খাদিজার ‘শুকরিয়া’

 

khadiza-png-edমৃত‌্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে আদালতের রায়ে বিচার পাওয়ার পর সবাইকে ধন‌্যবাদ জানিয়েছেন সিলেটের কলেজছাত্রী খাদিজা বেগম নার্গিস।

সিলেটের মহানগর দায়রা জজ আকবর হোসেন মৃধা বুধবার আলোচিত এ মামলার আসামি বদরুল আলমের যাবজ্জীবন সাজার রায় ঘোষণা করেন।

শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সহ-সম্পাদক বদরুল এক সময় খাদিজাদের বাড়িতে লজিং মাস্টার হিসেবে থাকতেন। তখন থেকেই খাদিজাকে তিনি উত্যক্ত করে আসছিলেন।

রায়ের পর বাড়ি ফিরে খাদিজা সাংবাদিকদের বলেন, “আমি সবাইকে শুকারিয়া জানাই, মিডিয়ার ভাইদের শুকরিয়া জানাই।”

এখন কেমন আছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আপাতত আমি ভালো আছি।”

গত বছর ৩ অক্টোবর সিলেটের এমসি কলেজ কেন্দ্রে স্নাতক পরীক্ষা দিয়ে বের হয়ে হামলার শিকার হন সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের স্নাতক (পাস কোর্স) দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্রী খাদিজা। বদরুলের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে তার মাথার খুলি ভেদে করে মস্তিষ্কও জখম হয়।

খাদিজাকে কোপানোর রোমহর্ষক ভিডিও সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে সারা দেশে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালে তিন দফা অস্ত্রোপচারের পর মৃত‌্যুর মুখ থেকে ফিরে আসেন খাদিজা। তবে শরীরের বাঁ পাশ স্বাভাবিক সাড়া না দেওয়ায় তাকে সাভারের সিআরপিতেও তিন মাস চিকিৎসা নিতে হয়।
এ মামলায় সাক্ষ‌্য দেওয়ার সময় খাদিজা আদালতে বলেছিলেন, “বদরুলের নৃশংস হামলায় আমি সারা জীবনের জন্য প্রতিবন্ধী হয়ে গেছি। আমি তার সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।”

দণ্ডবিধির ৩২৪, ৩২৬ ও ৩০৭ ধারা অনুযায়ী আসামি বদরুলের সর্বোচ্চ সাজার রায়ই আদালত দিয়েছে।

খাদিজার মা মনোয়ারা বেগম এই রায়ে সান্তোষ প্রকাশ করলেও তার ভাই শরনান হক শাহীন সাংবাদিকদের বলেন, “আমি সন্তুষ্ট না। কারণ ওর ফাঁসি হওয়া উচিত ছিল। তার যদি ফাঁসি হত, তাহলে আমি সন্তুষ্ট থাকতাম।”

এর আগে মামলার বাদী খাদিজার চাচা আব্দুল কুদ্দুস সিলেটের আদালতে তাৎক্ষণিক প্রতিবেদনে সাংবাদিকদের বলেন, “সবার সহযোগিতায় বদরুলের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছে। ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। আইনের ফাঁকে যাতে এ রায় বদল না হয় সে জন্য সবার কাছে দাবি করছি।”


শেয়ার করুন