গরমে পুড়ছে মানুষ

শাহেদ ইমরান মিজান, সিটিএন:
চৈত্রে তেমন গরমের দেখা মিলেনি। তবে বৈশাখের শুরুতেই হঠাৎ পড়ছে অবিরত গরম। এই তীব্র গরমে পুড়ছে মানুষ। সেই সাথে পুড়ছে পশু-পাখিরা, প্রাণীকূলসহ পুরো প্রকৃতি। গত ৫ দিন ধরে হঠাৎ করে জেলায় এই অসহ্য গরম বিরাজ করছে। গরমে জীবন ধারণ দায় পড়েছে প্রাণীকূলের। গরমের সাথে বাড়ছে নানা রোগ ব্যাধিও। আশঙ্কার কথা, তাপমাত্রা সামনে আরো বাড়ছে। এমনটি জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।
গরমে পর্যুদস্ত হয়ে শহর কি গ্রামীণ জীবন, কোথাও মিলছে না স্বস্তি। কাঠফাঁটা রোদে এরই মধ্যে পুকুর ও ঝিলগুলো শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে। শুরু হয়েছে পানির জন্য হাহাকার। পাহাড়ি এলাকাগুলোতে পানির তীব্র সঙ্কট চলছে। কক্সবাজার শহরেও অনেক স্থানে বিশুদ্ধ পানির সঙ্কট দেখা দিয়েছে।
সকাল আর বিকালের দিকে কিছুটা শান্ত পরিবেশের দেখা মিললেও দিনের অন্য সময় পড়ছে প্র- গরম। এ কারণে ওই সময় ঘর থেকে বের হওয়া কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। খালি মাথায় বের হতে না পেরে অনেকে ছাতা নিয়ে বের হচ্ছেন। এই গরমে অসহনীয় কষ্টে পড়েছেন কর্মজীবী ও শিক্ষার্থীরা। তীব্র তাপপ্রবাহে বেশি বিপাকে পড়েছেন নিম্নআয়ের দিনমজুর, রিকশাচালক, কিংবা নির্মাণ শ্রমিকেরা। অসহায় এসব তৃণমূল জনগোষ্ঠী প্রখর রোদে সামান্য কাজেই হাঁপিয়ে উঠছেন। কিন্তু পেটের দায়ে টিকে থাকতে ভয়াবহ এই তাপকে উপেক্ষা করে কাজে মগ্ন তারা।
কক্সবাজার শহরের ভ্রাম্যমান নির্মাণ শ্রমিক সিদুল কান্তি বলেন, ‘নির্মাণ কাজ এমনে গরম এবং গরমের করতে হয়। তার উপর যা গরম পড়ছে তাতে কাজ করাই একেবারে দায় হয়ে পড়ছে। তারপরও তো কাজ করতে হয়।’
রিক্সা চালক আকতার হোসেন বলেন, ‘এক নাগাদে পড়া গরমে যেন রক্ষা নেই! প্যাডেল ঘোরালেই ঘামে শরীর ভিজে জবোথবো হয়ে পড়ছে।
প্রখর রোদ উপেক্ষা করে নিতান্ত কাজ ছাড়া সাধারণ মানুষজন ঘর থেকে বাইরে বের হচ্ছেন না। গরমের প্রভাবে নেতিয়ে উঠছে প্রকৃতি।
গরমে এক টুকরো প্রশান্তির জন্য মানুষ ঝুঁকছে ঠা-ার সমাহারে। অস্থির প্রাণকে জুড়িয়ে নিতে তরমুজ, শরবত, ডাব ও কোল্ড ড্রিংকসই এখন ভরসা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ফলে ফাস্টফুডের দোকানগুলোতে কোমলপানীয়, জুস ও আইসক্রিমের বিক্রি বেড়েছে বলে জানিয়েছেন দোকানদারা।
কক্সবাজার সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক রতন চৌধুরী জানিয়েছেন, গরমের প্রভাবে ডায়রিয়াসহ গরমজনিত রোগ বাড়ছে। এরই মধ্যে অনেক রোগীকে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
কক্সবাজার আবহাওয়া অধিদপ্তর জানিয়েছেন, গতকাল শনিবার কক্সবাজারে সর্বনি¤œ তাপমাত্রা ছিল ২৫.৮ আর সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪.০।
কক্সবাজার আবহাওয়া অফিসের প্রধান আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক জানিয়েছেন, সামনে তাপ আরো বাড়তে পারে। আপাতত তেমন বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।


শেয়ার করুন