খরুলিয়াতে বিধবাকে মারধরের ঘটনায় ৫জনকে আসামী করে মামলা দায়ের

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিঃ

খরুলিয়াতে বিধবা তছলিমাকে মারধরের ঘটনায় মামলা দায়ের। আহত তসলিমা (২৮) বাদী হয়ে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় উক্ত মামলা দায়ের করেন। মঙ্গলবার (গত ৬ই এপ্রিল) বিধবা তসলিমা কে মারধর ও ঘরচ্যুত করার ঘটনার প্রেক্ষিতে তসলিমা তার শুরবাড়ির ৫ আত্মীয় স্বজনের নাম উল্লেখ করে কক্সবাজার সদর মডেল থানায় এজাহার দায়ের করে। এর দুই দিন পর ৯ এপ্রিল (শুক্রবার) এজাহারটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে কর্তৃপক্ষ। নারী নির্যাতন মামলা নং ১৩/২১ইংরেজী।
বিধবা তসলিমা (২৮) ঝিলংজার খরুলিয়া এলাকার মৃত আমান উল্লাহর স্ত্রী। জানা যায়- গত বছরের মাঝামাঝি সময়ে করোনায় আক্রান্ত হয়ে তসলিমার স্বামী আমান উল্লাহ প্রবাসে থাকা অবস্থায় মারা যায়। তাদের সংসারে ৯বছর বয়সের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে। তসলিমা তার কন্যা সন্তান নিয়ে স্বামীর পৈত্রিক পুরাতন বসতবাড়িতেই বসবাস করত বলে জানা গেছে।

এজাহারে উল্লেখিত আসামীগন হচ্ছে সদরের খরুলিয়া উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ফয়সাল (৩২), কলেজ ছাত্র মো. সাঈদ (১৭), আয়েশা ছিদ্দিকা (৩৮), খরুলিয়া তালিমুল কোরআন মাদ্রাসার শিক্ষিকা শাহিদা ইয়াসমিন রুমি (২৯) এবং মুর্শিদা বেগম (৫০)।

এজাহারে উল্লেখিত অভিযোগের সূত্রমতে , তসলিমা বিয়ের পর থেকে শুশুরবাড়িতে তার স্বামীর পৈত্রিক ভিটা বাড়িতেই বসবাস করতো। তার স্বামী দীর্ঘবছর সৌদিআরব প্রবাসী ছিলেন তার উপর করোনায় সৌদিতে গতবছর মৃত্যুবরন করেন। অভিযুক্ত আসামীগন দীর্ঘদিন ধরে সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তসলিমা ও তার মেয়েকে ঘরচ্যুত করে ভিটে বাড়ি দখল করতে অপচেষ্টা চালাচ্ছিল। এমনকি বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে প্রায় সময় হুমকি ধমকি দিত বলে উল্লেখ রয়েছে। তারই ধারাবাহিকতায় গত ৬ই এপ্রিল অভিযুক্ত ৫জন আসামী উদ্দেশ্য প্রণোদিত অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে বাদী তসলিমা ও তার মেয়েকে পিটিয়ে জখম করে। শুধু মারধর করে ক্ষান্ত হননি উর্না পেঁচিয়ে বাদী তসলিমাকে ফাঁসি দিয়ে একেবারে শেষ করে দেওয়ার চেষ্টাও করে বলে উল্লেখ রয়েছে। এজাহারে আরো উল্লেখিত যে, তসলিমা ও তার মেয়েকে মারধর করে উক্ত অভিযুক্তরা বাদীর কাছে থাকা ৭০ হাজার টাকা মূল্যের স্বর্ণালংকার ও ১৫হাজার টাকা মূল্যের মোবাইল ফোন লুট করে নিয়ে যায়। মামলার স্বাক্ষীরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে “৯৯৯” কল দিলে কক্সবাজার সদর মডেল থানার এএসআই ফরিদের নেতৃত্বে একদল ফোর্স বাদী তসলিমা ও তার মেয়েকে আহত অবস্থাই উদ্ধার করে। বাদী তসলিমার ভাই আহতদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে চিকিৎসার উদ্দেশ্যে ভর্তি করান।

আহত মামলার বাদী তসলিমার দাবী, তার স্বামীর পৈত্রিক যায়গা জমি হতে তার একমাত্র কন্যা ও তাকে বঞ্চিত করে তারা ভোগ দখলের জন্য উঠেপড়ে লেগেছে। আমি আমার এতিম কন্যা ও আমার স্বামী হতে পাওয়া আমার হক কড়াই গন্ডাই বোঝে নিতে চাই। তারা দীর্ঘ বছর ধরে চাষের জমির লাগিয়ত বাবদ টাকা আমাকে বোঝিয়ে দেইনি। এমনকি আমি ও আমার এতিম মেয়ের মাথা গুজার ঠাই ছোট্র বাড়িটুকুও তারা দখল করে রেখেছে।

তিনি আরো জানান, বিবাদীরা ঘটনার মূল ঘুরিয়ে দিতে আমাকে জড়িয়ে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। আমাকে পরকীয়া প্রেমের মত জঘন্য সম্পর্কের সাথে জড়িয়ে মিথ্যাচার করে আমার মেয়ের ভবিষ্যৎ অন্ধকার করে দিচ্ছে আমি তার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। সেই সাথে প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে আমাকে প্রহার করা উক্ত অভিযুক্তদের সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করছি।

বাদী তসলিমার বড় ভাই রহিম উল্লাহ জানান, এই মুহুর্তে আমার বোন আহত তার উপর অসহায় ও এতিম। ঘটনার পর হতে মানবেতর জীবন যাপন করছে সে। অপর দিকে মামলার বিবাদীরা আর্থিক স্বচ্ছল হওয়াই আমাদের অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হচ্ছে। বিবাদীরা মামলা আপোষ করতে উঠে পড়ে লেগেছে। বিভিন্ন মাধ্যম দিয়ে ঘটনা ধামাচাপা দিয়ে মীমাংসার জন্য প্রস্তাব দিয়ে যাচ্ছে। আমি সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক দোষীদের শাস্তি দাবী করছি।

উক্ত মামলার অগ্রগতির ব্যাপারে জানতে চাইলে এসআই মোশাররফ হোসেন মুঠোফোনে জানান, মামলাটি তিনি প্রাথমিক তদন্ত সম্পন্ন করেছেন। তবে, এখনো মামলাটি তদন্তাধীন তাই এখন কিছু বলা যাচ্ছেনা। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শিঘ্রী আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। মামলার বাদী কে মামলা আপোষ করতে হুমকি-ধমকি দিচ্ছে এই ব্যাপারে তিনি অবগত কি না জানতে চাইলে তিনি বাদী পক্ষ হতে এখনো এমন কোন অভিযোগ পাননি বলে জানান।


শেয়ার করুন