দু’দেশের সাথে ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি সম্পর্ক উন্নয়ন

ঘুমধুম স্থল বন্দর পরিদর্শনে আসছেন, নৌ-পরিবহণ মন্ত্রী

pic-ukhiyacox-09032017এস.আজাদ,উখিয়া প্রতিনিধি।
মিয়ানমারের সাথে সীমান্ত বাণিজ্যের চাঁকা খুলতে যাচ্ছে। টেকনাফ স্থল বন্দরকে নৌ-বন্দরে রূপান্তর পাশাপাশি উখিয়ার পাশর্^বর্তী ঘুমধুম সীমান্তে স্থল বন্দর স্থাপনের পরিকল্পনা হাতে নিয়ে শুক্রবার সফরে আসছেন নৌ-পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খাঁন। ওইদিন সকালে কক্সবাজার থেকে গাড়ি যোগে রওয়ানা হয়ে মন্ত্রী ৮.৪৫মিনিটে ঘুমধুমে স্থল বন্দর এর জন্য নির্ধারিত জায়গা পরিদর্শন করবেন। এরপর কক্সবাজার-ঘুমধুম রেললাইন প্রকল্পের অধিগ্রহণ করা জায়গাও পরিদর্শন করার কথা রয়েছে মন্ত্রীর। পরবর্তী ঘুমধুম ইউনিয়নের বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক নির্মাণ কাজের গুণগত মান ও অগ্রগতি পরিদর্শন করে সরকারের অগ্রাধিকার প্রকল্প বিষয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করার কথা রয়েছে। পরে উখিয়া-টেকনাফের কিছু কর্মসূচিতে অংশ করবেন। এদিকে আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে নৌপরিবহন মন্ত্রীর ঘুমধুম ইউনিয়নে আগমন সফল করার লক্ষ্যে মন্ত্রীর সফর সুচীর স্থান ঘুমধুম বিওপি সংলগ্ন জায়গা পরিদর্শন করেছেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল।

সূত্রে জানা গেছে, পাশ^বর্তী বন্ধুত্বপূর্ণ দেশ মিয়ানমারের সাথে সীমান্তবর্তী নাইক্ষ্যংছড়ি, উখিয়া ও টেকনাফের প্রায় চার লাখ মানুষের আর্থসামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি দু’দেশের প্রয়োজন মাফিক আমদানী-রপ্তানির নতুন এক দিগন্ত উম্মোচিত হবে। ঘুমধুমে স্থল বন্দরে স্থাপনে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এমপি। সম্প্রতি নৌ-মন্ত্রণালয় আয়োজিত আলোচনা সভায় নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাজাহান খাঁন তিন পার্বত্য জেলায় তিনটি স্থল বন্দর নির্মাণ করা হবে বলে ঘোষণা দেন। বান্দরবানে স্থল বন্দর নির্মাণের সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে গুরুত্ব পায় নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম। ঘুমধুমে স্থল বন্দর নির্মাণের প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত। যাহা ঘুমধুম ইউনিয়নবাসির দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী ছিল। কারণ বাংলাদেশ-মিয়ানমার মৈত্রী সড়ক পয়েন্ট ঘুমধুম তাই স্থলবন্দর ঘুমধুমে হওয়াটা শতভাগ যৌক্তিক বলে মনে করেন এখানকার সাধারণ মানুষ।
২৬৭নং ঘুমধুম মৌজার হেডম্যান নুরুল হক স্থল বন্দর নির্মাণের যৌক্তিক দাবী তুলে ধরে বলেন, গত ২০১৬সালে আমার মৌজার ৬নং সীটের অংশে ১৭একর জায়গা পরিমাপ করা হয়েছে স্থল বন্দর স্থাপনের জন্য। এছাড়াও শোনা যাচ্ছে ঘুমধুম সীমান্ত লাগোয়া মিয়ানমারের অভ্যান্তরে টেকিবনিয়াস্থ এলাকায় সে দেশের সরকার স্থল বন্দরের জন্য একটি জায়গা নির্ধারণ করে ফেলেছে। তাই ঘুমধুম ছাড়া কোথাও স্থল বন্দর নির্মাণ হওয়ার সম্ভাবনা নেই। ঘুমধুমের অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক মাষ্টার সাজেদুল্লাহ বলেন, ইতিহাস ঐহিত্য বলে ঘুমধুমে হবে স্থল বন্দর। কারণ আমরা শুনেছি বৃটিশ আমলে মিয়ানমারের সাথে ওপেন হাট ছিল ঘুমধুম লাগোয়া বালুখালী বাজার। তখন রামু ছাড়া আর কোন বাজার ছিলনা। ওই থেকে মিয়ানমারের সাথে বাংলাদেশের একটি ব্যবসা-বাণিজ্যের চিন্তা ছিল। তাই দীর্ঘদিন পরে এসে বর্তমান শেখ হাসিনা সরকার তা বাস্তবায়ন করতে যাচ্ছে। এজন্যে ঘুমধুম ইউনিয়নবাসির সরকারের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন। পাশাপাশি স্থল বন্দর নির্মাণ পক্রিয়া দ্রুত চালু করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং এর নিকট জোর দাবী জানিয়েছেন।
ঘুমধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান একেএম জাহাঙ্গীর আজিজ বলেন-মিয়ানমারের সাথে ১৮কিলোমিটার সীমান্ত ঘেষে ঘুমধুম ইউনিয়ন। আমার ইউনিয়নে স্থল বন্দর নির্মাণে জায়গার কোন সমস্যা নেই। তাই ঘুমধুমের যেকোন স্থানে সরকার স্থল বন্দর স্থাপন করলে আমাদের কোন সমস্যা নেই। কিন্তু ঘুমধুমের বাইরে হলে আমরা তাঁর জোর প্রতিবাদ করবো। তিনি আরো বলেন, এটি স্থাপিত হলে পাশ্ববর্তী নাইক্ষ্যংছড়িসহ উখিয়া এবং টেকনাফ উপজেলার প্রায় চার লাখ মানুষ উপকৃত হবে। যেটি আমার ইউনিয়নবাসির দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী ছিল। ঘুমধুম ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি খালেদ সরওয়ার হারেচ বলেন, ঘুমধুমে নৌ-পরিবহণ মন্ত্রী শাজাহান খাঁনের আগমনকে ঘিরে স্থানীয় লোকদের মাঝে এক প্রাণ চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়েছে। মাত্র ১ কিলোমিটারের মধ্যে প্রায় শতাধিক তোরণ তৈরী করা হয়েছে।
এব্যাপারে জানতে চাইলে, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল বলেন প্রতিমন্ত্রীর নির্দেশে আমি ইতিমধ্যেই কয়েকবার ঘুমধুম পরিদর্শন করেছি এবং নৌ-পরিবহণ মন্ত্রীর সফরসূচী সফল করতে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান সহ বিভিন্ন গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দদের সাথে বৈঠকে মিলিত হয়েছি। তাছাড়া আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে স্থল বন্দরের সম্ভাব্য স্থান ঘুমধুম বিওপি সংলগ্ন নির্ধারিত জায়গাটি ঘুরে মন্ত্রী মহোদয়ের কর্মসূচী সফল করতে আয়োজকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।


শেয়ার করুন