খৃষ্টানদের রহস্যময় এক গুপ্ত সুড়ঙ্গ : মুসলমানদের ঐক্যের ডাক

আলহাজ্ব মাওঃ রহিমুল্লাহ আনুয়ারী (বিএ, এম, এম)

আন্তর্জাতিক খৃষ্ট চক্র ইসলাম ও মুসলমানদের সর্বনাশ করে দেয়ার জন্য এ যাবত যে সব উপায় উপকরণ ও পদ্ধতি আবিস্কার করেছে তার মধ্যে রয়েছে ইংল্যান্ডের গভীর অরণ্যে এক গুপ্ত সুড়ংঙ্গ যা মুসলমানদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি আল্লাহর রাসুল (স:) এর অবমাননা সাহাবায়ে কেরামদের সম্পর্কে বক্রোক্তি ইতিহাস বিকৃতি করন এবং ইসলামী দাওয়াতী আন্দোলনকে বাধাগ্রস্ত করার উদ্দেশ্যে “বিজন বনের মধ্যে অবস্থিত এক গুপ্ত সুড়ঙ্গে খৃষ্টানগণ বড় আকারের রীতিমত একটি মাদরাসা স্থাপন করেছে। ভারতের লক্ষেèৗস্থ নদওয়াতুল ওলামা কর্তৃক প্রকাশিত উর্দু পাক্ষিক সাময়িকী “তামির ই-হায়াত এ সংক্রান্ত এক চমকপ্রদ প্রতিবেদন বের করেছিল। প্রতিবেদনের মুল প্রতিপাদ্য বিষয় হচ্ছে ভারত বিভক্তির পূর্বে আলীগড়ের তৎকালীন জমিদার নওয়াব ছাতোরী ইংরেজদের প্রথম কাতারের সহযোগী ছিলেন। মুসলিম লীগ ও ভারতীয় কংগ্রেসের সাথে সম্পর্কহীন এ নবাব ভারতে বৃটিশ প্রভুত্ব প্রতিষ্ঠায় ইংরেজদের সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করতেন। বৃটিশ আনুগত্যের স্বীকৃতি স্বরূপ ইংরেজ সরকার কর্তৃক তিনি উত্তর প্রদেশের গভর্নর মনোনীত হন। যে সব ইংরেজ কালেক্টর পোষ্টিং নিয়ে আলীগড়ে আসতেন নবাবের সাথে তাদের গভীর সম্পর্ক গড়ে উঠতো। অনেক সময় আগ্রার কমিশনারও তার সাথে মিলিত হতেন। ইংরেজদের উচ্চপদস্থ অফিসারদের সাথে নবাবের ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল অত্যন্ত নিবিড়। এক সময় বৃটিশ সরকার ভারতের সব প্রাদেশিক গভর্ণরদের ব্রিটেনে পরামর্শের জন্য ডেকে পাঠান। আর সেই সুযোগে নবাব ছাতোরী বৃটেন যেতে সক্ষম হন যে সব ইংরেজ কালেক্টর নবাব সাহেবের খুব কাছের ও বিশ্বাস ভাজন ছিলেন ঐ কালেক্টর নবাব সাহেব কে সম্বোধন করে বললেন নবাব সাহেব আপনিবৃটেনে তাশরীফ এনেছেন এজন্য সাধুবাদ জানাই। কালেক্টর সাহেব নবাবকে বললেন যে আপনি অনেক দিন পর এখানে এসেছেন। তাই চলুন বৃটেনের বিখ্যাত বস্তু ও দর্শনীয় ¯া’নগুলো প্রত্যক্ষ করে আসি। উত্তরে নবাব সাহেব তাকে বললেনম উক্ত যাদু ঘরের নিদর্শনগুলো আমি ইতিমধ্যে সরকারী ভাবে প্রদ্যক্ষ করেছি। এছাড়া আর অন্য কিছু থাকলে দেখাতে পারেন। অতঃপর কালেক্টর সাহেব বললেন এটা এমন বস্তু কি হতে পারে যা আপনাকে দেখানো সম্ভব তা আমি ভেবে চিন্তে পরে বলব। দুই দিন পর তিনি এসে