ঘরের বউয়ে যদি পরের চোখ পড়ে!

bangladeshibride-400x266ইলিয়াস হাসান

বর্তমান সময়ে প্রযুক্তির সহজলভ্যতায় নারী-পুরুষ পরকীয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে খুব সহজে। বিশেষ করে প্রবাসীদের অথবা দূরে কর্মস্থলে থাকা লোকের স্ত্রীরা স্বামীর দীর্ঘ বিরতির কারণে পরকীয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে বসবাস করেও দুজনের মধ্যে সমঝোতার অভাবে নিজেদের বাইরে অপর কারো প্রতি ঝুঁকে পড়ছে। সমাজবিজ্ঞানীদের মতে পরকীয়া একপ্রকার বিকৃতি বৈ কিছু নয়।
সভ্যসমাজ প্রতিষ্ঠার অন্তরায় এই পরকীয়া প্রতিরোধে ইসলামের ব্যাপক দিকনিদের্শনা রয়েছে। ইসলাম নারী-পুরুষের কথাবার্তা, চালচলন, আচার-ব্যবহারসহ সর্বদিকের এক সুন্দর সুনির্দিষ্ট পথ নির্দিষ্ট করে দিয়েছে। একজন নারীও যখন নিজ স্বামী ব্যতিত অন্য কোনো পুরুষের সঙ্গে দেখা-সাক্ষাত, কথাবার্তা ও চলাফেরা করবে তখন স্বাভাবিকভাবেই একে অপরের প্রতি আকৃষ্ট হবে নিঃসন্দেহে। এই ক্ষুদ্র আকর্ষণবোধ থেকেই একসময় অবৈধ সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। যেটাকে আমরা পরকীয়া বলে অভিহিত করি।
সরাসরি দেখা-সাক্ষাত, কথাবার্তা বলা, কিংবা চলাফেরা থেকে যেভাবে এ ধরনের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, অনুরূপ মোবাইলে কথা বলা, ফেসবুকে চ্যাটিং করা, কিংবা ইন্টারনেটে ভিডিও চ্যাটিংয়ের মাধ্যমেও একই অবস্থার সৃষ্টি হয়। পরকীয়া রোধে দৃষ্টির যথাযথ ব্যবহারকে গুরুত্ব দিয়েছে ইসলাম। পবিত্র কুরআনে ইরশাদ হচ্ছে, ‘আপনি ঈমানদারকে বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানসমূহের হেফাজত করে, এটাই হচ্ছে তাদের জন্য উত্তম পন্থা। কেননা, তারা তাদের চোখ ও লজ্জাস্থান দিয়ে যা করে আল্লাহ সে সম্পর্কে পুর্ণাঙ্গভাবে অবহিত রয়েছেন।’ সূরা আন নূর : ৩০
রাসূলুল্লাহ সা. হজরত আলী রা. কে নির্দেশ দিয়েছিলেন, ‘হে আলী! নারীদের প্রতি (বেখেয়ালে পড়ে যাওয়া) প্রথম দৃষ্টির পর দ্বিতীয় দৃষ্টি নিক্ষেপ করো না। কেননা, প্রথম দৃষ্টি ক্ষমাযোগ্য, দ্বিতীয়টি নয়। আবু দাউদ
নারীদের ব্যাপারে কুরআন বলেছে, ‘আপনি ঈমানদার নারীদের বলে দিন, তারা যেন তাদের দৃষ্টি অবনত রাখে এবং নিজেদের লজ্জাস্থানসমূহ হেফাজত করে। তারা যেন সৌন্দর্য প্রদর্শন না করে। তবে তাদের শরীরের যে অংশ এমনিই খোলা থাকে তার কথা আলাদা।’ সূরা আন নূর : ৩১
কুরআন ও হাদিসের নির্দেশনা থেকে নারী-পুরুষ যদি পর্দা বা দৃষ্টি সংরক্ষণের এ বিধান সঠিকভাবে পালন করে তাহলে পরকীয়ার মতো দুর্ঘটনা আমাদের সমাজে ঘটার সম্ভাবনা থাকে না। পারিবারিক ব্যবস্থা সুরক্ষিত ও সুদৃঢ় হবে। স্বামী-স্ত্রীর মাঝে পরকীয়াবিহীন পবিত্র একটি জীবন গঠিত হবে এবং চরিত্রহীনতা ও অবিশ্বাস তাদের মধ্যে সুযোগ পাবে না।
লেখক : শিক্ষক, খাদেমুল ইসলাম মাদরাসা, মিরপুর-১০, ঢাকা।


শেয়ার করুন