বন বিভাগের জব্দ বালু ইউএনও’র নিলামে বিক্রি

চকরিয়ায় বালু বিক্রি বন্ধে ১৩ সরকারী কর্মকর্তাকে বেলা ও ইয়েস’র চিঠি

প্রেস বিজ্ঞপ্তিঃ
কক্সবাজারের চকরিয়ায় বন বিভাগের জব্দ করা অবৈধ বালু ইউএনও’র নিলামে বিক্রির সমস্ত কার্যক্রম বন্ধের অনুরোধ জানিয়ে দুই সচিব,কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাসহ ১৩ সরকারী কর্মকর্তা এবং স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যানকে চিঠি দিয়েছে পরিবেশবাদী সংগঠন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা) ও ইয়ুথ এনভায়রনমেন্ট সোসাইটি (ইয়েস)। মঙ্গলবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুই পরিবেশবাদী সংগঠনের পক্ষে ডাকযোগে তাদের আইনজীবি জাকিয়া সুলতানা এ চিঠি পাঠিয়েছেন।
চিঠিতে অবৈধ বালু উত্তোলনকারী ও বন, জলাশয়সহ সকল প্রাকৃতিক ধ্বংসকারীর কাছে নিলামে বালু বিক্রয় করা হবে না মর্মে ঘোষণা দিয়ে সিদ্ধান্ত প্রদান ও তা জনসম্মুখে প্রকাশের অনুরোধ জানানো হয়েছে।
যাদেরকে চিঠি পাঠানো হয়েছে তারা হলেন, ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের সচিব, বাংলাদেশ সচিবালয়ের সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যান, পরিবেশ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, প্রধান বনসংরক্ষক, কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক, কক্সবাজারের পুলিশ সুপার, পরিবেশ অধিদপ্তর চট্টগ্রাম
অঞ্চলের পরিচালক, বন্যপ্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের চট্রগ্রাম বিভাগীয় বন কর্মকর্তা,পরিবেশ অধিদপ্তরের কক্সবাজার জেলা কার্যালয়ের উপ-পরিচালক, চকরিয়া উপজেলা উপজেলানির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও), কক্সবাজার উত্তর বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা, চকরিয়া থানার ওসি এবং ডুলাহাজারা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান।

চিঠিতে বলা হয়েছে, কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার ডুলাহাজারা ইউনিয়নের রংমহল গ্রামের পাশে বগাচতর, রিংভং, ডুলহাজারা, উচিতার বিল, ফাসিয়াখালী মৌজাসমূহে রয়েছে ডাঙার বিল, রিংভং খাল, বগাছড়ি খাল, পাগলীর বিল ও উচিতার বিল নামক জলাধারসমূহ এবং সংরক্ষিত বনভূমি রক্ষায় এবং উল্লেখিত জলাধারসমূহে রয়েছে ৬টি- ডুলহাজারা ২, ডুলহাজারা ৩, ডুলহাজারা ৪, পাগলীর বিল, ফাসিয়াখালী ছড়া ১, ও ফাসিয়াখালী ছড়া-২ ঘোষিত বালুমহালসমূহ বিলুপ্তি ও ইজারা সংক্রান্ত সকল কার্যক্রম স্থগিত চেয়ে হাইকোর্ট বিভাগে গত ৪ এপ্রিল বেলা ও ইয়েস এর পক্ষ থেকে জনস্বার্থে একটি মামলা করা হয়।
মামলার প্রাথমিক শুনানী শেষে আদালত ২৬ এপ্রিল চকরিয়া উপজেলার বগাচতর, রিংভং, ডুলহাজারা, উচিতার বিল, ফাসিয়াখালী মৌজাসমূহে ৬টি বালুমহালকে বিধিবহির্ভূতভাবে তালিকাভুক্তকরণ ও জেলা প্রশাসক কর্তৃক ওই বালুমহালগুলো নতুন করে ইজারা দেওয়ার জন্য ১০ মার্চ জারিকৃত টেন্ডার পরিপত্র সংবিধান, বালু ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ও বিধিমালা বহির্ভূত হওয়ায় কেন অবৈধ, আইনগত কর্তৃত্ব বহির্ভূত ও জনস্বার্থ বিরোধী ঘোষনা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। সেইসাথে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের ফলে সংঘটিত ক্ষতির পরিমাণ নির্ণয় ও দোষীদের নিকট থেকে তা আদায়ের এবং বালু মহালগুলো ও প¦ার্শবর্তী জলাধার, টিলা, কৃষিজমি, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব সাফারি পার্ক এবং সংরক্ষিত বনভূমি রক্ষার নির্দেশ কেন বিবাদীগণকে দেয়া হবে না তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। একইসাথে আদালত বালুমহালগুলোর ঘোষিত তালিকা এবং ১০ মার্চের টেন্ডার পরিপত্রের কার্যকারিতা স্থগিত করেন।

চিঠির বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান বলেন, অবৈধ বালু উত্তোলনকারী ও বন ধ্বংসকারীর নিকট নিলামে বালু বিক্রয় সমগ্র দেশের অবৈধ বালু উত্তোলনকারীকে নিঃসন্দেহে অবৈধ বালু উত্তোলন ও প্রাকৃতিক সম্পদ ধ্বংসে উৎসাহিত করবে। বিতর্কিত এ নিলাম সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে সমন্বয় না থাকা ও স্থানীয় প্রশাসনের স্বেচ্ছাচারিতার বহির্প্রকাশ মাত্র। দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় ও জনস্বার্থ বিবেচনায় এ নিলাম চরমভাবে অগ্রহণযোগ্য।


শেয়ার করুন