বললেন, নবাব সাহেব আমি এমন এক দুর্লভ বস্তু দেখাব যা ইতিমধ্যে কোন ভিন্নদেশী উহা দেখেনি। এ প্রস্তাব শুনে নবাব সাহেব বেশ খুশি হলেন। তারপর কালেক্টর সাহেব নবাব সাহেবের পাশপোর্ট নিয়ে সরকারী অনুমতিপত্র নিয়ে আসলেন এবং কালেক্টর সাহেবের ব্যক্তিগত গাড়িতে করে যাত্রা আরম্ভ করলেন। শহর নগর পেরিয়ে একেবারে জংগলাকীর্ণ এলাকায় উপস্থিত হলেন। সামনে ছোট একটি সড়ক। যত সামনে এগিয়ে যায় তত বেশী অরণ্য পরিলক্ষিত হয়। যাবার সময় উক্ত পথে কোন পথিক দেখা যায়না এভাবে অনেক দূর যাবার পর নবাব সাহেব জিজ্ঞেস করলেন ভাই কোথায় নিয়ে যাচ্ছেন? যেখানে কোন পশু ও জনমানব দেখা যাচ্ছে না, নাই কোন আদম সন্তানের আসা যাওয়া। কালেক্টর সাহেব বললেন কোন ভয় নেই। সামনে আমাদের গন্তব্যস্থলে পৌছে যাব। তারপর সামনে কিছু দূর যেতে না যেতে এক বিরাট দরজা এটা দরজা নয় কোন এক বিশাল দালানের প্রধান গেইট। এই গেইটের পর সামনে আরেকটি ছোট গেইট আছে এবং উভয় পাশে রয়েছে সশস্ত্র সৈন্যের সতর্ক পাহারা। কালেক্টর গাড়ী থেকে নেমে পাসপোর্ট এবং সরকারী অনুমতিপত্র গেইটে জমা দেওয়ার পর ভিতরে প্রবেশ করার অনুমতি লাভ করেন। কিন্তু প্রহরীরা বললেন, আপনারা যে গাড়ী এনেছেন তা ব্যবহার করতে পারবেন না। আমাদের কোন একটা গাড়ী ব্যবহার করে ভিতরে যেতে পারেন। তারপর তাই হল। নবাব সাহেব ডান বামে যা কিছু পর্যবেক্ষণ করছেন তাতে বুঝতে পারছেন এটা কোন প্রাসাদের দরজা নয়। উভয় পাশে যে দেয়াল রয়েছে তা কন্টকমুক্ত লতাপাতা ও গাছপালা দ্বারা সুরক্ষিত। কোন মানুষের পক্ষে দেয়াল অতিক্রম করা সম্ভব নয়। দু দেয়ালের মাঝখান দিয়ে যাচ্ছে সুনিবিড় জঙ্গল ও বৃক্ষ লতা ছাড়া আর কিছু দৃৃষ্টিগোছর হয় না। নবাব সাহেব কিছুটা ভীত হয়ে বললেন গন্তব্যে পৌছাতে আর কত সময় লাগবে ? এইতো এসে গেছি। ঐ যে প্রসাদ দেখা যাচ্ছে। আমরা সেখানে যাব এবং সাথে সাথে এটাও বলে দিলেন গন্তব্যে পৌছার আগ পর্যন্ত আমাকে কোন প্রশ্ন করবেন না। চুপচাপ থাকবেন। তারপর পৌছে গেলেন। গাড়ীটা রেখে তারা পায়ে হেটে চললেন। সেখানে ধেখলেন, বিপুল সংখ্যক সম্পন্ন এ প্রাসাদটি গগণচুম্বী ও অতিকায় প্রাসাদে ঢুকতে দেখা হল দাড়ি ও গোপ বিশিষ্ট এক যুবক পরনে তার রয়েছে আরবী লম্বা জুব্বা ও লম্বা পাগড়ি। অপর কক্ষ থেকে আরও দুইজন যুবক বেরিয়ে প্রথমোক্ত যুবকটিকে বললেন আস্সালামু আলাইকুম। যুবকটি সালামের জবাব দিয়ে বললেন কেমন আছেন। এ দৃশ্য দেখে নবাব অবাক হলেন এবং যুবকটির সাথে কথা কলতে চাইলেন। কিন্তু কালেকটর