চকরিয়া চিংড়িজোনের ত্রাস মোরশেদ খুন

চকরিয়া প্রতিনিধি :

চকরিয়া চিংড়িজোনের ত্রাস আলকোমাস বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড তার ছোট ভাই মোরশেদ আলম (২৫) প্রতিপক্ষের হাতে খুন হয়েছে। গতকাল রবিবার সকাল দশটায় চিরিঙ্গা ইউনিয়নের পালাকাটা রাবার ড্যামের পাশে একটি গর্ত থেকে তার জবাইকৃত লাশ চকরিয়া থানা পুলিশ উদ্ধার করে। নিহত যুবক ওই ইউনিয়নের ৭নং ওয়ার্ডের পশ্চিম সওদাগরঘোনা এলাকার জহির আহমদের ছেলে বলে জানা গেছে। লাশ উদ্ধারের পর ময়না তদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে।
নিহত মোর্শেদের বড় বোন মুর্শিদা বেগম জানান, তার ছোট ভাই মোর্শেদ আলম গত শনিবার রাত নয়টার দিকে বাড়ির পাশে একটি দোকানে ক্যারাম খেলছিলো। এসময় স্থানীয় কালা মনুর স্ত্রী ও তাদের আত্মীয় ইসমত আরা বেগম নামের এক মহিলা ক্যারাম খেলারত মোর্শেদকে কথা আছে বলে তার বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। তখন থেকে তাকে খুজে পাওয়া যাচ্ছিলো না।
গতকাল সকাল নয়টার দিকে রামপুর এলাকার কয়েকজন জেলে মাতামুহুরী নদীতে মাছ ধরতে গেলে রাবার ড্যামের পাশ্ববর্তী একটি গর্তে মোর্শেদ আলমের লাশ দেখতে পেয়ে তাদের আত্মীয়স্বজনকে খবর দেয়। পরে চকরিয়া থানা পুলিশ সকাল দশটার দিকে ওই স্থানে গিয়ে মোর্শেদের লাশ উদ্ধার করে। এব্যাপারে মুর্শিদা বেগম বাদি হয়ে স্থানীয় দেলোয়ার হোসেনের ছেলে জালাল উদ্দিন ও সামসুল আলমের ছেলে নাছিরউদ্দিনসহ আটজনকে আসামী করে চকরিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন বলে জানা গেছে। বাদি আরও জানান, তার ভাইকে ইসমত আরা বেগমের বাড়িতে ডেকে নিয়ে গেয়ে জবাই করে হত্যার পর গভীর রাতে তার লাশ রাবার ড্যামের গর্তে ফেলে দিয়েছে। ২০১৪সালে এলাকায় আধিপত্য নিয়ে একই ভাবে তার অপর ভাই খোরশেদ আলমকেও জালাল উদ্দিন ও নাছির উদ্দিন গংরা হত্যা করেছিলো।
স্থানীয় লোকজন জানান, চকরিয়া চিংড়িজোন এলাকায় আলকোমাস বাহিনী দীর্ঘদিন ধরে ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে আসছিলো। ওই বাহিনীর অত্যাচারে সাধারণ মানুষ ও চিংড়ি চাষিরা অতিষ্ট হয়ে পড়েছে। প্রায় সময় চাষীদের কাছ থেকে চাদাঁবাজি ও মাছ লুট নিত্যনৈমিত্য ব্যাপার হয়ে দাড়িয়ে ছিলো। এলাকার আধিপত্য বিস্তার নিয়ে আলকোমাসের ভাই খোরশেদ আলমকে হত্যা করে। এরপরও ওই বাহিনী চিংড়ি ঘের দখল, ডাকাতি, খুন খারাবী বন্ধ হয়নি। জনতার পিঠুনিতে বাহিনীর প্রধান আলকোমাস এলাকা ছাড়লেও এখনো আধিপত্য বিস্তার বন্ধ হয়নি তার বাহিনীর। একইভাবে আলকোমাস বাহিনীর সেকেন্ড ইন কমান্ড তার ছোট ভাই মোর্শেদ আলমকে গত রবিবার জবাই করে হত্যা করে প্রতিপক্ষের লোকজন। এই বাহিনীর বিরুদ্ধে চকরিয়া থানায় অর্ধশত মামলা রয়েছে।
চকরিয়া থানার ওসি জহিরুল ইসলাম খান জানান, সকালে খবর পেয়ে পুলিশ রাবার ড্যাম থেকে মোর্শেদের জবাইকৃত লাশ উদ্ধার করে। পরে ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে। এঘটনায় তার বোন আটজনের নাম উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছে বলে তিনি জানান। তিনি আরও জানান, জায়গা জমি সংক্রান্ত বিরোধ ও এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে প্রতিপক্ষের লোকজন এ হত্যাকান্ড ঘটাতে পারে।


শেয়ার করুন