চকরিয়ায় দু’পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে মহিলাসহ আহত ১৬

CHAKARIA PC 07-12-2015.নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া :
চকরিয়া পৌরসদরের আর্মী ক্যাম্প সংলগ্ন ঘনশ্যামবাজারের ১নং ওয়ার্ডে পানি চলাচলের একটি কালভার্ট ভরাট করে ওয়াল দেওয়াকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের মহিলা সহ ১৬জন গুরুতর আহত হয়েছে। আহতদের মধ্যে পৌর আওয়ামীলীগ নেতা আমির হোসেন মেম্বার তার পুত্র চকরিয়া কলেজ ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাজিফুল মোস্তফা ও পৌর আওয়ামীলীগ নেতা সায়েম মো: মুনিরের অবস্থা আশঙ্কাজনক। এদেরমধ্যে ইটের আঘাতে রাজিফের তিনটি দাত ভেঙ্গে গেছে। তাদেরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। এঘটনায় পুলিশ নুরুল কবির নামে একজনকে গ্রেফতার করেছে। গতকাল বিকাল তিনটায় চকরিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বাজারপাড়ার বটগাছতলী এলাকায় এ হামলার ঘটনা ঘটে।
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, চকরিয়া পৌরসভা ১নং ওয়ার্ড বাজারপাড়া ও বিমানবন্দর সড়কের মধ্যবর্তি এলাকায় পানি চলাচলের একটি কালভার্ট রয়েছে। এদিকে সদ্য আওয়ামীলীগে যোগদানকারী আওয়ামীলীগ নেতা ও ১নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর নুর হোসেন ওই কালভার্টের পাশে বাড়ি নির্মাণের জন্য দেওয়াল দিয়ে মাটি ভরাট করেছিলো। মাটি ভরাটের ফলে ওইস্থানে কালভার্ট দিয়ে পানি চলাচল বন্ধ হওয়ার আশঙ্কায় এলাকাবাসি ও ১নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগ নেতা আমির হোসেন মেম্বার গত ২৬নভেম্বর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার বরাবরে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে গতকাল সোমবার দুপুরে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: সাহেদুল ইসলাম ঘটনাস্থলে পরিদর্শনে যান। সেখানে তিনি কাউন্সিলর নুর হোসেনকে পানি চলাচলের জন্য নির্মিত কালভার্টের মুখে মাটি ভরাটের কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেন। এলাকাবাসি জানায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা পরিদর্শন শেষ করে চলে যাওয়ার কিছুক্ষণ পরে কাউন্সিলর নুর হোসেন ক্ষিপ্ত হয়ে ১৫-২০ জনের সশন্ত্র সন্ত্রাসী দা কিরিচ লোহার রড ও ইটপাটকেল দিয়ে নিয়ে ১নং ওর্য়াড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন মেম্বারের ওপর অর্তকিত হামলা চালায়। ওইসময় আমির হোসেন মেম্বারের লোকজনও পাল্টা হামলায়। ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে দু’পক্ষের ১৭জন গুরুতর আহত হয়েছে। খবর পেয়ে চকরিয়া থানা পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। উভয়পক্ষের হামলায় গুরুতর আহতরা হলেন ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আমির হোসেন মেম্বার (৬০), তার পুত্র কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি সাবেক সভাপতি রাজিফুল মোস্তফা (৩৫), পৌর আওয়ামীলীগ নেতা প্রভাষক সায়েম মো: মুনির (২৮), রাজা মিয়া (২৫), মো: সেলিম (৩৬), হানিফ (২২), রাসেল (২৮), বাবু (৮), পথচারী সামসুল আলম (৫০), জনোয়ারা বেগম (৩৪), কাউন্সিলর নুর হোসেনের পিতা আহমদ কবির (৬০), নুরুল কবির (৩৫)। আশঙ্কাজনক অবস্থায় রাজিফুল মোস্তফা তার ভাই সায়েম মো:মুনিরকে চট্টগ্রাম মেডিকেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সংঘর্ষে রাজিফুল মোস্তফার তিনটি ভেঙ্গে যায়। এঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে পুলিশ কাউন্সিলর নুর হোসেনের বড় ভাই নুরুল কবিরকে গ্রেফতার করেছে। স্থানীয় এলাকাবাসি মাষ্টার গিয়াস উদ্দিন জানান, কাউন্সিলর নুর হোসেন কালভার্টের মুখ বন্ধ করে মাটি ভরাট করেছিলো। বাধা দেওয়ায় সে সন্ত্রাসীদের নিয়ে এলাকাবাসির ওপর হামলায়। এতে গত ১৭নভেম্বর বিএনপি নেতা কাউন্সিলর নুর হোসেন আওয়ামীলীগে যোগদান করেন। তার বিরুদ্ধে নাশকতা, গাড়ি ভাঙচুর সহ ৭টি মামলা রয়েছে।
চকরিয়া থানার ওসি (তদন্ত) কামরুল আজম জানান, খবর পেয়ে দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আনা সহ আহতদের উদ্ধার করে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ঘটনায় জড়িত একজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে তিনি জানান। মামলার প্রস্তুতি চলছে।


শেয়ার করুন