সাহেব ইঙ্গিত দিলেন কোন কথা না কলতে। তারপর তিনি নবাব সাহেবকে একটি কক্ষের সামনে দাড় করালেন। দেখা গেল আরবী পোষাক পরিহিত বিপুল ছাত্র মাটির বিছানায় বসে সবক নিচ্ছেন। মাদরাসায় তালিব এলমগণ যেভাবে শিক্ষকদের কাছ থেকে সবক নেন সেই রকম। ছাত্রগণ আরবী এবং ইংরেজী ভাষায় শিক্ষকদের কাছে প্রশ্ন করছেন এবং শিক্ষক সাবলীল ভঙ্গিতে উত্তর দিচ্ছেন।ইংরেজ কালেক্টর এভাবে প্রতিটি কক্ষ ঘুরে ফিরে দেখালেন যে সব বিষয় তালিম তরবিয়াত দেয়া হচ্ছে তাও দেখালেন। নবাব সাহেব অবাক বিস্ময়ে প্রত্যক্ষ করলেন যে, কোন কক্ষে ক্বেরাত এবং এক এক রুমে একএক বিষয় পড়ানো হচ্ছে। আবার কোথাও বিভিন্ন মাসায়েল এবং বোখারী মুসলিম ইত্যাদি পড়ানো তহচ্ছে। কোথায় আবার ইসলামী পরিভষার উপর বিশেষ অনুশীলন হচ্ছে। আবার কোথাও একটি বিষয়ের উপর দুগ্র“পের মধ্যে মুনাজারা বা বিতর্ক অনুষ্ঠান চলছে। নবাব সাহেব এসব দেখে কিং কর্তব্যবিমুঢ় হয়ে গেলেন। তখন তার কোন ছাত্রের সাথে কিছু জানতে আগ্রহ প্রকাশ করলেন। রাহবার সাহেব ইশারায় নিষেধ করে দেন। নবাব সাহেবের এসব দর্শনীয় বস্তু দেখা শেষ হলে বাসায় ফেরার সময় কালেক্টর সাহেবকে বললেন, ভাই এত বড় দ্বীনি মাদরাসায় উন্নত পদ্ধতিতে তালিম দেয়া হচ্ছে ইসলামের বুদ্ধি ভিত্তিক আলোচনা হচ্ছে দেখে আমার বেশ পুলক অনুভব হচ্ছে। কিন্তু এসব মুসলিম ছাত্রগণকে বৃটেনের এ দূরবর্তী গভীর অরণ্যের ভিতর বন্ধি করে রাখছেন কেন ? তদোত্তরে কালেক্টর সাহেব বললেন, ছাত্রদের মধ্যে কেহ মুসলমান নেই। সব খৃষ্ঠান মিশনারী। নবাব সাহেব আরো আশ্চর্য হয়ে বললেন একি আশ্চর্য কথা, কারণ কি ? সুড়ঙগ পথে প্রতিষ্ঠিত এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পড়ালেখা শেষ করে এসব ছাত্রগণকে মুসলিম বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে বেশেষ করে মধ্য প্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়। সেখানে তারা বিভিন্ন স্থানে চলে বলে কৌশলে মসজিদের ইমাম বা মোয়াজ্জিনের দায়িত্ব বা ছোট বাচ্চাদের কোরআন শিক্ষার গৃহ শিক্ষক হিসেবে ঢুকে পড়ে। বেতনের জন্য তারা তেমন তোয়াক্কা করে না। যেহেতু তারা আরবী ও ইংরেজী সাহিত্যে পারদর্শী তাই তাদের নিয়োগ দিতে কর্তৃপক্ষ দ্বিধা করেন না। অনেক সময় তারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে জনগণের সহানুভুতি আদায় করার প্রয়াস চালায়। কোন কোন দেশে বিশেষ করে মধ্যপ্রাচ্যের মসজিদে উপস্থিত হয়ে বলে আমরা ইংরেজী, আরবী শিক্ষায় শিক্ষিত