চকরিয়ায় জমে উঠেছে কোরবানি গরুর হাট

দেশীয় জাতের গরুটির দাম সাড়ে তিন লাখ টাকা

Chakaria Pictur 19-09-2015নিজস্ব প্রতিনিধি, চকরিয়া :
চকরিয়ায় বিভিন্ন হাট-বাজার গুলোতে জমে উঠেছে কোরবানী গরু বিক্রি। এখানকার বাজার গুলোতে দেশীয় জাতের গরু উঠেছে প্রচুর পরিমাণ। ভারত বা মায়ানমারের পশুর চেয়েও দেশীয় জাতের চাহিদা বেশী রয়েছে সবার কাছে। তাছাড়া ছোট ও মাঝারি সাইজের গরুর দিকে ক্রেতারা ঝুকছেন বেশী। যতই কোরবানীর দিন ঘনিয়ে আসছে ততই পশু বিক্রি বাড়ছে বাজারে। আবার অনেকে অতিরিক্ত দামের কারণে পশু ক্রয় করতে সাহস পাচ্ছে না। গতকাল শনিবার চকরিয়া পৌরসভা কমিউনিটি সেন্টার মাঠে দেশীয় জাতের একটি গরুর হাকিয়েছেন সাড়ে তিন লাখ টাকা।
জানা গেছে, মুসলমানদের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব ঈদুল আযহা আগামী ২৫ সেপ্টেম্বর অনুষ্টিত হবে। এ উপলক্ষে উপজেলা ও পৌরসভার স্থায়ী ও অস্থায়ী ছোট-বড় ২২টি বাজারে চালু হয়েছে কোরবানী পশুর হাট। বিশেষ করে উপজেলার বড় কোরবানী পশুর হাট পৌরসভার ঘনশ্যাম বাজার, মগবাজার কমিউনিটি সেন্টার মাঠ, পৌর বাসটার্মিনাল মাঠ, বদরখালী বাজার, ইলিশিয়া জমিলা বেগম উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, বেতুয়াবাজার, ডুলাহাজারা, খুটাখালী বাজার, হারবাং উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ, বরইতলী গরু বাজারসহ অন্তত ১৫টি কোরবানী পশুর হাটে পশু বিক্রি হচ্ছে। এসব বাজার গুলোতে জমে উঠেছে গরু-ছাগল। পকেটমার ও ছিনতাইকারীর হাত থেকে রক্ষা পেতে এবার চালু করেছে বিকাশের মাধ্যমে টাকার লেনদেন। গতকাল শনিবার বিকালে চকরিয়া পৌরসভা কমিউনিটি সেন্টার পশুর হাটে বিকাশের মাধ্যমে টাকা লেনদেন করতে একটি সেবা কেন্দ্র চালু করেছে সংশ্লিষ্ট বাজার কর্তৃপক্ষ। তাছাড়া গত বছর পশুর হাট গুলোতে জাল টাকা সনাক্ত মেশিন বসিয়ে ছিলেন সোনালী ব্যাংক। কিন্তু এবারের পশুর হাটে জাল টাকা সনাক্ত মেশিন চোখে পড়ছে না। এতে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন ক্রেতা বিক্রেতারা। এছাড়াও ক্রেতা বিক্রেতাদের নিবির্ঘেœ করতে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। স্বেচ্ছাসেবীদের পাশাপাশি বিপুল পরিমাণ পুলিশ রয়েছে। সাদা পোশাক পরিহিত পুলিশও রয়েছে মাঠে। বাজার ইজারাদাররা জানিয়েছেন, গত বছর সোনালী ব্যাংক চিরিঙ্গা শাখার পক্ষ থেকে বাজারে জাল নোট সনাক্ত করতে মেশিন স্থাপন করলেও এবছর স্পর্শকাতর এ বিষয়টি দেখভালে উদ্যোগ নেয়নি কেউ। এতে করে বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মধ্যে জাল নোট আতঙ্ক দেখা দিয়েছে। এদিকে পশুর হাট গুলোতে ভারত ও মায়ানমারের গরুর চেয়েও দেশীয় জাতের গরু প্রচুর রয়েছে। দামে একটু বেশি হলেও দেশীয় গরুর চাহিদা রয়েছে ক্রেতাদের কাছে। ক্রেতারাও বেশীয় ঝুকছেন দেশীয় জাতের গরুর দিকে। গতকাল শনিবার পৌরসভা কমিউনিটি সেন্টার মাঠে দেশীয় উৎপাদিত একটি গরুর দাম হাকিয়েছেন সাড়ে তিন লাখ টাকা। গরুটির মালিক পৌরসভার কাহারীয়াঘোনার এলাকার সিকান্দার সওদাগর জানান, কোরবানী বাজারকে টার্গেট করে দীর্ঘদিন ধরে গরুটিকে লালন পালন করা হয়েছে। বর্তমানে গরুটির ওজন প্রায় ১৪মণ হবে। তিনি আরও বলেন সাড়ে লাখ টাকা দাম হাকানো হয়েছে। একজন ক্রেতা ২লাখ ২০হাজার টাকা পর্যন্ত চেয়েছেন। তিন লাখ টাকা দিয়ে গরুটি বিক্রির কথা জানান তিনি।
পৌরসভার অন্যতম বড়বাজার ঘনশ্যাম বাজারে গরু কিনতে আসা ক্রেতা চকরিয়া বিমানবন্দর সড়ক ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো.নুরুস শফি বলেন, বড় সাইজের একটি গরু কিনে একজনের পক্ষে কোরবানি দেওয়া প্রায় অসম্ভব। আমি নিজেও ছোট গরু নিয়ে কোরবানি দেব। কারন ৩০-৩৫ হাজার টাকায় দেশি জাতের ভাল মানের গরু পাওয়া যাচ্ছে।
উপজেলার বড় গরুর হাট ইলিশিয়া বাজার। পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়ন পরিষদ বাজারটি মনিটরিং করেন। ইউনিয়ন পরিষদের প্যানেল চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান ও ইউপি মেম্বার ইকবাল দরবেশি বলেন, ইলিশিয়া বাজার বিভিন্ন সাইজের প্রচুর গরু বেচাকেনা হচ্ছে। চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা বাজার থেকে কিনে গাড়িতে করে প্রতিদিন বিপুল পরিমাণ দেশি জাতের গরু নিয়ে যাচ্ছে।
চকরিয়া থানার ওসি প্রভাষ চন্দ্র ধরে বলেন, উপজেলার কোরবানী বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও জাল নোটের অপতৎপরতা ঠেকাতে পুলিশের একাধিক টিম মাঠে সার্বক্ষনিক কাজ করছে। টহল দলের পাশাপাশি সাদা পোশাকে পুলিশ সদস্যরা বাজার মনিটরিংয়ে রয়েছে। ##


শেয়ার করুন