নাইক্ষ্যংছড়িতে জরুরী ত্রাণ বিতরণে জেলা প্রশাসক মো: মিজানুল হক

গৃহহীন ও ক্ষুধার্থ মানুষের পাশে রয়েছে সরকার

Dc-Trean-bitoronuuuuhhমো.আবুল বাশার নয়ন, নাইক্ষ্যংছড়ি:

বান্দরবান জেলা প্রশাসক মো: মিজানুল হক বলেছেন- টানা বন্যা ও ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে জেলার তিনটি উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতি হয়েছে। ত্রাণ মন্ত্রণালয় ইতিপূর্বে বন্যায় আমাদের চাহিদার চেয়েও বেশি বরাদ্দ পাওয়া যায় বর্তমানেও বন্যার্থ মানুষের জন্য পর্যাপ্ত বরাদ্দ দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। তবে প্রত্যেকটা ক্ষেত্রে ধর্যশীল হতে হবে। বন্যা পরবর্তী সরকার পূর্নবাসন হিসেবে সব ক্ষেত্রে উন্নয়ন করার আশ্বস্থ করেছেন। বিধ্বস্থ সড়ক, ব্রিজও পুন: নির্মাণ হবে। সোমবার (৩ আগষ্ট) নাইক্ষ্যংছড়িতে সাম্প্রতিক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে জরুরী ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন তিনি।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বান্দরবান জেলা প্রশাসক আরো বলেন- দরিদ্র পিড়িত মানুষের সহায়তা করার জন্য বন্যার পর প্রধানন্ত্রীর দপ্তর ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সাথে সার্বক্ষনিক যোগাযোগ করা হচ্ছে। সরকার নাগরিকের স্বাস্থ্য, চিকিৎসা এবং ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ায় তৎপর রয়েছে। বন্যা পরবর্তী মানুষ যাতে গৃহহীন ও ক্ষুধার্থ না থাকে সেজন্য সরকারের বিশেষ নির্দেশনার কথা জানিয়ে বরাদ্দকৃত জিনিসগুলো যাতে সুষ্ট ভাবে বন্টন করা হয় সেদিকে সর্তক দৃষ্টি রাখার জন্য জনপ্রতিনিধিদের প্রতি আহ্বান জানান। এসময় সরকারের সংস্থার পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে পাহাড় ধ্বসে রাস্তা ঘাট ও বসতবাড়ি সংলগ্ন এলাকায় ধ্বসে পড়া মাটি পরিবেশের নিয়ম নীতি মেনে বসবাস উপযুক্ত করার পরামর্শ দেন তিনি। অনুষ্ঠানে বক্তাদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে জেলা প্রশাসক তাৎক্ষনিক ভাবে নাইক্ষ্যংছড়ির বিদ্যুৎ সমস্যা ও চাকঢালা সড়কে ক্ষতিগ্রস্থ সওজ বিভাগের ব্রিজের উন্নয়নে তড়িত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন বিভাগের সাথে মোবাইল ফোনে কথা বলেন।

ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান তোফাইল আহামদ বলেন- অনেক প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও ধ্বসংলীলার মাঝেও পুন: স্বপ্ন তৈরীর মাধ্যমে ঘুরে দাড়ানো বাঙ্গালী জাতি আমরা। যার কারনে পর পর দুটি বন্যা ও কোমেন ঘুর্ণিঝড়ের মাঝেও কোন মানুষ না খেয়ে থাকেনি। পাবর্ত্য প্রতিমন্ত্রীর নিরলস প্রচেষ্ঠা ও জেলা-উপজেলা প্রশাসনের কঠোর তদারকির মাধ্যমে বন্যার্থ মানুষ ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে উঠার জন্য নতুন করে স্বপ্ন দেখছে। সাধারণ মানুষের দু:খ দুর্দশা লাগবে সরকারের আন্তরিকতার জন্য তিনি সাধুবাদ জানান।

 উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) আবু শাফায়াৎ মুহম্মদ শাহে দুল ইসলাম বলেন- দূর্যোগ মোকাবেলায় বন্যা পরবর্তী মাননীয় প্রতিমন্ত্রী ও জেলা প্রশাসন সার্বক্ষনিক তদারকির কারনে উপজেলার বন্যা দূর্গত মানুষ নতুন করে বাচার স্বপ্ন দেখছে। এজন্য সরকারের পাশাপাশি সর্বস্থরের মানুষের সহযোগিতার মাধ্যমে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষের মুখে খাদ্য তুলে দেওয়ার জন্য সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি। এসময় তিনি বন্যাকালীন সময়ে বিদ্যুৎ বিভাগের হেয়ালীপনার জন্য ক্ষোভ প্রকাশ করেন।

 উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সার্বিক পরিচালনায় জরুরী ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের পক্ষ থেকে বন্যার্থ মানুষ ও ক্ষয়-ক্ষতির বিষয়ে বক্তব্য রাখেন নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো: কামাল উদ্দিন, বাইশারী ইউপি চেয়ারম্যান মনিরুল হক, উপজেলা আওয়ামীলীগ সাধারণ সম্পাদক তসলিম ইকবাল চৌধুরী, গণমাধ্যমকর্মী আবুল বাশার নয়ন।

ত্রাণ বিতরণ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান হামিদা চৌধুরী, থানা অফিসার ইনচার্জ মো: আবুল খায়ের। অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মাঝে ঘুমধুম ইউপি চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ, সদর ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আবু সৈয়দ, উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা মো: ইমরান, উপজেলা ছাত্রলীগ সভাপতি চোচু মং মার্মা, যুবনেতা ছৈয়দ আলমসহ সরকারী কর্মকর্তা, ইউপি সদস্য, এনজিও কর্মীসহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ উপস্থিত ছিলেন।

 ত্রাণ বিতরণ শেষে জেলা প্রশাসক মো: মিজানুল হক সম্প্রতি বন্যায় দোছড়ি ইউনিয়নের নিহত পাইরু মুরুং এর পরিবারের মাঝে ২৫ হাজার টাকার চেক, বঙ্গবন্ধু-বঙ্গমাতা ফুটবল টুর্ণােেমন্ট বিজয়ীদের মাঝে ৫ হাজার টাকা করে মোট ১০ হাজার টাকার চেক ও উপজাতীয় মুরুং সম্প্রদায়ের মাঝে কম্বল এবং বন্যার্থ অসহায় মানুষের মাঝে ত্রাণের চাউল বিতরণ করেন। পরে জেলা প্রশাসক বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থ নাইক্ষংছড়ি-সোনাইছড়ি সড়ক সরেজমিনে পরিদর্শন করেন।


শেয়ার করুন