আলেম আমাদের কেউ আছেন আল আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের পাশ করা আলেম। আমাদের দেশে নামকরা কোন মসজিদ মাদরাসা না থাকায় আমরা এদেশে এসেছি শুধু দুমোঠো ভাত ও একটু ঠাই দিলে চলবে। আমরা আল্লাহর দ্বীনের জন্য সবকিছু কুরবান করে দিতে প্রস্তুত। এভাবে তারা বিভিন্ন ভাবে ঢুকে ষড়যন্ত্র শুরু করে দেয়। মুসলমাদের মধ্যে বিবেদ সৃষ্টি করতে পারলে ইন্দন যুগিয়ে মুসলমানদের বিভিন্ন গ্র“পে রক্তপাত ঘটায় এবং রক্তপাত দীর্ঘস্থায়ী করায়। এসব ছদ্মবেশী আলেমদেরকে তাদের গোপন মাদরাসা থেকে বিশেষ নির্দেশনা দেয়া আছে যে, এমন কাজ চালাও যাতে মুসলমানরা নিজেদের মধ্যে লড়াই করতে থাকে। এক্ষেত্রে আফগানিস্থানে উপদলীয় কোন্দল তার প্রমাণ। মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন গীর্জায় পাদ্রীদের বার্ষিক সম্মেলনে জাবয়ার নামক এক পাদ্রী সভাপতির ভাষন দিতে গিয়ে বলেন, মুসলমানদের সাথে মুনাযারা বা বিতর্কে আমরা জয় হতে পারব না। তাই আমরা পলিসি গ্রহণ করেছি তাদের নিজেদের মধ্যে ঝগড়া বিবেদ লাগিয়ে দিতে। আমাদের সফলতার এটাই একমাত্র পথ। খৃষ্টানদের উক্ত গোপন মাদরাসার এক এক বিশেষ উদ্দেশ্য হচ্ছে বিশ্বনবী (স:) এর শান ও মর্যাদাকে যেভাবে হোক ক্ষুন্ন ও ভুলুন্ঠিত করা যাতে মুসলমানদের অন্তরে তাদের নবীর যে ভালবাসা ও ইজ্জত রয়েছে তা ধীরে ধীরে হ্রাস পায় । তা ব্যতীত মুসলমানদের পরাজিত করার কোন বিকল্প রাস্তা নেই। কালেক্টর সাহেবের এসব কথায় নবাব সাহেব বিস্ময়ের সমুদ্রে হাবুডুবু খাচ্ছিলেন। সমগ্র বিশ্বের খৃষ্টান সম্প্রদায় এ পরিকল্পনা বাস্তবায়নের জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ায় কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। উপমহাদেশের ইংরেজরা তাদের শাসনামলে ভোলনাথ শর্মাকে দিয়ে বিদ্বেষপুর্ণ গ্রন্থ “রঙ্গীলা রাসুল” লেখিয়েছে। এ গ্রন্থটিতে রাসুল (স:) এর বংশধরদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যকে খাটো করা হয়েছে এবং স্ত্রীদের নিয়ে কৌতুকপূর্ণ মিথ্যাচারপূর্ণ ইংরেজদের বিরুদ্ধে জিহাদ করা হারাম এ ফতোয়া জারি করা হয়েছে এবং একাজে অনেক আলেমকে পর্যন্ত ভাড়া করেছে। তারপর উপমহাদেশে মুসলমানদের মধ্যে দ্বীনের ভালবাসা মুছে ফেলার জন্য পাকিস্থানের পাঞ্জাবের গোলাম আহমদ কাদিয়ানীকে বাছাই করে নবী বানায়। তার মাধ্যমে ইংরেজরা বিপুল সংখ্যক ধর্ম সংক্রান্ত গ্রন্থ লেখিয়েছে। যা ঐ গোপন সুড়ঙ্গ পথের ষড়যন্ত্রের ফসল। গোলাম