার ভাইকে এবং মা নির্যাতন করেছিল। তখন সে তার প্রতিশোধ নিতে বন্ধুদের শরণ নেয়।

“বিষয়টি নিয়ে ইমতিয়াজের মা বেবী আক্তারও তাদের (গ্রেপ্তার অন্য তিনজন) সঙ্গে কথা বলে তার সৎ ছেলেদের মধ্যে কাউকে সরিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দেয়। সামির অন্য দুই ভাই বেশি বয়সী হওয়ায় তারা কাজের সুবিধার জন্য সামিকে বেছে নেয়,” বলেন এসআই কামরুজ্জামান।

তিনি বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী রফিকের এক বন্ধু সামির সঙ্গে বন্ধুত্ব গড়ে এবং গত ৫ অক্টোবর সে শিশুটিকে নিয়ে ধুমপাড়া বেড়ি বাঁধ এলাকায় গিয়ে অন্যদের ফোনে জানায়।

“খবর পেয়ে অন্যরা বেড়ি বাঁধে যায় এবং একসাথে বসে গল্প করার এক পর্যায়ে সামির গলা ও পা চেপে ধরে। শ্বাসরোধের পর সামির পেটে ছুরি চালিয়ে চলে যায়।”

হত্যাকাণ্ডের পর তারা আলামত নষ্ট করার জন্য ছুরিটি ধুমপাড়া কাঁচা বাজারের পশ্চিম পাশে একটি পুকুরে ফেলে দেয় বলে জানান পুলিশ কর্মকর্তা কামরুজ্জামান।

এসআই জহির বলেন, হত্যাকারীরা বয়সে কিশোর হলেও তারা পরিকল্পিতভাবে এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে। গ্রেপ্তারকৃতদের শনিবার আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।


শেয়ার করুন