খালেদার বক্তব্যে বিএনপিতে হতাশা

খালেদা জিয়াটাইমস ডেস্ক ::

ঢাকা: বছরের শেষ দিন বিএনপি চেয়ারপারসনের সংবাদ সম্মেলন ঘিরে আগ্রহের কমতি ছিল না দলের নেতাকর্মীদের। সবার প্রত্যাশা ছিল এবার দলীয় প্রধান চূড়ান্ত আন্দোলনের রূপরেখা পেশ করবেন। সরকারকে চূড়ান্ত আলটিমেটাম দেবেন। কিন্তু তা না দিয়ে খালেদা জিয়া পেশ করলেন সাত প্রস্তাব। সরকার এগুলো আগেও পাত্তা দেয়নি এবারও পাত্তা দেবে না বলে বিশ্বাস দলীয় কর্মীদের। এজন্য দলীয় চেয়ারপারসনের বক্তব্যে তাদের মধ্যে হতাশা ও ক্ষোভ বিরাজ করছে।

বিএনপির নেতাকর্মীরা যখন জানতে পারলেন চেয়ারপারসন কোনো কর্মসূচি দেননি, এমনকি দাবি পূরণের জন্য কোনো সময়সীমাও ঘোষণা করেননি, তখন তাদের মাঝে হতাশা নেমে আসে। গুলশান কার্যালয়ের বাইরে অপেক্ষমাণ বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিস্ময় প্রকাশ করে বলেন, তা হলে কেন এই সংবাদ সম্মেলন? এর চেয়ে গণমাধ্যমে একটি বিবৃতি পাঠালেই হতো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নেতা বলেন, তারা আশা করেছিলেন, নেত্রী কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন। অন্তত একটি আলটিমেটাম দেয়া হবে। তা না হওয়ায় মাঠ নেতাকর্মীরা চাঙ্গা হওয়ার পরিবর্তে চরমভাবে হতাশ হয়ে পড়েছেন বলেই মনে করেন ওই নেতা।

হরতালের কর্মসূচিতে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারা মাঠে থাকেন বলে খালেদা জিয়া দাবি করেন। এ ব্যাপারেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন মাঠ নেতারা।

দল ও জোটের সিনিয়র একাধিক নেতা বলেছেন, নেত্রী যে ৭ দফা প্রস্তাব উপস্থাপন করেছেন তা আসলে নির্বাচনের কাছাকাছি সময়ের জন্য প্রযোজ্য। কিন্তু এ মুহূর্তে দেশে কোনো নির্বাচনী হাওয়া বিরাজ করছে না।

নাম প্রকাশে অনেচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির এক সদস্য বলেন, “ম্যাডামের বক্তব্যে আমরা নিজেরাও কনফিউজড (বিভ্রান্ত)। বক্তব্যের পর আমরা নিজেরা অনেকে এটি নিয়ে আলোচনা করেছি। উনি যেভাবে কথা বলছিলেন, এগুলো তো নির্বাচনের প্রাক্কালের কথা। নির্বাচন কী খুব কাছাকাছি সময়ে হচ্ছে? তবে আমি মনে করি না মার্চ, এপ্রিল বা ভেরি নিয়ার ফিউচার ইলেকশন হচ্ছে। জাতিসংঘের মতো বড় কোনো শক্তি কী নির্বাচনের ব্যবস্থা করছে? আন্তর্জাতিক বিশ্ব পরিস্থিতি সে কথা বলছে না।”

সংবাদ সম্মেলনে খালেদা জিয়ার উপস্থাপিত এ বক্তব্যের বিষয়ে স্থায়ী কমিটির অনেক সদস্যই আগে থেকে কিছু জানতেন না বলে জানা গেছে।

খালেদা জিয়ার এই বক্তব্যে বিস্ময় প্রকাশ করেছেন ২০ দলের নেতারাও। ২০ দলীয় জোটের শরিক দলের এক নেতা বলেন, জোট নেত্রীর কাছে এ মুহূর্তে কেউ এমন নরম সুরের বক্তব্য আশা করেনি। সরকার বিএনপির বিরুদ্ধে যে হার্ডলাইনে চলে গেছে তা থেকে নেতাদের রক্ষা করতেই হয়তো কঠোর কর্মসূচি থেকে বিরত থাকছেন বিএনপি প্রধান। এতে জনগণের কাছে ভুল বার্তা পৌঁছাবে বলেও মনে করেন তিনি।


শেয়ার করুন