আহমদ কাদিয়ানী স্বয়ং তার লিখিত কিতাবে স্বীকার করেছেন আমি ইংরেজ সরকারের অনুগত্য করার জন্য এবং তাদের বিরুদ্ধে জিহাদ হারাম এ কথা প্রচার এর উদ্দেশ্যে ৫০ হাজারের বেশি পুস্তক, প্রচারপত্র, সাময়িকী ও গ্রন্থ লিখেছি। প্রিয় পাঠকবৃন্দ, লক্ষ্য করুন ইংরেজরা কি ধরনের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। এভাবে তারা দশ পনের বছর পূর্বে আমেরিকায় রসাদ খলিফা নামক এক ব্যক্তিকে পবিত্র কুরআনের উনিশ অক্ষর দিয়ে কমপিউটার সত্যতা যাচাই করার জন্য ঘোষণা দিলে মানুষ তার উপর বিশ্বাস স্থাপন করল। তখন তিনি ঘোষণা দিলেন কুরআনের কতিপয় আয়াত বিকৃত অবস্থায় আছে – নাউযুবিল্লাহ। তিনি আরো বললেন আমার নাম যে খলিফা তা কুরআনের আয়াত দ্বারা প্রমাণিত সত্য। অতপর তিনি নিজেই নবী দাবী করলেন। জনগণ সন্দেহ বশীভূত য়ে বিতর্কের ব্যবস্থা করলেন এবং তার প্রস্তুতকৃত কম্পিউটারের মাধ্যমে হিসাব মিলাতে লাগলেন। দেখাগেল সব ভুল ও মিথ্যা। মুসলিম আলেমগণ বিতর্কের জন্য প্রস্তুত হলেন। কিন্তু নির্ধারিত সময়ের আগেই রসাদ খলিফার মৃত্যু হয়ে জাহান্নামে চলে গেলেন। বিশ্বনবী (স:) এর ঘোষণা-“আমিই শেষ নবী, আমার পরে আর কোন নবী আসবেনা” – সহীহ্ হাদীস।

প্রিয় পাঠক, লক্ষ্য করুণ মহান আল্লাহ তায়ালার কি অপূর্ব ফয়সালা। খলিফা দুনিয়া থেকে বিদায় নিয়ে গেলেন ঠিকই। কিন্তু গোলাম আহমদ কাদিয়ানীর মত তার ফিৎনা বাকী রয়ে গেল। রসাদ খলিফার বিকৃত কুরআন আমেরিকার ঘরে ঘরে তার অনুসারীরা প্রচার করছে এখনও সুপরিকল্পিত উপায়ে। কুখ্যাত সালমান রুশদির দি স্যাটানিস ভারসেস এর ব্যাপারে ও সন্দেহ হয় যে এটাও হয়ত সে গোপন সুড়ঙ্গ পথের প্রতিষ্ঠান কর্তৃক প্রস্তুতকৃত ফসল। এজন্য ব্রিটিশ সরকার সালমান রুশদীর নিরাপত্তার জন্য সার্বক্ষণিক কমান্ডো বাহিনীি মোতায়েন করে রেখেছে এবং অভিশপ্ত এ শয়তানের নিরাপত্তার জন্য লাখ লাক পাউন্ড ব্যয় করে আসছে।
বিগত দেড় যুগ পূর্বের ঘটনা। ইংল্যান্ডের কতপয় বৃত্তশালী শিখ ভারতীয় শিখদের “খালিস্থান” বানানোর বিরোধী ছিলেন এবং এ ব্যাপারে তারা ভারত সরকারের খালিস্থান বিরোধী নীতির কট্টর সমর্থক ছিলেন। খালিস্থান প্রতিষ্ঠাকারী শিখগণ তাকে হত্যার হুমকি দিলেন তিনি বৃটিশ সরকারের জাছে নিরাপত্তা চাইলেন। বৃটিশ সরকার তার নিরাপত্তা দিলেন। তারপর তিনি ঘটনাক্রমে নির্মমভবে প্রাণ হারালেন। অথচ রুশদির এমন কি গুণ ও বৈশিষ্ট্য আছে যে, তার নিরাপত্তার জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে ব্যবস্থা করা হয়েছে। ইমাম খোমেনী যখন রুশদীর উপর মৃত্যুদন্ড আরোপ করে হত্যার হুকুম জারি করেছিলেন তখন বৃটিশ সরকার সালমান রুশদীর কারণে ইরানের সাথে কুটিৈতক সম্পর্ক ছিন্ন করলেন।
ধর্মপ্রাণ মুসলিম ভাই-বোন খৃষ্টান ইহুদিদের এসব চক্রান্ত নস্যাত করে দেয়ার লক্ষ্যে আমাদের এ মুহুর্তে সবচেয়ে বড় কর্তব্য হচ্ছে নিজেদের মধ্যে চলমান ঝগড়া বিবাদ এবং দলাদলী মিটিয়ে ফেলে বিভেদের প্রাচীর ভেঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হয়ে দ্বীন কায়েমের পথে অগ্রসর হওয়া সময়ের দাবী।
সম্প্রতি কালে প্রিয় মাতৃর্ভমিতে যে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছে তা ইহুদি খৃস্টানদের সৃষ্ট বলে ইসলামী চিন্থাবিদগন মনে করে তাদের পরিকল্পনাকারী হচ্ছে ইহুদিদের গোয়েন্দা সংস্থা মোসাদ এবং হিন্দুস্থানের গোয়েন্দা সংস্থা র। এরা সংখ্যাগরিষ্ট মুসলমানদের জাতীয় আদর্শ ইসলাম কে ধ্বংস করার নীল নকশা তৈরি করেছে। তার নেপথ্যে রয়েছেন তারা। বাংলাদেশে ইসলামী দলগুলোর মধ্যে সুন্নি ওয়াহাবী নাম দিয়ে অন্ত কলহ সৃষ্টি করে রেখেছে সেই বৃটিশ আমল থেকে তারা চাচ্ছে বাংলাদেশের ইসলামী দলগুলো পরস্পর দন্ধে লিপ্ত থাকলে তাদের তলপী বাহক তল্পী দলগুলো ক্ষমতায় বসানো সহজ হবে এবং তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করবে। তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নে সফল হবে বাংলাদেশের জাতীয় আদর্শের মৌলিক বিশ্বাস মুছে দেবে এদেশের মানুষের ঈমান আকিদা ,ইসলামি সংস্কৃতি তাহাজিব তমুদ্দন ,ছলবে বেহায়াপনা বেলেল্লাপনা এ লক্ষ্যে গোপন সুড়ঙ্গে প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত ইংরেজ আলেমরা কোটি কোটি টাকার বিনিময়ে এদেশের আলেম ওলামদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করে রক্তপাত ঘটাচ্ছে উপদলীয় কোন্দল সৃষ্টি করে পরষ্পর বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে ।

“মুসলিম জাতির বিরুদ্ধে ইহুদি নাসারাদের অবিরাম চক্রান্ত”
ইসলামের এ মোহিনী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে দাড়াতে গিয়ে ইসরাইল জাতি চরম শক্রতা প্রদর্শন করেছে। নানা প্রকার চক্রান্তের জালে আবদ্ধ হয়েছে এবং নানা প্রকার বিভ্রান্তির পথ অবলম্বন করেছে। রাসুল (স:) এর যামানা থেকে নিয়ে তারা নানা ভাবে নানা উপায়ে ও পদ্ধতিতে আল্লাহর দ্বীনের বিরুদ্ধে যুুদ্ধের যে বহিশিখা ছড়িয়ে দিয়েছে তা আজও অবিকল সেই প্রথম দিনের মতই দাবানলের মত আজো জ্বলছে। অনির্বাণ এই বহ্নি শিখাকে উদ্দীপ্ত রাখার জন্য নানারূপ মিথ্যার আশ্রয় নেয়া হয়েছ্।েএরশাদ হচ্ছে যখন রাসুল (স:) তাদের নিকট স্পষ্ট দলীল প্রমাণাদি সহকারে এলো তখন তারা বলে উঠলো এতো সুস্পষ্ট জাদু তারা সেভাবে এ কথাগুলো বলে উঠলো যেভাবে আসমানী কিতাবের জ্ঞান বিবর্জিত এবং দ্বীনের আগমন সম্পর্কে অজ্ঞ লোকেরা বলত তারা যুদ্ধরত ইসলামী জনগণের মধ্যে ঢুকে সত্য মিথ্যা বানিয়ে তাদের বিভ্রান্ত করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হল মদীনার মধ্যে একত্রে বসবাসরত মোহাজেরদের এবং তাদের দ্বীনি ভাই আনসারদের মধ্যে ঝগড়া বাধানোর জন্য ইহুদি খৃষ্টানরা নানা প্রকার চক্রান্ত শুরু করেছিল এবং আনসারদের আওস ও খাজরীজ গোত্রদ্বয়ের মধ্যেও ভুল বুঝাবুঝি সৃস্টি করার কাজে ব্যাপৃত হল। কখনও মুনাফিকদের এবং কখনও মোশরেকদের নেতৃত্বের নেশায় মাতিয়ে তুললো। আবার কখনও তারা ইসলামের দুশমনদের একত্রিত করে মুসলমানদের এক যোগে আক্রমণ করার জাজে লাগিয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে যুদ্ধের আগুন ছড়িয়ে দিলো যেমন দেখা যায় আহজাবের যুদ্ধে সম্মিলিত বাহিনীর তৎপরতার সময়। তাদের বিভিন্নমুখী ইসলাম বিধ্বংসী চক্রান্তের মিথ্যাপ্রচারের মাধ্যমেও চলছে, যেমন তাদের প্ররোচনায় মুনাফিক সর্দার আবদুল্লাহ বিন উবাই মিথ্যারটনার কাজে লেগে গিয়েছিল, আবদুল্লাহ বিন সাবার কুট চক্রান্তের ফলে হযরত ওসমান (রা:)এর আমলে মদীনা ও আশেপাশের মুসলমানরা বিশৃংখলা সৃষ্টিতে জড়িয়ে পড়েছিল। এভাবে আরো বহু প্রকারের মিথ্যা ছড়িয়ে এবং ইসরাইলদের শ্রেষ্ঠ জাতি বানানোর ব্যর্থ ষড়যন্ত্রে এ ইহুদিচক্র বহু হাদীস জাল করে সত্য মিথ্যা মিলিয়ে ফেলেছিল এবং সীরতে রাসুল (স:) এর জীবনচরিত ও তাফসীরের মধ্যে বহু ভুল হাদীস ঢুকিয়ে দিয়ে ইসলামের বিরাট ক্ষতি সাধন করেছে এ সকল নানা প্রকার চক্রান্ত ও তৎপরতায় তখনই তারা লিপ্ত হয়ে পড়েছিল যখন আল কুরআনের মধ্যে পরিবর্তন পরিবর্ধনের ষড়যন্ত্রে তারা চরম ভাবে ব্যর্থ হয়।

লেখকঃ-আলহাজ্ব মাওঃ রহিমুল্লাহ আনুয়ারী (বিএ, এম, এম)
প্রধান ইমাম- ঝাউতলা কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ কক্সবাজার।
আলোচক ঃ বাংলাদেশ বেতার কক্সবাজার আঞ্চলিক অফিস
লেখক, গবেষক ও ইসলামি চিন্তাবিদ।

তথ্য সূত্র : পাক্ষিক উর্দু পত্রিকা তা’মীর ই হায়াত নদওয়াতুল ওলামা লক্ষেèৗ, ১০ মার্চ ১৯৯৭, পৃষ্ঠা ১১-১৩ পর্যন্ত ও ফী যিলালির কুরআন ২০ খন্ড, ২৮ পারা ১৯২ পৃষ্ঠা।


শেয়ার করুন